অনেক সময় দেখা যায় ইংরেজী পড়ুয়া কিছু লোক ফাতাওয়ার কথা শুনলেই ভয় পায়। আসলে ফাতাওয়ার কী কোন প্রভাব আছে?
- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -
১৮০৩ খৃষ্টাব্দে শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী i -এর ঐতিহাসিক ফাতাওয়া ইতিহাসের পাতায় স্হান করে নিয়েছে। তিনিই ফাতাওয়া দিয়েছিলেন ইংরেজ কবলিত ভারত মহাদেশকে ‘দারুল হরব’ (শত্রু কবলিত দেশ) বলে। তিনি বলেছিলেন- ‘ভারত এখন দারুল হরব।’ এবার হয় জিহাদ করতে হবে ইংরেজদের বিরুদ্ধে, না হয় দেশ থেকে হিজরত করতে হবে। ইসলাম বিরোধী রাষ্ট্র থেকে তিনি এই ফাতাওয়া দেয়ার সাথে সাথে জনগণ ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। যার ফলশ্রুতিতে ইংরেজ জাতি এ দেশ থেকে অপদস্হ হয়ে বিতাড়িত হয়। শাহ আব্দুল আযীযের সেই ফাতাওয়া আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের শ্রেষ্ঠ মাইলফলক রূপে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। ইংরেজরাও এর স্বীকৃতি দিয়েছে।
মূলতঃ উলামায়ে উম্মতের ফাতাওয়ার উপর ভিত্তি করেই রেশমী রুমাল আন্দোলন, ফরায়েযী আন্দোলন, সৈয়দ আহমদ শহীদের জিহাদ, শামেলীর যুদ্ধ, তীতুমীরের যুদ্ধ ইত্যাদি ঐতিহাসিক ঘটনাবলী ঘটেছে। এক কথায় ফাতাওয়ার প্রভাব মুসলমানদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে নিয়ে সর্বত্রই। একে অস্বীকার করা মানে দিবালোকে সূর্যকে অস্বীকার করা। ফাতাওয়ার এই অসাধারণ প্রভাব দেখেই ইসলাম বিদ্বেষী মহল এর বিরুদ্ধে বিষাদগার করছে। দুঃখজনকভাবে একশ্রেণীর মুসলমানও না বুঝে অথবা ইসলামের শত্রুদের ফাঁদে পড়ে ফাতাওয়ার বিরুদ্ধে অবস্হান গ্রহণ করছে।
অথচ ফাতাওয়া ছাড়া একজন মুসলমান মুহূর্তের জন্য বাঁচতে পারে না। ফাতাওয়া কুরআন ও সুন্নাহ এর সারমর্ম। ফাতাওয়া আল্লাহ দিয়েছেন, নবীজী প্রদান করেছেন, দায়িত্ব বর্তিয়েছে উম্মতের মুফতীয়ানে কিরামের উপর। তাই ফাতাওয়াকে অস্বীকার করা মানে আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে দ্বীনের মূল ভিত্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা। এই বিদ্রোহের পর একজন মানুষ কখনো মুসলমান থাকতে পারে না।
- والله اعلم باالصواب -