এক মসজিদের ইমাম সাহেব সাহাবগণের সমালোচনা প্রসঙ্গে বললেন, সাহাবাগণের সমালোচনা করা ও তাদের দোষ-ত্রুটি চর্চা করা সম্পূর্ণ নাজায়িয ও হারাম। তিনি আরো বললেন- ইয়াযীদকে কাফির বলা যাবে না। বরং তাকে ফাসিক, জালিম ও গোমরাহ ইত্যাদি বলা যায়। মজলিসের মধ্য থেকে জনৈক ব্যক্তি বললেন-ইয়াযীদ অবশ্যই কাফির। আপনি যদি তাকে কাফের না বলেন, তাহলে আপনার পিছে নামায পড়া যাবে না। এ বিষয় নিয়ে কিছুটা বিতর্কের সৃষ্টি হয়। আসলে ইয়াযীদকে কাফির বলা যায় কি-না? বা সাহাবাদের সমালোচনা করা যাবে কি-না?
- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -
সাহাবগণের e প্রতি বিদ্বেষ ভাব রাখা, তাদের দোষ চর্চা করা বড় ধরনের গুনাহ এবং ইসলামী আকীদার পরিপন্থী। এর দ্বারা ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা সকল সাহাবগণের e বেহেশতী হওয়ার সুসংবাদ দিয়েছেন এবং নবী c তাদের সমালোচনা করতে কঠোর ভাষায় নিষেধ করেছেন। এমনকি নবী c বলেছেন, যাদের অন্তরে আমার প্রতি বিদ্বেষ আছে, তারাই কেবল আমার সাহাবাদের দোষচর্চা করতে পারে। বলা বাহুল্য, সাহাবগণ মা‘সুম নন। তাদের দু’ একজনের দ্বারা কোন প্রকার ত্রুটি হয়ে থাকলেও তারা তৎক্ষণাৎ তাওবা করে নিজেরদেরকে গুনাহ থেকে পাক সাফ করে নিয়েছেন। দ্বীনের জন্য তাঁরা এত বড় যবরদস্ত কুরবানী তারা পেশ করেছেন যা অন্য কারো দ্বারা সম্ভব হয় নাই। কিয়ামত পর্যন্ত সম্ভব হবেও না। এ কারণে তাদের ভুল-ত্রুটির সমালোচনা উম্মতের জন্য হারাম। তাদের ব্যাপারে ভাল আলোচনা করা ঈমানের অঙ্গ। সাহাবগণ মা‘সুম নন সত্য, তবে তারা মাগফূর তথা ক্ষমাপ্রাপ্ত ও হকের মাপকাঠি। আকীকাদাতু তাহাবী নামক কিতাবে বর্ণিত আছে, সাহাবাগণের প্রতি মুহাব্বত রাখা দ্বীন-ঈমান ও ইহসান। তাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখা কুফর, মুনাফিকী ও সীমালংঘন (আকীদাতুত তহাবী ১৪০)।
উল্লেখিত আলোচনা দ্বারা দিবালোকের ন্যায় প্রমাণিত হলো- সাহাবাগণের দোষচর্চা ও সমালোচনা করা নিষিদ্ধ। আর ইমাম সাহেব ইয়াযিদের ব্যাপারে যা বলেছেন, এটাই ঠিক। অর্থাৎ ইয়াযিদকে ফাসিক ও জালিম ইত্যাদি বলা যায়। কাফির বলা যায় না। কারণ, তার জীবন ও কর্ম পর্যালোচনা করলে একথাই প্রমাণিত হয় যে, ইয়াযিদ ফাসিক বা জালিম ছিল, কাফির ছিল না। তদুপরি আহলে হকগণ কেউ তাকে কাফির বলেননি। বিনা প্রমাণে কাউকে কাফির বলাও কুফরী কাজ।
- والله اعلم باالصواب -