হানাফী মাযহাব কি হানীফা নামের একটি মেয়ের দিকে নিসবত করা মাযহাব

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসসিরাত ও ইতিহাস১৬ মে, ২১

প্রশ্ন

আমাদের এখানকার গায়রে মুকাল্লিদ আহলে হাদীসরা বলে থাকে, ইমাম মালিককে মান্যকারীদের মালিকী, ইমাম শাফীকে ও আহমাদ বিন হাম্বলকে মান্যকারীদের শাফেয়ী এবং হাম্বলী বলা হয়। কিন্তু নুমান বিন সাবেতকে মান্যকারীদের আপনারা কেন হানাফী বলে থাকেন? এ হানাফী কে? যারা দিকে নিসবত করে নিজেদের হানাফী বলে থাকেন? আপনারা কি নিজেদের মহিলাকে নিজের ইমাম বানিয়ে নিয়েছেন? একথাগুলো কতটুকু সত্য?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

প্রশ্নটি করা হয়েছে উর্দুতে। যদিও ইংরেজী অক্ষর দিয়ে লেখা হয়েছে। যেহেতু উর্দুতে প্রশ্নটি করা হয়েছে। তাই প্রথমে উর্দুতে উত্তর প্রদান করা হয়েছে। তারপর বাংলাভাষাভাষীদের জন্য বাংলায় আলাদা উত্তর প্রদান করা হয়েছে।

تحقیقی جواب اس كو كہتا ہے جاہل مرکب، جو جانتا ہی نہیں کہ وہ نہیں جانتا، آپ کے علاقوں کا غیر مقلدین کا حالت یہی ہے، نعمان بن ثابت امام ابو حنیفہ کا اصلی نام ہے، اور ابو حنیفہ اس کا صفتی نام ہے، اس صفتی نام کی طرف نسبت کرکے حنفی کہا جاتا ہے، ایک ہوتا ہے آدمی کا نام، اور ایک ہوتا ہے کام، آگر کام سے آدمی کا شہرت پايا جا یۓ تو لوگ نام بھول جاتا ہے، کام والی صفتی نام یاد راکہتا ہے، جیسا کہ عبد اللہ بن کھافہ اصلی نام، اور ابو بکر صفتی نام ہے، جو ہر دینی کام میں پہلے قدم بڑہاتا ہے اسے ابو بکر کہتاہے، ابو بکر کے معنی بکر کی باپ نہیں ہے، ایساہی ابو حنیفہ کے معنی حنیفہ کے باپ نہیں ہے، بلکہ دین حنیف والے، نعمان بن ثابت جسنے دین حنیف کو جمع کیا اسلیۓ اس کو ابو حنیفہ یعنی دین حنیف والے کہا جاتا ہے، الزامی جواب ١ عبد اللہ بن صخر کو ابو ھریرۃ کہا جاتا ہے، کیا ابو ھریرۃ کا معنی بلی کا باپ ہے؟ ٢ حضرت علی کو رسول صلی اللہ علیہ وسلم نے ابو تراب کہا ہے، کیا ابو تراب کا معنی مٹی کا باپ ہے؟ اگر نہیں تو یہاں کیوں ابو حنیفہ کو حنیفہ کا باپ بنا دیا اس ظالم نے؟

বাংলাভাষাভাষীদের জন্য বাংলায় উত্তর দেয়া হল একেই বলে জাহিলে মুরাক্কাব। যে জানে না, আবার জানে না যে, সেটিও জানে না, তাকেই বলে জাহিলে মুরাক্কাব।

আপনাদের এলাকার গায়রে মুকাল্লিদদের হালাতও তাই। নুমান বিন সাবিত হল ইমাম আবু হানীফা i এর আসল নাম। আর তার গুণবাচক নাম হল আবু হানীফা। আর এ গুণবাচক নামের দিকে নিসবত করে ফিক্বহে হানাফী অনুপাতে দ্বীনে শরীয়তের উপর আমলকারীকে বলা হয় হানাফী।

ইলজামী জবাবঃ আপনি তাদের পাল্টা প্রশ্ন করুন,

১. আবু বকর সিদ্দীককে কেন আবু বকর (সর্বকাজে অগ্রগামী) বলা হয়? তার নামতো আবু বকর নয়। তার নাম হল আব্দুল্লাহ বিন আবু কুহাফা।

