রোযা অবস্থায় ইনজেকশন

ইসলামী জিন্দেগীরোজা২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

গত জানুয়ারী ৯৭ মাসিক রাহমানী পয়গাম এবং ফেব্রুয়ারী ৯৬মাসিক মদীনা উভয় সংখ্যার প্রশ্নোত্তর পর্বে বলা হয়েছে যে, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়া যাবে। অথচ মাসিক আল বায়্যিনাত, ডিসেম্বর ৯৬ সংখ্যায় বলা হয়, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়া যাবে না।

রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোযা নষ্ট হয়ে যাবে এবং মাসিক রাহমানী পয়গাম, মাসিক মদীনা সহ অন্যান্য পত্রিকার সমালোচনা করা হয়েছে। আমরা সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

শরীয়তের দৃষ্টিতে রোযাদারের পেটে অথবা দেমাগের মধ্যে রোযা অবস্থায় স্বাভাবিক রাস্তা দিয়ে যেমন মুখ, নাক ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু প্রবেশ করলে রোযা ভেঙ্গে যায়ে। এটাই উলামায়ে কিরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। আর ইনজেকশনের মাধ্যমে ঔষধ শরীরে বা পেটের মধ্যে পৌছলেও স্বাভাবিক রাস্তা দিয়ে তা পৌছায় না সুতরাং এর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হবে না। অনেকে মনে করে, অনেক ইনজেশন দ্বারা তো ক্ষুধা দূর হয় এবং তার দ্বারা খানাপিনার কাজ হয়, এর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হওয়ার কথা, কিন্তু তাদরে এ ধারণা সহীহ নয়। কেননা, গোসল করলে বা কুলি করলে বা ইয়ারকণ্ডিশন রুমে বসলে অনেকাংশে তৃষ্ঞা নিবারণ হয়, কিন্তু তাতে কি রোযা ভঙ্গ হয়। মোদ্দাকথা, শুধু তৃষ্ণা আর হ্মুধা নিবারণ হলেই রোযা ভঙ্গ হবে না। বরং পেটে বা দেমাগের মধ্যে স্বাভাবিক রাস্তা দিয়ে কোন কিছু প্রবেশ করলে বা করালে তার দ্বারা রোযা ভেঙ্গে যাবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত প্রত্রিকার ব্যাপারে আমরা এতটুকু বলতে চাই যে, শারীরিক সুষ্ঠ ও সুন্দর চিকিৎসার জন্য বিজ্ঞ পারদর্শী চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হয় এবং এ ধরনের ডাক্তার সাধারণতঃ বড় বড় হাসপাতালে ও ক্লিনিকে বসে ফুটপাতে তাদের পাওয়া যায় না। আর ফুটপাতে যাদের পাওয়া যায়, তাদের দ্বারা ভালো চিকিৎসার আশা করা যায় না। এমনিভাবে সহীহ দ্বীন এবং সঠিক মাসআলা পেয়ে রুহের চিকিৎসার জন্য নিঃস্বার্থ হক্কানী উলামায়ে কিরামের স্মরণাপন্ন হওয়া জরুরী। এর কোন বিকপ্ল নেই। এ ধরনের বিজ্ঞ হক্কানী আলেমদেরকে বড় বড় দ্বীনী মাদরাসা ও দ্বীনী বড় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাওয়া যায়। যেখানে সেখানে তাদেরকে পাওয়া যায় না। শুধু নামধারী আলেম-উলামাদের নিকট সহীহ দ্বীন পাওয়া যায় না। এক শ্রেণীর লোক যারা হক্কানী উলামাদেরকে দেখেননি, তাদের সম্পর্কে ধারণাও রাখেন না। নিজেদের সাথে তুলনা করে হক্কানী হক্কানী উলামাদেরকে সেরুপ মনে করেন এবং দ্বীনে ইসলাম ও উলামাদের সম্পর্কে অযাচিত মন্তব্য করে থাকেন। অথচ এটা তাদেরই দুর্বলতা, এ কথা তাঁরা বুঝেন না।

সুতরাং আপনাকে বলছি, হাটহাজারী, পটিয়া, নানুপুর, রাহমানিয়া, যাত্রাবাড়ী প্রভৃতি বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মুখপত্র হিসেবে যেসব পত্রিকা বের হয়, সেগুলো থেকে সহীহ দ্বীন পেতে চেষ্টা করুন। আর যে সমস্ত পত্রিকা এ ধরনের সর্বজনমান্য প্রতিষ্ঠান ছাড়া এমন স্থান থেকে প্রকাশিত হয়, যা দেশের দ্বীনদার লোকদের জ্ঞানের বাইরে। যেখানে না আছে কোন হক্কানী বুযুর্গ এবং সেখানে যেসব মুফতগীন ফাতাওয়া লিখেন, তারা কোথেকে মুফতী হয়েছেন, কে তাদেরকে ফাতাওয়া দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত করেছেন, এর কোন কিছুর আগামাথা নেই। তারা কাদের পক্ষ হয়ে কাজ করছেন তাও পরিষ্কার নয়। তন্মধ্যে মাসিক আল বায়্যিনাত অন্যতম। এ ধরনের পত্রিকা থেকে দূরে থাকা উচিত।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • বাদায়েউস সানায়ে, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৯৩

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১