শবেবরাত উপলক্ষে আয়োজন

মাসিক আল কাউসারসভ্যতা ও সংস্কৃতি১৩ মার্চ, ২১

প্রশ্ন

পুরান ঢাকায় শবে বরাত উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন পদার্থ দ্বারা বিভিন্ন প্রকার প্রাণীর আকৃতিতে পাউরুটি, কেক, সন্দেশ ইত্যাদি বানাতে দেখা যায়। এসব প্রাণীর মধ্যে হারাম প্রাণী যেমন কুমির, ভোদর, গুই সাপ ইত্যাদি এবং হালাল প্রাণী যেমন বিভিন্ন জাতের মাছও থাকে। এগুলোকে শবে বরাতের বিশেষ খাবার বলে গণ্য করা হয় এবং খুব চড়া মূল্যে তা বিক্রি হয়। প্রশ্ন হল, প্রাণীর আকৃতিতে এসব খাবার তৈরি করা এগুলোর ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয আছে কি না?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

শবে বরাত উপলক্ষে খাবারের প্রশ্নোক্ত আয়োজন এবং প্রাণীর আকৃতিতে তা তৈরির প্রচলনটি সম্পূর্ণ নাজায়েয। শরীয়তের দৃষ্টিতে এতে দু’টি আপত্তিকর বিষয়ের সমন্বয় ঘটেছে। এক. কোনো প্রাণীর প্রতিকৃতি তৈরি করা হারাম ও কবীরা গুনাহ। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে এবং প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীর জন্য আখেরাতে কঠিন শাস্তির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ e বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীরা আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে কঠিন আযাবের মুখোমুখি হবে। -সহীহ বুখারী, ২/৮৮০

অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ c লানত করেছেন, সুদ ভক্ষণকারী ও সুদ প্রদানকারীর উপর, উল্কি অঙ্কন কারীনী নারী ও উল্কি গ্রহণকারীনী নারীর উপর এবং প্রতিকৃতি প্রস্তুতকারীর উপর। -সহীহ বুখারী, ২/৮৮১

অন্য হাদীসে আরো বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম c ইরশাদ করেন, ফেরেশতারা ওই ঘরে প্রবেশ করে না যাতে মূর্তি বা ছবি রয়েছে। -সহীহ মুসলিম, ২/২১১২

দুই. শবে বরাতকে উপলক্ষ করে এ ধরনের খাবারের আয়োজন করাকে দ্বীনী বা নেকের কাজ মনে করা হয়, যা সুস্পষ্ট বিদআত ও কুসংস্কার। অতএব শবে বরাত বা অন্য কোনো উপলক্ষে প্রাণীর আকৃতিতে কোনো ধরনের খাবার তৈরি করা হারাম। এথেকে বিরত থাকা সকল মুসলমানের জন্য জরুরি। আর এ ধরনের প্রাণীর আকৃতি সম্বলিত খাবারের ক্রয়-বিক্রয়ও জায়েয নেই। কেননা, এর দ্বারা ওই নাজায়েয কাজে প্রস্তুতকারীদের সহযোগিতা করা হয়।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • সহীহ বুখারী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৮৮০
  • শরহে মুসলিম নববী, খন্ড: ১৪, পৃষ্ঠা: ৮১
  • আলমাদখাল ইবনে হাজ্জ্ব, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৯১
  • কিতাবুল হাওয়াদিছ ওয়ালবিদা’, পৃষ্ঠা: ১১৮
  • ইকতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকীম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৬৩২

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৩ মার্চ, ২১