হজ্জে কসর নামায

ইসলামী জিন্দেগীহজ্জ১৯ ফেব, ২১

প্রশ্ন

পবিত্র হজ্জের সময় মিনা ও আরাফাতের ময়দানে হাজীরা কসর নামায আদায় করেন, যে ভাবে হুজুর c করেছেন। অথচ তিনি ছিলেন মুসাফির কিন্তু বর্তমান মুকীম ইমামগণও সেখানে কসর করেন। আমরা যখন প্রশ্নি করি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মুসাফির, তাই কসর করেছেন। আপনারা তো মুকীম। তারা বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসাফির ছিলেন ঠিক। কিন্তু তখন মক্কার লোকেরা মুকীম ছিলেন। হুযূরের সঙ্গে উনারাও কসর করেছেন। তারা তো পূর্ণ চার রাকা‘আত পড়েন নাই। এতে বুঝা গেল এখানে হজ্জের সময় সকলে কসর পড়তে হয়। এর সঠিক সমাধান দলীলসহ জানতে চাই।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

নবী কারীম c হজ্জের সময় মুসাফির হিসেবে মিনা ও আরাফা ময়দানে নামায কসর পড়েছেন। তার পরে হযরত আবূ বকর e ও উমর e প্রত্যেকে নিজের শাসন আমলে উভয় স্থানে কসর পড়েছেন। তার পর হযরত উসমান e ও উভয় স্থানে হজ্জের সময় কসর পড়তে থাকেন। এর পর তিনি যখন মিনা শহরে বিবাহ করেন তার পর থেকে তিনি নিজের মুকীম মনে করে হজ্জের সময় মিনাতে চার রাকা‘আত পড়তে শুরু করেন এবং কসর পড়া বাদ দেন। হজ্জের সময় মুকীমদের জন্য কসর পড়ার হুকুম হলে হযরত উসমান e কেন কসর পড়লেন না। শুধু বিবাহ করে সে শহরে স্ত্রীর জন্য আবাস না করে উক্ত শহরে মুকীম হওয়ার ব্যাপারে অনেকের আপত্তি থাকলেও মুকীমগণ মিনা ও আরাফাতে পূর্ণ নামায পড়বেন। এ সম্পর্কে কোন সাহাবী থেকে মতভেদ শোনা যায় নি। এসব হাদীসের ভিত্তিতে চার ইমামের তিনজনই মিনা ও আরাফাতে শুধুমাত্র মুসাফিরদের জন্য কসর করার নির্দেশ দিয়েছেন। মুক্বীমদের জন্য পূর্ণ চার রাকা‘আত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এটাই নির্ভরযোগ্য মত।

অবশ্য এ ব্যাপারে ইমাম মালেক e ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি মুকীম ও মুসাফির সকলের জন্য হজ্জের সময় মিনা, মুযদালিফা ও আরাফাতে কসর পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রমাণ হিসেবে বললেন, হারেছা ইবনে ওয়াহহাব e থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে আমরা বিদায় হজ্জে মিনায় নবী কারীম c -এর সাথে দু’রাকা‘আত পড়েছি। কিন্তু অন্যান্য ইমামদের পক্ষ থেকে এর কয়েকটি উত্তর দেয়া হয়েছে।

(১) তিনি মক্কার অধিবাসী কি-না তার উল্লেখ নাই।

(২) “আমাদের” শব্দটি দ্বারা উদ্দেশ্য যারা হুজুর c –এর সাথে এসে ছিলেন তারাও হতে পারেন।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • তাহারী শরীফ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৭৯
  • আবূ দাঊদ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৭০
  • আল-ফিকহু আলাল মাযাহিবলি আরবা’আহ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৭৩

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৯ ফেব, ২১