ফতোয়াবাজ শব্দেরঃ অপপ্রচারের বিশ্লেষণ

ইসলামী জিন্দেগীসভ্যতা ও সংস্কৃতি২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

বর্তমানে বেশ কিছু পত্র-পত্রিকা ইসলামকে মিটানোর লক্ষ্যে সমাজের বরেণ্য উলামাগণকে হেয় করার উদ্দেশ্যে “ফতোয়াবাজ” শব্দটির খুব অপপ্রচার চালাচ্ছে। এদের সম্পর্কে আপনাদের প্রতিক্রিয়া কি ?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

মুসলমান সন্তানদের মন ও মস্তিষ্কের দিক দিয়ে ইসলাম বিরোধী করে গড়ে তোলার সুদূর প্রসারী লক্ষ্য নিয়ে বৃটিশ বেনিয়ারা এদেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা ‍চাপিয়ে দিয়ে গেছে তার প্রভাব, বর্তমান পাশ্চাত্য জগতের অপসংস্কৃতির প্রভাব, মানবতার মুক্তির মিথ্যা মরিচিকা মার্কসবাদ- লেলিনবাদের মিথ্যা আশাবাদের বুলির প্রভাব, প্রভৃতি কু-প্রভাবসমূহের কারণে আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে মুসলমানদের ঘরেই জন্ম নেয়া ইসলাম বিদ্বেষী সাম্রাজ্যবাদের দালাল-নাস্তিকদের ক্ষুদ্র একটি দল সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী নানা কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে। দেশ বরেণ্য উলামায়ে কিরাম যখন ইসলাম ও দেশের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্রের মুখোশ খুলে দেন, তখনই সেই কুখ্যাত চক্রটি এদেশে ইসলামের রক্ষাকারী আলিম সমাজকে মৌলবাদী, ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক ইত্যাদি বলে গালাগালি করে। আলেম সামাজের প্রতি ধর্মীয় ব্যাপারে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনসাধারণের যে অবিচল আস্থা রয়েছে, তাতে সামান্য সন্দেহ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়ে সেই চক্রান্তকারী দল আজ নতুন করে আলেম সমাজকে বিষোদগার করে সাধারণ মুসলমানদের আস্থা বিনষ্টের মানসে ফাতাওয়ার ন্যায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও ইসলামের একটি অতি পবিত্র বিষয়ের প্রতি জঘন্য কটাক্ষ করে তাকে জনসমক্ষে কলংকিত ও জঘন্য বিষয় হিসাবে উপস্থাপন করার উদ্দেশ্যে ফতোয়াবাজ শব্দের উৎপত্তি ঘটিয়েছে। তারা নিজেদের ব্যর্থতার অন্ধকার দেখে ইসলামের চরম ক্ষতিকারক ভন্ড পীর-ফকিরদের ভন্ডামী, গ্রাম্য ভুল শালিশ ও হিন্দু ঠাকুরদের ভুল সিদ্ধান্ত ইত্যাদি- যা ফাতাওয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়- এমন সব খারাপ জিনিসগুলোকে ফাতাওয়া নামে আখ্যায়িত করে ইসলামের বিধানগত ব্যাখ্যা ফাতাওয়াকে অবমাননা করার মিথ্যা আশ্রয় নিচ্ছে।

এরা এতকাল মস্কো-রাশিয়ার চাটুকার সেজে দেশ ও জনগণের স্বার্থবিরোধী বহু কার্য সম্পাদন করেছে। এদের চরিত্র ছিল মস্কোতে বৃষ্টি হলে ঢাকায় ছাতা ধরা। সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙ্গে খান খান হওয়ার পরে তারা রাশিয়ার দালালী বাদ দিয়ে এদেশের রাশিয়ার হুমকি নব্য ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী খৃষ্টান মদদ পুষ্ট এনজিওদের তরফদারী করে তাদের থেকে আর্থিক সুবিধা ভোগ করছে। তাই আলেম সমাজ যখন তাদের শুরু এনজিওদের ইসলামী ও স্বাধীনতা বিরোধী অপতৎপরতা সমূহের বিরূদ্ধে সোচ্চার হলেন, তখন তাদের মাথা ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। এনজিওরা উৎখাত হয়ে গেলে ওদের ভিক্ষা দেয়ার দুনিয়াতে আর কেউ থাকবে না, এ ভীতি তাদের। কিন্তু মজার ব্যাপার হল- তাদের কোন নীতি আছে বলে মনেই হয় না। পয়সাই যেন তাদের নীতি। তাই একদিকে তারা এনজিওদেরকে দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করছে। যেমন- উদয়পালের সভাপতিত্বে গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় বামপন্থী বক্তারা বলেছেন- “সাধারণ মানুষের সংগ্রাম যাতে গড়ে উঠতে না পারে, এ লক্ষে এনজিওরা গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছে। এদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা নস্যাত করা।” দৈনিক জনকন্ঠ, ২২ শে এপ্রিল, শেষ পৃঃ। অপরদিকে ঐসব বাম নেতারাই আবার এনজিওদের তরফদারী করে দেশ বরেণ্য উলামায়ে কিরামকে ফতোয়াবাজ বলে হেয় প্রতিপন্ন করে ইসলামকে মিটানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ধর্মীয় ব্যাপারে উলামায়ে কিরামের উপর এতই আস্থাশীল যে, সেসব বিজাতীয় চেলা-চামুন্ডাদের কথা দেশের ধর্মপ্রাণ জনসাধারণের গা ছুতেও পারে না।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১