সুদ-ঘুষের টাকা দিয়ে হজ্জ আদায়

ইসলামী জিন্দেগীহজ্জ১৯ ফেব, ২১

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি সুদ-ঘুষের টাকা গ্রহন করে সম্পদশালী হয়েছে। বর্তমানে সে নিয়মিত নামায, রোযা ও যাকাত আদায় করছে এবং অন্যান্য শরয়ী আহকামও মেনে চলছে। এখন সেই ব্যক্তি ঘুষের টাকা দ্বারা হজ্জ আদায় করতে পারবে কি-না? এবং এ হারাম মাল থেকে তার মুক্ত হওয়ার উপায় কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

কারো নিকট যদি শুধু হারাম মাল থাকে, তাহলে উক্ত ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হবে না। আর কারো নিকট যদি হারাম-হালাল মিশ্রিত মাল থাকে, তাহলে দেখতে হবে সে সমস্ত মাল হতে হারাম মালের অংশ পৃথক করলে অবশিষ্ট হালাল মাল যদি এ পরিমাণ হয় যে, তাতে হজ্জ ফরয হয় তাহলে উক্ত ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হবে। অন্যথায় তার উপর হজ্জ ফরয হবে না। আর হজ্জ ফরয হওয়ার পর তার হালাল মাল দ্বারাই হজ্জ করা জরুরি। কিন্তু কারও নিকট হজ্জ পরিমান হালাল মাল থাকায় তার উপর হজ্জ ফরয হওয়ার পর হজ্জের সময় যদি হালাল মাল হাতে না থাকে, তাহলে এমন ব্যক্তির হজ্জ আদায়ের উত্তম প্রন্থা এই যে, সে প্রথমতঃ কারো নিকট থেকে হজ্জ আদায় করা যায়, এ পরিমান টাকা ঋণ নিয়ে হজ্জ আদায় করবে। এরপর হালাল মাল দ্বারা উক্ত ঋণ পরিশোধ করতে চেষ্টা করবে। আর যদি তা সম্ভব না-ই হয়, তাহলে উক্ত হারাম মাল দ্বারাই ঋণ পরিশোধ করবে এবং এজন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট ইস্তিগফার করতে থাকবে। তা না করে যদি কেউ হারাম মাল দ্বারা হজ্জ আদায় করে ফেলে, তাহলে সে ব্যক্তি গোনাহগার হবে বটে, তবে হজ্জের দায়িত্ব থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে। কিন্তু এরুপ হজ্জ আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। অর্থাৎ এরুপ হজ্জে কোন সাওয়াব হবে না। হারাম মাল ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নাজায়িয। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব এর থেকে মুক্ত হতে হবে। আর এ থেকে মুক্তি লাভের উপায় হচ্ছে, উক্ত হারাম মালের মালিকের সন্ধান পাওয়া গেলে মালিকের নিকট উক্ত মাল পৌছে দেয়া ওয়াজিব। অন্যথায় সাওয়াবের আশা না করে গরীব মিসকীনদেন মাঝে সদকা করে দেয়া। উল্লেখ্য যে, উক্ত হারাম মালের পরিমাণ পুরোপুরি স্মরণ না থাকলে, নিজের প্রবল ধারণার ভিত্তিতে তা নির্ধারণ করতে হবে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৫৬
  • ইমদাদুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৪
  • ফাতাওয়া মাহমূদিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৯২
  • ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১১৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৯ ফেব, ২১