২. আব্দুল্লাহ বিন সাখার e কে কেন আবূ হুরায়রা (বিড়ালওয়ালা) বলা হয়? তার নামতো আবু হুরায়রা নয়।

৩. হযরত আলী e কেন নবীজী আবু তুরাব (মাটিওয়ালা) বলেছেন? তার নামতো আবু তুরাব ছিল না।

তাহকীকী জবাবঃ আবু বকর মানে কি বকরের পিতা? আবু হুরায়রা মানে কি বিড়ালের পিতা? আবু তুরাব মানে কি মাটির পিতা? যদি না হয়, তাহলে আবু হানীফা মানে হানীফার পিতা কেন বলা হচ্ছে?

এসব ক্ষেত্রে যেমন সবাই বলে বকর বলে এখানে উদ্দেশ্য হল অগ্রগামী। যেহেতু আব্দুল্লাহ বিন আবি কুহাফা e সর্বকাজে অগ্রগামী ছিলেন, তাই তার সিফাতী নাম প্রসিদ্ধ হয়ে গেছে আবু বকর নামে। তথা অগ্রগামী। এখানে আবুন মানে পিতা নয়। তেমনি আবু হুরায়রা মানে বিড়ালের পিতা নয়, বরং বিড়ালকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন, বিড়ালকে ভালবাসতেন, তাই তার সিফাতী নাম হয়ে গেছে বিড়ালওয়ালা। বিড়ালের পিতা নয়। তেমনি মাটিতে শুয়ে থাকার কারণে হযরত আলী e কে রাসূল c আবু তুরাব বলেছেন মানে মাটিওয়ালা। এর মানে মাটির পিতা নয়।

তেমনি নুমান বিন সাবিত i যেহেতু খালিস দ্বীনকে খাইরুল কুরুনে সর্বপ্রথম একত্রিত করেছেন তাই তাকে বলা হয় আবু হানীফা। তথা দ্বীনে হানীফকে একত্রকারী। তাহলে আবু হানীফা মানে হল দ্বীনে হানীফ তথা খালেস দ্বীন একত্রকারী। এ হানীফা শব্দটি হল নুমান বিন সাবিতের গুণবাচক নাম। তাই আবু হানীফা মানে দ্বীনে হানীফওয়ালা। হানীফা মেয়ের পিতা নয়।

আরেকটি জবাবঃ এক হল ব্যক্তির মিশন আরেক হল ব্যক্তির নাম। ব্যক্তি যখন স্বীয় মিশনে চূড়ান্ত চূড়ায় পৌঁছে যায়, তখন মানুষ তার নাম ভুলে যায়। কিন্তু গুণবাচক নামটি মনে রাখে। যেমন আবু বকর মানে হল সকল কাজে অগ্রগামী। আব্দুল্লাহ বিন আবু কুহাফা e এর নামতো ছিল আব্দুল্লাহ। আর তার মিশন ছিল দ্বীনের সকল কাজে অগ্রগামী হওয়া। তিনি তার মিশনে এতটাই চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছেছেন যে, তার আসল নাম অধিকাংশ মানুষই জানে না, মনে রেখেছে তার মিশনওয়ালা সিফাতি নাম। সেটি হল আবু বকর।

ঠিক তেমনি নুমান বিন সাবিত হল নাম। আর তার কাজ বা মিশন ছিল দ্বীনে হানীফকে একত্র করা। এ মিশনে তিনি এতটাই শিখরে পৌঁছেন যে, মানুষ তার আসল নাম ভুলে গেছে, মিশনওয়ালা নাম তথা আবু হানীফা নামে পরিচিত হয়ে গেছেন।

এ হাকীকত যিনি জানেন তিনি কিছুতেই এমন আহমকী প্রশ্ন করতে পারে না যে, হানাফী মাযহাব নুমান বিন সাবিতের মেয়ের দিকে নিসবত করা বা কোন মেয়ের দিকে নিসবত করা মাযহাব এটি। আল্লাহ তাআলা এসব মিথ্যুকদের মিথ্যাচার থেকে উম্মতকে হিফাযত করুন। আমীন।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৬ মে, ২১