সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফযীলত কি প্রমাণিত

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবিধ১৯ এপ্রিল, ২১

প্রশ্ন

১. কেউ যদি মাগরিবের পর সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াত (হুয়াল্লাহুল্লাজী লা-ইলাহা) পড়ে তবে ফজর পর্যন্ত ৭০ হাজার ফেরেশ্তা তার জন্য মাগফেরাতের দোয়া করে এবং ফজরের পর পড়লে মাগরীব পর্যন্ত তদ্রুপ করে। এটা কি রাসূলের c এর হাদীস না কি কোন বুর্জুগের বাণী?

২. কেউ যদি মাগরিবের পর ৭ বার ‘আল্লহুম্মা আজিরনী মিন্নানার’পড়ে এবং সেই রাতে মৃত্যু বরণ করে তবে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে না। যদি ফজরের পর অনুরূপ পড়ে এবং সেই দিন মৃত্যু বরণ করে তবে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে না। এটা কি হাদীস নাকি কারো বাণী?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

১. এটি কোন বুজুর্গের উক্তি নয়। এটি একটি হাদীসের মর্মার্থ। হাদীসটি হল- عن معقل ابن يسار عن النبي صلى اللهعليه وسلم قا: ” من قال حين يصبح ثلاث مرا: أعوذ بالله السميعالعليم من الشيطان الرجيم . وقرأ ثلاث آيات من آخر سورة الحشر وكلالله به سبعين ألف ملك يصلون عليه حتىمسى ، وإن مات في ذلك اليوم مات شهيدا ، ومن قالها حين يمسى كانبتلك المنزلة “ হযরত মাকাল বিন ইয়াসার e রাসূল c থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল c ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি সকাল বেলা তিন বার পড়বে “আউজুবিল্লাহিস সামীয়িল আলীমি মিনাশ শাইতানির রাজীম”।

তারপর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ( হুয়াল্লাহুল্লাজী লা-ইলাহা শেষ পর্যন্ত) তিলাওয়াত করবে। তাহলে আল্লাহ তাআলা উক্ত ব্যক্তির জন্য ৭০ হাজার ফেরেস্তা নিযুক্ত করেন। যারা উক্ত ব্যক্তির জন্য মাগফিরাতের দ্আু করতে থাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আর এ সময়ের মাঝে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করে। আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তাহলে তার একই মর্যাদা রয়েছে। (তথা মাগরিব থেকে সকাল পর্যন্তের জন্য ৭০ হাজার ফেরেস্তা গুনাহ মাফীর জন্য দুআ করে, আর সে সময়ে মারা গেলে শহীদের সওয়াব পাবে)। এ হাদীসটি হাসান পর্যায়ের হাদীস।

২. এটিও একটি হাদীসের অনুবাদ। এটি কোন বুজুর্গের উক্তি নয়। কোন বুজুর্গের উক্তি দিয়ে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। হাদীসটি হল- مُسْلِمِ بْنِ الْحَارِثِ التَّمِيمِىِّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- أَنَّهُ أَسَرَّ إِلَيْهِ فَقَالَ « إِذَا انْصَرَفْتَ مِنْ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ فَقُلِ اللَّهُمَّ أَجِرْنِى مِنَ النَّارِ. سَبْعَ مَرَّاتٍ فَإِنَّكَ إِذَا قُلْتَ ذَلِكَ ثُمَّ مِتَّ فِى لَيْلَتِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا وَإِذَا صَلَّيْتَ الصُّبْحَ فَقُلْ كَذَلِكَ فَإِنَّكَ إِنْ مِتَّ فِى يَوْمِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا » হযরত মুসলিম বিন হারেস তামিমী e রাসূল c থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল c তাঁর দিকে মনোনিবেশ করে বলেনঃ যখন তুমি মাগরিবের নামায শেষ করবে, তখন তুমি বলবে “আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান নার” (হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দাও!) ৭ বার। নিশ্চয় যদি তুমি তা বলে থাকো, তাহলে তুমি যদি সে রাতে ইন্তেকাল কর, তবে তুমি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে গেছে হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হবে। আর যদি তুমি তা সকালে পড়ে থাক, আর তুমি সেদিন মারা যাও, তাহলে তুমি জাহান্নাম থেকে মুক্ত হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়ে যাবে। এ হাদীসটি সহীহ।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং: ৩,০৯০
  • কানযুল উম্মাল, হাদীস নং: ৩,৫৯৭
  • আত তারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীস নং: ৩৭৯
  • সুনানে দারেমী, হাদীস নং: ৩,৪২৫
  • মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ২০,৩০৬
  • শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং: ২,৫০২
  • মুসনাদুশ সাহাবাহ, হাদীস নং: ২৯,৭৯৫
  • মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং: ২,১৫৭
  • সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং: ৫,০৮১
  • সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং: ৯,৯৩৯
  • আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং: ১,০৫১
  • সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং: ৩৬৭
  • কানযুল উম্মাল, হাদীস নং: ৩,৪৬৭
  • মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং: ১৮,০৫৪
  • মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং: ২,৩৯৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৯ এপ্রিল, ২১