কুরআন তিলাওয়াতের সময় প্রচলিত ভুলসমূহ

ইসলামী জিন্দেগীবিবিধ২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

কুরআন তিলাওয়াতের সময় সাধারণত: কোন ভুলগুলো বেশী সংগঠিত হয়?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

আমাদের দেশের তিলাওয়াতের মধ্যে সাধারণতঃ যেসব ভুল-ভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়, তা নিম্নে প্রদত্ত হল। তবে এ তালিকা দ্বারা কারো কিরা‘আত সহীহ্ হয়ে যাবে না। বরং সহীহ্ হওয়ার জন্য কোন অভিজ্ঞ ক্বারী সাহেবের নিকট মশক্ করা জরুরী।

কিরা’আতুল কুরআনের প্রচলিত ভুল।

(১) হরফের মধ্যে- (ক)ز “ য” এর মত নরম হবে, “ঝ” এর মত শক্ত নয়। (খ)ض অনেকটা “জ” এর মত হবে, “দ” এর মত নয়। (গ) و উচ্চারণের সময় ঠোঁট গোল হবে। এই হরফে মদ্দের সময় ও শুরু থেকে ঠোট গোল হবে।

(২) সিফাতের মধ্যে- (ক) ض– এর استطا لت - এর প্রতি এর খেয়াল করা হয় না। (খ) ز س ص - এর সিফাত আদায় হয় না। (গ) حروف مستعليه - এর মধ্যে আকার উচ্চারণ করে যা ভুল। অবশ্য যের অবস্থায় إستعللاء কম হওয়া জরূরী।

(৩) হরকতের মধ্যে- (ক) َ যবর –এ আকার উচ্চারণ হবে। যফলা (¨)-এর মত, টেড়া উচ্চারণ ভুল। (খ) ِ যেরকে দাবিয়ে উচ্চারণ করতে হয়, ে -এর উচ্চারণ ভুল (গ) ُ পেশ উভয় ঠোট মিলার কাছাকাছি হবে, ো উচ্চারণ ভুল।

(৪) (ক) হরফে লীন- মারূফ পড়তে হয় كيف(কাইফা) কে কায়ফা, لو (লাউ) কে লাও পড়া ভুল। (খ) নরম করে পড়তে হয়, ধাক্কা দেয়া ভুল। (গ) তাড়াতাড়ি পড়তে হয়, মদ করা ভুল।

(৫) মদ্দের ব্যাপারে- (ক) এক আলিফকে দুই হরকত পরিমাণ টান হবে, বেশী টানা ভুল। (খ) তিন বা চার আলিফ মদ্দের আওয়াজে তরঙ্গ সৃষ্টি করবে না আওয়াজ নাকে নিবে না।

(৬) গুন্নাহ ও ইখফা- উভয়টার পরিমাণ এক আলিফ। ইখফা অনেকটা বাংলা অনুস্বর (ং) -এর মত এবং গুন্নাহ "ন্ন” এর মত। অনেকে ব্যতিক্রম করে থাকে, যা ভুল।

(৭) ক্বলকলাহ- সামান্য ধাক্কা দিয়ে পড়তে হয়, বেশী ধাক্কা দেয়া ভুল। অবশ্য এসব অক্ষরে তাশদীদ থাকলে ওয়াকফের সময় জোরে ধাক্কা দেয়া হয়, যাতে করে অক্ষরটি দুবার উচ্চারিত হয়। যেমন- {ابي لهب و وتب }

(৮) ওয়াকফ এর অবস্থায়- (ক)ر পরিষ্কার শুনা যাবে, অধিকাংশেরই ر শুনা যায় না। (খ) তেমনিভাবে অনেকেরই ه সাফ হয় না বরং নরম হামাযার মত হয়। আবার কেউ কেউ বেশী ধাক্কা দেয়, তাও ভুল। (গ) ذ এর উপর ওয়াকফ করার সময় অনেকে ه এর মত আওয়াজ বের করে, যা ভুল। (ঘ) غ দাবায়ে উচ্চারণ করতে হয় কিন্তু বেশী দাবানো ভুল। (ঙ) তাশদীদ যুক্ত ر কে ওয়াকফের সময় অনেকে একটি উচ্চারণ করে, যা ভুল, বরং ر কে মাখরাজের মধ্যে দেরী করে উচ্চারণ করবে, যাতে উভয় ر উচ্চারিত হতে পারে। উল্লেখ্য ر পুর ও বারীকের মধ্যে জরুরী অনেক কায়িদা আছে। (হারদুই এর কায়িদা দ্রষ্টব্য) (চ) ى মুশাদ্দাদ উচ্চারণে অনেকে ”জ” এর মত আওয়াজ করে যা ভুল।

(৯) লাহনে জলী- অনেকে ء কে ى এবং ى কে ء উচ্চারন করে যা লাহনে জলী যেমন- من ثلثي الليل- شانئك هو الابتر

(১০) হরূফে মুকত্বাআত- এর মধ্যে অনেকে তাজবীদের ফা, গুন্নাহ, ক্বলকলাহ, ইত্যাদি কায়িদা জারী করে না, যেমন-كهيعص তেমনিভাবে অনেকে আস্তে কিরাআত পড়ার সময় তাজবীদের কায়িদা জারী করে না যা মারাত্মক ভুল।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১