হাদীস ও ফিক্বহের মাঝে পার্থক্য

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসশিক্ষা৩ জুন, ২২

প্রশ্ন

হাদীস ও ফিক্বহের মাঝে পার্থক্য কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

হাদীস ও ফিক্বহের মাঝে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যথা-

১. হাদীস হল রাসূল c এর কথা, কাজ ও দেখে চুপ থাকা আমল আর ফিক্বহ হল এসবের মাঝে নিহিত রাসূল c এর মূল উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট করে দেয়ার নাম।

২. হাদীসের মাঝে নাসিখ তথা রহিতকারী এবং মানসুখ তথা রহিত বিষয় রয়েছে। আর ফিক্বহের কিতাবে শুধু নাসিখ বিষয়গুলো আনা হয়, মানসুখগুলো আনা হয় না।

৩. হাদীসের মাঝে কোন আমলের হুকুম বর্ণিত নেই, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবে প্রতিটি আমলের হুকুম বলা হয়েছে।

৪. হাদীসের মাঝে কোন বিধানের সংজ্ঞা বলা হয়নি, ফিক্বহের মাঝে সকল বিধানের সংজ্ঞা বিদ্যমান।

৫. হাদীসের মাঝে আমল জায়েজ ও আমল হারাম উভয় প্রকার হাদীস বিদ্যমান আর ফিক্বহের মাঝে শুধু জায়েজ আমলের বর্ণনা বিধৃত হয়েছে।

৬. হাদীসের মাঝে রাসূল c এর জন্য খাস এমন আমলের কথাও উদ্ধৃত হয়েছে, আর ফিক্বহের কিতাবে যা রাসূল c এর সাথে সাথে উম্মতীদের জন্য আবশ্যক সেসব আমলই কেবল উদ্ধৃত করা হয়েছে।

৭. কোন একটি হাদীস গ্রন্থেও পূর্ণাঙ্গ নামাযের বিবরণ পাওয়া যাবে না, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবে একই সাথে নামাযের পূর্ণ বিবরণ বিদ্যমান।

৮. হাদীসের মাঝে নব উদ্ভুত মাসআলার উসুল বিদ্যমান কিন্তু পরিস্কার সমাধান বিদ্যমান নেই, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবে নতুন উদ্ভুত মাসআলার পরিস্কার হুকুম ফুকাহায়ে কেরাম কুরআন ও সুন্নাহের উসুল অনুপাতে লিখে দিয়েছেন।

৯. হাদীসের মাঝে পরস্পর বিরোধী হাদীস বিদ্যমান, কিন্তু এক মাযহাবের ফিক্বহের কিতাবে মুফতাবিহী কওল বলে একটি মতই উদ্ধৃত করে দেয়া হয়।

১০. হাদীসের কিতাবের অনুবাদ দেখে সাধারণ মুসলমানদের শরয়ী মাসআলার সুনির্দিষ্ট সমাধান জানা কষ্টকর, কিন্তু ফিক্বহের কিতাবের অনুবাদ পড়ে শরয়ী মাসআলা জানা সহজতর।

এছাড়া আরো অনেক পার্থক্য রয়েছে। তাই সাধারণ মুসলমানদের হাদীস বরকতের জন্য পড়া উচিত। কিন্তু হাদীস দেখে দেখে মাসআলা বলা শুরু করা বা ফাতওয়া দেয়া শুরু করা হাস্যকর ও বিভ্রান্তিকর অবস্থা সৃষ্টি ছাড়া আর কিছু হবে না।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৩ জুন, ২২