কোন মসজিদের ইমাম সাহেবের নামাযের মধ্যে নিম্নের কাজগুলো পরিলক্ষিত হলে তার নামায ও তার পিছনে ইকতিদাকারী মুসল্লীদের নামায শুদ্ধ হবে কিনা? কাজগুলো হচ্ছে-
১। নামাযরত অবস্থায় সিজদার সময় দুই পা উঁচু হওয়া ও মাটি থেকে পৃথক হওয়া।
২। নামাযরত অবস্থায় দুইহাত দ্বারা জামা-কাপড় নাড়াচাড়া করা।
৩। নামাযের নিয়ত বাধার পর একাধিক বার হাই তোলা।
৪। রুকূর সময় দুই হাতের আঙ্গুলের মাথাগুলো পিছনের দিক করে রাখা।
৫। নামাযের শুরুতে যেখানে দাঁড়ায়, নামাযের মধ্যে সেখান থেকে ৪/৫ আংগুল আগানো বা পিছানো।
৬। সিজদা হতে উঠার সময় মাটিতে ভর দিয়ে উঠা।
আরীফ তেজগাহ এর দেখা প্রুফ
৫। নামাযের শুরুতে যেখানে দাঁড়ায়, নামাযের মধ্যে সেখান থেকে ৪/৫ আঙ্গুল আগানো বা পিছানো।
৬। সিজদা হতে উঠার সময় মাটিতে ভর দিয়ে উঠা।
৭। সিজদার সময় দুই হাতের আঙ্গুল ফাঁক রেখে ডান হাতের আঙ্গুলগুলো বাম দিকে আর বাম হাতের আঙ্গুল ডান দিকে আড়াআড়ি ভাবে রাখা।
৮। নামাযরত অবস্থায় একাধিক বার কাশি দেয়া।
৯। নামাযের সময় হওয়ার পরও নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য অপেক্ষা করা এবং পিছন থেকে ঐ ব্যক্তিকে সামনের কাতারে আনা।
- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -
১। নামাযে সিজদারত অবস্থায় দুই পায়ের মধ্য হতে যে কোন একটির সামান্য অংশও যদি একবার তাসবীহ্ বলার পরিমাণ সময় জমিনের সাথে লেগে থাকে, তাহলে নামায সহীহ্ হয়ে যাবে। অবশ্য সামান্য সময় পা জমিনে লাগিয়ে রেখে বাকী সময় ইচ্ছাপূর্বক পা উঁচু করে রাখা মাকরূহ্। তবে অনেক ফকীহের মতে সিজদাহ্ অবস্থায় তিন তাসবীহ্ পরিমাণ সময় উভয় পা উঠিয়ে রাখলে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে। সুতরাং এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা কর্তব্য। আর যদি সিজদার পূর্ণ সময়ের মধ্যে উভয় পা সম্পূর্ণ উঠিয়ে রাখে, তাহলে নামায নষ্ট হয়ে যাবে।[প্রমাণঃ ফাতাওয়া মাহমূদিয়া ২ঃ২০৫, # আযীযুল ফাতাওয়া ২২৬, # রদ্দুল মুহতার ১ঃ৩৬৯, # আহসানুল ফাতাওয়া ৩ঃ৩৯৮]
২। নামায অবস্থায় জামা-কাপড় ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে খেলা করা কিংবা কাপড় সামলানো অহেতুক-মাকরূহ্ কাজ।[প্রমাণঃ ফাতাওয়া আলমগীরী ১ঃ৫ঃ১০৯]
৩। নিয়ত বাঁধার পর একাধিক বার স্বেচ্ছায় হাই তোলাও মাকরূহ্। কেননা, এটা নামাযে অমনোযোগিতারই বহিঃপ্রকাশ। কাজেই হাই আসলে যথা সম্ভব দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করবে।
৪। রুকূর সময় দু’হাতের আঙ্গুল পিছনে রাখা সুন্নাতের খিলাপ। কারণ, রুকূতে হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক রেখে হাঁটু মজবুত করে ধরা সুন্নাত। আর হাতের আঙ্গুলগুলো পিছনের দিকে রাখলে এ সুন্নাত লঙ্ঘিত হয়।
৫। নামাযরত অবস্থায় যদি চলা ফেরার কারণে এক কাতার বা তার চেয়ে বেশী অগ্রসর হয়, তাহলে নামায নষ্ট হয়ে যাবে। বর্ণিত অবস্থায় কোন জরুরতে বা অনিচ্ছাকৃত এরূপ করলে, নামাযের কোন ক্ষতি হবে না। [প্রমাণঃ ফাতাওয়া মাহমূদিয়া ২ঃ১৭৭]
৬। সিজদা হতে উঠার সময় মাটিতে ভর দিয়ে উঠা মাকরূহ্। তবে দূর্বলতা বা অন্য কোন উযর বশতঃ করলে মাকরূহ্ হবে না।
৭। সিজদার সময় হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে কিবলার দিকে করে রাখা সুন্নাত। আঙ্গুলগুলো ফাঁক রাখা বা উভয় হাত কিবলামুখী না রেখে আড়াআড়ীভাবে রাখা সুন্নাতের খিলাপ।
৮। বিনা উযরে কাশি দিলে নামায নষ্ট হয়ে যাবে। তবে ইমাম সাহেব কিরা‘আত শুরু করার পূর্বে কিরা‘আত পড়তে অসুবিধা হওয়ায় গলা সাফ করার জন্য এক দু’বার কাশি দিতে পারেন।
৯। নামাযের যে সময় নির্ধারণ করা হয়, মিনিটে-সেকেন্ডে সে ভাবে দাঁড়ানো জরুরী নয়। অনেক সময় ইমামের খাতিরে বা মুসল্লীদের কোন বিশেষ জরুরতের কারণে দেরী করতে হয়। তাতে কোন দোষ নেই। আর কারণ ছাড়া যদি অন্য কারো জন্য দেরী করা হয়, তাহলে দেখতে হবে-উক্ত ব্যক্তি যদি বুযুর্গ হন এবং এই অপেক্ষা করার দ্বারা মুসল্লীদের যদি কষ্ট না হয়, বরং সবাই আগ্রহ করে তার জন্য অপেক্ষা করে এবং অপেক্ষা করার কারণে নামাযের মুস্তাহাব ওয়াক্ত পেরিয়ে না যায়, তাহলে বিলম্ব করাতে কোন দোষ নেই। এ ধরনের সংগত কারণ না থাকলে অপেক্ষা করা উচিত নয়।
- والله اعلم باالصواب -