সহশিক্ষা চালু এমন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পদ্ধতি কেমন হবে

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসজায়েয-নাজায়েয৬ মে, ২৩

প্রশ্ন

বিদ্যালয়,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পডুয়া মেয়েরা কিভাবে চললে তাদের পর্দাও ঠিক থাকবে এবং পড়াশোনাও ঠিক মতো চালিয়ে যেতে পারবে??? শিক্ষক মহিলা/পুরুষ হলে তখন ছেলে/মেয়ের জন্য চোখের দৃষ্টির ব্যপারে কি করা যেতে পারে??

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

দুনিয়ার সত্তর আশি বছরের জীবনের তুলনায় আখেরাতের অনন্তকালের জীবনকে প্রধান্য দেবার মানসিকতাই কেবল এ প্রশ্নের সঠিক সমাধান দিতে পারে। দুনিয়ার লাভ উন্নতির উপর আখেরাতের লাভ ও উন্নতি যদি কারো মাঝে বদ্ধমূল হয়, তাহলে তিনি নিজেই এ সমস্যার সমাধান বের করে নিতে পারবেন। এই এক মানসিকতা এমন অসংখ্য প্রশ্নের জবাব নিজে নিজেই বের করে দিবে এসব সমস্যায় নিপতিত ব্যক্তিকে। আসলে যদি পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করার সম্ভব না হয়, আর এ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া উক্ত ব্যক্তির জন্য আবশ্যকীয় না হয়, তাহলে উক্ত কলেজ, বিদ্যালয়ে ছেড়ে দেয়াই হচ্ছে তাকওয়ার দাবি। যেহেতু এটি অনেক সময়ই অসম্ভব বিষয়। তাই ছেলেরা ছেলেদের কলেজে আর মেয়েরা গার্লস কলেজে পড়াই এর সঠিক সমাধান। এছাড়া মেয়েরা পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করে কলেজে আসা আবশ্যক। হাত ও পায়ের কোন অংশ যেন অনাবৃত না থাকে। সর্বদা চোখের দৃষ্টি নত রাখবে। হঠাৎ চোখের দৃষ্টি হারাম বস্তুর দিকে নিবদ্ধ হলে সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিবে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা অনিচ্ছাকৃত গোনাহকে মাফ করে দিবেন।

عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ؛ فَإِنَّمَا لَكَ الْأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ

“ হযরত বুরাইদা e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল c হযরত আলী e কে বলেন, হে আলী! (সহসা) একবার দেখার পর পুনরায় (কোন বেগানা নারীকে) দেখো না। কারণ, তোমার জন্য প্রথমবারে অনুমতি রয়েছে (যখন তা অনিচ্ছায় হয়ে যাবে), কিন্তু দ্বিতীয়বারের অনুমতি নেই। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৯৭৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৭৫১, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৪৯, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭৭৭

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَنْظُرُ إِلَى مَحَاسِنِ امْرَأَةٍ أَوَّلَ مَرَّةٍ، ثُمَّ يَغُضُّ بَصَرَهُ إِلَّا أَحْدَثَ اللهُ لَهُ عِبَادَةً يَجِدُ حَلَاوَتَهَا

“ হযরত আবু উমামা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন, যে কোন মুসলমান কোন নারীর সৌন্দর্যের প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যায়, অতঃপর সে নিজ চক্ষু নিচু করে নেয়, তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক ইবাদতের সুযোগ সৃষ্টি করেন, যাতে সে তার স্বাদ পায়। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২২৭৮

হযরত আবূ হুরায়রা e থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল c ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল (হারাম) দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, (গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক) কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, (গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক) কথোপকথন। হাতের জিনা হল, (গায়রে মাহরামকে) ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, (খারাপ উদ্দেশ্যে) চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় (যদি জিনা করে) এবং মিথ্যা পরিণত করে (যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৬ মে, ২৩