হাদীসের বই দেখে নিজে নিজে হাদীসের হুকুম আরোপ করে দেয়া যাবে কি

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসশিক্ষা৯ মে, ২১

প্রশ্ন

বুলুগুল মারামে দেখলাম বিভিন্ন যইফ হাদীস আনা হয়েছে। অবশ্য কিছু হাদীসের শাহেদ হাদীস রয়েছে। কিন্তু যেগুলোর ব্যাপারে শাহেদ হাদীস নেই বরং টীকাতে আরো দলিল দেখিয়ে ” যইফ ” সাব্যস্ত করা হয়েছে সে সকল হাদীসের ক্ষেত্রে কি করবো? সেগুলোর উপরে আমল করব নাকি করবো না? আবার অনেক যইফ হাদীস নিয়ে মতভেদ হয়েছে কেউ বলছে সহীহ আবার কেউ যইফ। কোনটা গ্রহণ করব?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ডাক্তারী বই পড়ে ডাক্তারী করার অধিকার যেমন সবার নেই। তেমনি হাদীসের বই পড়ে হুকুম আরোপ করে দেয়ার অধিকারও সবার নেই। ডাক্তারী বই পড়ে বিধান আরোপ করার ক্ষমতা যেমন কেবলি বিজ্ঞ ডাক্তারের। কোন হাতুড়ি ডাক্তার বা সাধারণ ব্যক্তি ডাক্তারী বইয়ের আলোকে চিকিৎসা শুরু করে দিলে যেমন রুগীর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাবে। তেমনি বিধান সম্বলিত আয়াত ও হাদীস দেখেই অনভিজ্ঞ গায়রে আলেম ও গায়রে মুহাদ্দিসরা হুকুম আরোপ করতে থাকলে পুরো দ্বীনটাই মৃতপ্রায় হয়ে যাবে। তাই যার কাছে তাকেই করতে দেয়া উচিত। কোন হাদীস গ্রহণ করবেন? কোন হাদীস বর্জন করবেন? এটি হাদীস সম্পর্কে বিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ মুহাদ্দিসদের কাছ থেকে জেনে নিন। একজন মুহাদ্দিসের সহীহ জঈফ বলা দেখেই হুকুম করে দেয়া এক বই পড়েই ডাক্তারী করে ফেলার মত আহমকী হবে। তাই এক্ষেত্রে আমভাবে শুধু বুলুগুল মারাম নয়, যে কোন হাদীস গ্রন্থের ক্ষেত্রেই বিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা বিধান সম্বলিত হাদীসের হুকুম বলে দেয়া যাবে না। বরং উক্ত হাদীসটি বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তির শরণাপন্ন হতে হবে। সে হাদীসটির সনদ দেখতে হবে। মুহাদ্দিসীনে কেরামের কালাম দেখতে হবে। কারা কারা এ হাদীসকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন? কারা এটিকে অগ্রণযোগ্য বলেছেন? এবং কেন বলেছেন? সব কিছু পর্যালোনার পর সেই হাদীসটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। আমভাবে সহীহ জঈফ দেখে অন্তত বিধান সম্বলিত হাদীসকে আমল করা ও বর্জন করা সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তির এক ডাক্তারী বই দেখে চিকিৎসা শুরু করে দেয়ার মতই বিপদজনক ও ভয়ানক। তাই এক্ষেত্রে বিজ্ঞ আলেমদের শরণাপন্ন না হয়ে আমভাবে কোন হুকুম আরোপ করা যাবে না।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৯ মে, ২১