শুধু কসম বা ঈমান বললে কি কসম হবে?

মাসিক আল কাউসারকসম-মান্নত৩১ ডিসেম্বর, ২০

প্রশ্ন

আল্লাহর নাম ব্যতীত শুধু কসম শব্দ দ্বারা কসম করলে কি কসম সংঘটিত হয়ে যায়? যেমন, কসম, আমি যাব। অনেকে মনে করে শুধু কসম শব্দ দ্বারা কসম করলে কসম হয় না। যেমন নাকি আমিও অনেক সময় এভাবে কসম করার পর মনে মনে ভাবি যে, আমি তো আল্লাহ্ কসম বলিনি তাই কসম হয়নি।

অনেকসময় আমরা ঈমান শব্দ দ্বারা কসম খেয়ে থাকি। ঈমান শব্দ দ্বারা কসম করলে কি কসম সংঘটিত হয়ে যায়? হুজুরের কাছে আরেকটি বিষয় জানতে চাই। তা হচ্ছে, আমরা অনেক সময় কারো পিছনের কোনো বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ঈমান বা কসম শব্দ দ্বারা কসম নিয়ে থাকি। এধরনের কসমের সময় প্রতিপক্ষ যদি মিথ্যা কসম খায় তাহলে কি তাকে কাফফারা আদায় করতে হবে?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

১. আল্লাহর নাম উচ্চারণ না করে শুধু কসম শব্দ দ্বারা শপথ করলেও কসম সংঘটিত হয়ে যায়। তাই কসম করার পর তা ভঙ্গ করলে কাফফারা আদায় করতে হবে।

২. ঈমান শব্দ দ্বারা কসম উদ্দেশ্য করলেও কসম সংঘটিত হবে না। তাই এর জন্য কাফফারাও দেওয়া লাগবে না। তবে এ ধরনের বাক্য উচ্চারণ করা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।

৩. জেনেশুনে পিছনের কোনো বিষয়ে মিথ্যা কসম খাওয়া কবীরা গুনাহ। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ c ইরশাদ করেন- الكَبَائِر: الإِشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوقُ الوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النّفْسِ وَاليَمِينُ الغَمُوسُ • কবীরাগুনাহসমূহ হচ্ছে, আল্লাহর সাথে শরীক করা। পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে (অন্যায়ভাবে) হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম খাওয়া। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৬৭৫

উল্লেখ্য, কথায় কথায় কসম করা, বিনা প্রয়োজনে কসম করা এ সবকিছুই ঠিক নয়। আর কসম করার প্রয়োজন দেখা দিলে শুধু আল্লাহর নামেই কসম করবে। অন্য কারো বা কিছুর নামে কসম করা জায়েয নয়। হাদীসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। রাসূলুল্লাহ c ইরশাদ করেন- أَلاَ إِنّ اللهَ يَنْهَاكُمْ أَنْ تَحْلِفُوا بِآبَائِكُمْ، مَنْ كَانَ حَالِفًا فَلْيَحْلِفْ بِاللهِ أَوْ لِيَصْمُتْ • জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের নিজের পিতার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। যদি কসম করতেই হয় তবে যেন আল্লাহর নামেই কসম করে। নতুবা চুপ করে থাকে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৬৪৬

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১২,৪৫৫
  • বাদায়েউস সানায়ে, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৪
  • ফাতহুল কাদির, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৫৯
  • আল বাহরুর রায়েক , খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৮৭
  • ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৭
  • আদ্দুররুল মুখতার, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৭২০

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৩১ ডিসেম্বর, ২০