ত্রিশা ও চল্লিশা খাবারে অংশগ্রহণ

ইসলামী জিন্দেগীমৃত্যু ও আনুষঙ্গিক২৩ ফেব, ২১

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় মৃত ব্যক্তির রূহে সাওয়াব পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে মৃত্যুর ৩০ দিন অথবা ৪০ দিন পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এতে দরিদ্র ও স্বচ্ছল উভয় শ্রেণীর লোকই অংশগ্রহণ করে থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে স্বচ্ছল ব্যক্তিরাও কি এ খাবারে অংশগ্রহণ করতে পারবে? আমরা শুনেছি যে, এ ধরনের খাবার খেলে অন্তর দুর্বল হয়ে যায়, এ ব্যাপারে শরয়ী বিধান কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

আমাদের যে কোন কাজই আল্লাহ তা‘আলার হুকুম ও রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর তরীকা অনুযায়ী আদায় করতে হবে। এর দ্বারাই সাওয়াবের আশা করা যায়। রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর তরীকা বহির্ভূত সকল কাজই পরিত্যাজ্য ও গোনাহের কাজ।

বর্তমানে মানুষ মৃত্যুর পরও গোনাহ থেকে নিস্তার পায় না। মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনরা যে ত্রিশা ও চল্লিশার খাবারের আয়োজন করে রুসম পালন করে শরী‘আতের দৃষ্টিতে এসব কাজ বিদ‘আত ও কুসংস্কার হিসেবে বিবেচিত। এর দ্বারা মৃত ব্যক্তির রূহে সামান্য পরিমাণও সাওয়াব পৌঁছে না। ফাতাওয়া শামীতে উল্লেখ রয়েছে-এর ধরনের প্রায় সকল কাজই অহংকার ও লৌকিকতার মনোভাব নিয়ে করা হয়। আর তখন এরূপ মনোভাব না থাকলেও পরবর্তীতে এ মনোভাব এসে যায়। মৃতের পরিবার ধনী হলে অধিকাংশ ধনীদেরকেই এতে দাওয়াত দেয়া হয়, আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি উদ্দেশ্যে হয় না।

এজন্য উত্তম হল, কোন দিন-তারিখের দিকে লক্ষ্য না রেখে গোপনীয়তা রক্ষা করে যে কোন দিন ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে গরীব ও ইয়াতীমদেরকে আহার করানো, লিল্লাহ বোর্ডিং-এ গরীব ছাত্রদের জন্য দান করায় (এতে সাওয়াব অনেক বেশী হয়) সদকায়ে জারিয়ার সাওয়াবও পাওয়া যায়।

তবে এ ধরনের খাবার মৃতের ওয়ারিসগণের ইজমালী সম্পত্তি থেকে খাওয়াবে না। বালিগ ওয়ারিসগণ নিজেদের মাল থেকে এ খাবারের ব্যবস্থা করবে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ইবনে মাজাহ্‌, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১১৬
  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৪০
  • ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৬৭
  • ইমদাদুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৫৪৭
  • খাইরুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৫৯৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৩ ফেব, ২১