মৃত ব্যক্তির জন্য কুরআন খতম, মীলাদ, চল্লিশা ইত্যাদির আয়োজন করা

ইসলামী জিন্দেগীবিবিধ২৩ ফেব, ২১

প্রশ্ন

কোন লোক ইন্তিকাল করলে চতুর্থ দিনে টাকার বিনিময়ে কুরআন খতম, মীলাদ পড়ানো এবং চল্লিশ দিন পরে (চেহলাম উপলক্ষ্যে) আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মহা ধুমধামের সাথে খাওয়া-দাওয়ার শরয়ী ভিত্তি কি? এতে কি মৃত ব্যক্তির উপকার হয়?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

কোন মানুষ ইন্তেকাল করার পর যে কোন দিনে তাঁর সাওয়াব রিসানীর উদ্দেশ্য কুরআন শরীফ পড়ে টাকা নেয়া বা বিনিময় গ্রহণ করা না-জায়িয। আর সেক্ষেত্রে যেহেতু কুরআন তিলাওয়াতকারীই উক্ত তিলাওয়াত করার দ্বারা কোন সাওয়াব পায় না, সুতরাং মুর্দা ব্যক্তির রূহে তিনি কি পৌঁছাবেন? মুর্দার রূহে সাওয়াব পৌঁছাতে হলে, প্রথমতঃ তিলাওয়াতকারীর সাওয়াব পেতে হবে। তারপর তিনি সেই সাওয়াবটা অন্যের রূহে বখশিয়ে দিবেন। কিন্তু তিনি বিনিময় গ্রহণ করার কারণে (যা শরী‘আতে হারাম) যখন নিজেই সাওয়াব থেকে মাহরূম হচ্ছেন, তখন অন্যের জন্য সাওয়াব রিসানীর তো প্রশ্নই উঠে না। কাজেই এ ধরনের তিলাওয়াত দ্বারা মৃত ব্যক্তির উপকার হবে বলে কোন আশা করা যায় না।

দিন-তারিখ জরুরী মনে না করে এবং বিনিময় গ্রহণ ছাড়া শুধুমাত্র ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে কেউ কুরআন শরীফ পড়ে কোন মুর্দারের জন্য সাওয়াব রিসানী করলে তাতে অবশ্য মুর্দারের উপকার হয়। তবে মায়্যিতের আত্মীয়-স্বজন নিজেরাই কুরআন শরীফ পড়ে বখশিয়ে দিবে-এটাই উত্তম। এমনকি দিন-তারিখ জরুরী মনে না করে যে কোন একদিন স্বেচ্ছায় বালিগ ওয়ারিশগণ তাদের স্ব-স্ব মাল থেকে গরীব-মিসকীন ও গরীব আত্মীয়-স্বজনদেরকে খাওয়ালে তাতেও মুর্দারের উপকার হয়। বরং মায়্যিতের মাগফিরাতের জন্য মাঝে মাঝে গরীবদের এ ধরনের খাওয়ানো বা দান করা ভাল। তবে দিন-তারিখ ঠিক করে যেমন-তিন দিনা, সাত দিনা, ত্রিশা ও চল্লিশা ইত্যাদি প্রথা পালন করে গরীব-মিসকীনদেরকে খাওয়ানো না-জায়িয ও বিদ‘আত। কারণ, শরী‘আত কর্তৃক যা নির্ধারিত নাই তা নির্ধারণ করার অধিকার কারো নাই। সুতরাং তা থেকে বিরত থাকা জরুরী। ঈসালে সাওয়াবের নামে ধুমধামের সহিত ধনীদেরকে যিয়াফত খাওয়ানো বাঞ্ছনীয় নয়।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ইমাদাদুল আহকাম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১১৪
  • ফাতাওয়া রহীমিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৩৩
  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৯
  • খাইরুল ফাতাওয়া, পৃষ্ঠা: ১০৮
  • ফাতাওয়া রশীদিয়া, পৃষ্ঠা: ১৩১

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৩ ফেব, ২১