১. আকীকার গোশত আকীকাকারী খেতে পারবে কি-না?
২. কুরবানীকৃত জানোয়ার থেকে যবেহকারীকে গোশত দেয়া জায়িয হবে কি?
৩. একই জানোয়ার দ্বারা ফরয ও নফল কুবরানী করা যাবে কি-না?
৪. এমনিভাবে নফল কুরবানীতে একই জানোয়ারে সাতজনের অধিক শরীক হতে পারবে কি-না?
৫. যার উপর কুরবানী ওয়াজিব, সে যদি নিজের মৃত পিতার নামে কুরবানী করে, তাহলে তার দ্বারা তার কুবরানী আদায় হবে কি-না?
৬. কুবরানীর নিয়্যতকৃত জানোয়ারের দুধ এবং বাচ্চা কি করতে হবে?
৭. কুরবানীর চামড়ার টাকা মাদ্রাসার জেনারেল ফাণ্ডে খরচ করা জায়িয আছে কি-না?
- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -
১. কুবরানীর ন্যায় আকীকার গোশত আকীকাকারী খেতে পারবে। আত্মীয়-স্বজনদের হাদিয়া দিতে পারবে এবং গরীবদেরকেও দান করতে পারবে। আকীকার জানোয়ারের চামড়া বিক্রয়ের টাকা গরীবদের দান করা জরুরী।
২. কুরবানীর গোশত বা চামড়ার মূল্য দ্বারা কসাই, যবেহকারী বা অন্য কাউকে পারিশ্রমিক হিসাবে দেয়া দুরস্ত নয়। তাদের মজুরী পৃথকভাবে দিতে হবে। পৃথকভাবে মজুরী দেয়ার পর কসাই বা যবেহকারীকে অন্যান্য লোকদের মত কিছু গোশত দেয়া জায়িয আছে।
৩. হ্যাঁ, একই জানোয়ার দ্বারা ওয়াজিব এবং নফল কুরবানী জায়িয আছে। যেমন কোন কোন শরীক ওয়াজিব কুরবানী অংশ নিল, আর কোন কোন শরীক নবী c বা তার পিতা-মাতার নামে নফল কুরবানীতে অংশ নিল। এমনিভাবে নফল কুরবানীর ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি একটি জানোয়ারের মধ্যে শরীক হতে পারবে। যেমন চার পাঁচ ভাই মিলে পিতা-মাতার ঈদের সাওয়াবের জন্য একটি বকরী কুরবানী দিল বা কুরবানীর গরুর সাত ভাগের শরীক হল।
৪. কুরবানীর তিন দিনের মধ্যে যদি কোন মুসলমান আকেল, বালেগ ও মুকীম ব্যক্তির নিকট প্রয়োজনীয় খাদ্য-দ্রব্য, পোষাক-পরিচ্ছেদ, ঘর-বাড়িও আসবাব-পত্রের অতিরিক্ত সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা কিংবা সমমূল্যের টাকা (যা বর্তমান হিসেবে আনুমনিক দশ হাজার টাকা) বা সমপরিমাণ অন্য কোন সম্পদ থাকে, তবে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
৫. যার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে, সে যদি নিজের পক্ষ থেকে কুরবানী না করে, অন্যের ওয়াজিব কুরবানী করে তাহলে ঐ কুরবানীর দ্বারা তার নিজের ওয়াজিব কুরবানী আদায় হবে না। কারণ, একটি কুরবানী দুইজনের পক্ষ থেকে যথেষ্ট নয়। আর যদি কুরবানী নিজের পক্ষ থেকে করে এবং মৃত ব্যক্তির জন্য শুধু ঈসালে সাওয়াব উদ্দেশ্য হয়, তাহলে উক্ত কুরবানীর দ্বারাই তার ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।
৬. এ সম্পর্কে শরীয়তের মাসআলা হল-কুরবানীর জানোয়ার দ্বারা নিজে উপকৃত হওয়া মাকরূহ। চাই সে ধনী হোক বা গরীব হোক। সুতরাং কুরবানীর জন্য জানোয়ার ক্রয় করার পর যদি বাচ্চা হয়, অথবা যাবেহ করার পর যদি পেটে জীবিত বাচ্চা পাওয়া যায়, তবে ঐ বাচ্চাটি কুরবানী করে দিতে হবে। ঐ বাচ্চার গোশত নিজে খাবে না, দান করে দিবে। তবে বাচ্চা কুরবানী না করে জীবিত দান করে দেয়াও জায়িয আছে। এমনিভাবে কুরবানীর নিয়তে খরিদকৃত জানোয়ারের দুধও নিজে পান করবে না বরং গরীবদের মধ্যে দান করে দিবে।
৭. না। কুরবানীর চামড়ার টাকা সহীহ তামলীক ছাড়া সরাসরি মাদ্রাসার জেনারেল ফাণ্ডে খরচ করা যাবে না।
- والله اعلم باالصواب -