রাসূল c এর দাফন কাফন সম্পর্কিত প্রখ্যাত দাঈ মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের বক্তব্য নিয়ে কথিত আহলে হাদীসদের মিথ্যাচারের জবাব

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসসিরাত ও ইতিহাস১৩ জানু, ২২

প্রশ্ন

Assalamu alaikum Hajrot Ami tabligh ar mehenot kori and apnader madrashay o gesilam. akjon amake akta link disen oi link ar reply chaitesen..ami too Alem noi..apni jodi help koren valo hoto.. তাবলীগ জামা’আতের বিশিষ্ট মুরুব্বি পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের ভ্রান্ত বক্তব্যঃ আমরা কয়েকদিন আগে তাবলীগ জামা’আতের বিশিষ্ট মুরুব্বি পাকিস্তানের মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের উর্দু ভাষায় একটি অডিও লিঙ্কে রাসুল c -এর জানাযা সম্পর্কে একটি বক্তব্য শুনলাম। উনি সেখানে উল্লেখ করলেনঃ ‘’রাসুল c তাঁর মৃত্যুর কয়েকদিন পূর্বে সাহাবীদেরকে তাঁর মৃত্যু পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন’’; যার পুরোটাই ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তাবলীগ জামা’তের কিতাবগুলো অধ্যায়ন করলে আমরা দেখতে পাই সেখানে অসংখ্য জাল, যইফ, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও আজগুবি কিসসা-কাহিনী দ্বারা পরিপূর্ণ। এইসব মিথ্যা কাহিনী দিয়ে তারা লক্ষ লক্ষ সাধারন মানুষদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে। সচরাচর তাদের বয়ানে তারা তাদের কিতাব জাকারিয়া সাহারানপুরি সাহেবের লিখিত ‘ফাজায়েলে আমল’ছাড়াও বিভিন্ন মিথ্যা ও মনগড়া কাহিনী বর্ণনা করে থাকে। যার কুরআন ও সহীহ হাদিসের সাথে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই, এবং অধিকাংশই আকিদা বিধ্বংসী। এইরকম ভ্রান্ত বক্তব্য শুধু তাদের সাধারন তাবলিগী ভাইয়েরা দেন না, বরং তাদের গণ্য-মান্য ব্যক্তিরাও প্রদান করে থাকেন। এরকমই একটি বয়ান পেশ করেছেন তাদের কাছে চরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি পাকিস্তানের মাউলানা তারিক জামিল সাহেব। বক্তব্যটি উর্দু ভাষায়। আমরা পাঠক ও শ্রোতার সুবিধার্থে অনুবাদ করে দিলাম। এবং সাথে সাথে উনার বক্তব্যের অডিও লিঙ্ক দিলাম। ======== মাউলানা তারিক জামিল সাহেব বলেনঃ রাসুল c -এর মৃত্যুর এক সপ্তাহ পূর্বে সাহাবীরা রাসুল c -এর নিকট আসলেন। তাদেরকে দেখে রাসুল c -এর চোখে পানি চলে এলো। রাসুল c তাদেরকে বললেনঃ ‘’আমি তোমাদেরকে আল্লাহর সোপর্দ করছি, আল্লাহ তোমাদের সাথী’’ আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদ e জিজ্ঞেস করলেনঃ ‘’হে আল্লাহর রাসুল c ! আপনার যাওয়ার সময় খুব নিকটে চলে এসেছে; (আপনি মারা যাওয়ার পর) আপনাকে কে গোসল দিবে? রাসুল c বললেনঃ ‘’আমার আহলে বাইত’’ আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদঃ কে আপনাকে কাফন পরাবে? রাসুল c ঃ ‘’আমার আহলে বাইত’’ আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদঃ কে আপনাকে কবরে নামাবে? রাসুল c ঃ ‘’আমার আহলে বাইত’’ আবদুল্লাহ ইবন মাস’উদঃ আপনার জানাযা কে পড়াবে? তখন রাসুল c -এর চোখে পানি চলে এলো। তিনি বললেনঃ তোমাদের নাবীর জানাযা এমন হবে না, যেমন তোমাদের হয়। যখন আমার গোসল হয়ে যাবে তখন তোমরা সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যাবে। সবার আগে আমার আল্লাহ আমার জানাযা পড়বেন। তারপর জিবরীল, মিকাঈল ও ইস্রাফিল অতঃপর আরশের অন্যান্য ফেরেশতারা আসবে ও আমার জানাজা পড়বে। তারপরে তোমাদের মধ্যে পুরুষরা আগে আমার জন্য দু’আ করবে। তারপর নারীরা আসবে, তারপর শিশুরা আসবে। অতঃপর তোমাদের দাস-দাসী, চাকর-বাকর আসবে। অতঃপর তোমরা আমাকে আল্লাহর সোপর্দ করে দিবে। তারিক জামিল সাহেবের বক্তব্য এখানেই শেষ। উনার বক্তব্যের লিঙ্ক https://app.box.com/s/jjhxc2o6xh5hwg4bpzf6

============ আমরা হবাক হয়ে গেলাম উনার বক্তব্য শুনে! এত বড় ডাহা মিথ্যা কথা বলতে কি উনার একটুও বুক কাঁপল না! স্বয়ং আল্লাহ, রাসুল c জানাযা পড়ার জন্য আসবেন!!! আমরা রাসুল c -এর মৃত্যু বিষয়ক আমাদের সাধ্যমতো সমস্ত অথেনটিক হাদিস ও সিরাত গ্রন্থ তন্ন তন্ন করে খুজে দেখলাম, কিন্তু কোথাও খুজে পেলাম না। এই যদি হয় তাদের মান্যবর আলেমদের অবস্থা, সেখানে তাবলীগ জামা’আতের সাথে জড়িত সাধারন মানুষদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। মহান আল্লাহর কাছে এই সমস্ত মিথ্যা কথা থেকে পানাহ চাই। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই সমস্ত মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। Kindly aitar reply dile valo hoy and apnar web site a dileo valo hoy.. Allah apnakr kaj k kobul koruk. Wassalam

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

তাবলীগ জামাত পুরো পৃথিবীতে দ্বীন প্রচারকারী এক মুখলিস জামাত। রোদ বৃষ্টিতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে গিয়ে দ্বীনভোলা মানুষের মাথায় পিঠে হাত বুলিয়ে মসজিদমুখী করা জামাতের নাম তাবলীগ জামাত। নিজের পকেটের অর্থ ব্যয় করে মাসের পর মাস দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটে গিয়ে শিরক ও কুফরে লিপ্ত জনগোষ্ঠিকে তাওহীদমুখী করা, আখেরাতমুখী করার এক নিবেদিতপ্রাণ জামাতের নাম তাবলীগী জামাত। দ্বীনের তাবলীগের সূচনালগ্ন থেকেই এর শত্রুরা বিভিন্নভাবে এ দাওয়াতের কাজ স্তব্ধ করে দিতে ষড়যন্ত্র করেছে। কখনো রাসূল c কে পাগল বলেছে। কখনো নবীকে তাদের দ্বীনের দুশমন বলে পাথর নিক্ষেপ করেছে। কখনো গালি দিয়েছে। ঠিক তেমনি এখনো দাওয়াত ও তাবলীগের শত্রুরা দাওয়াতের কর্মী ভাইদের গালি দিচ্ছে। তাদের দ্বীনের শত্রু মনে করছে। এসবই দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ মকবুল হবার প্রমাণ। যে দ্বীনের দাওয়াতের কাজ রাসূল c শুরু করেছিলেন। সেটার যেভাবে প্রতিবাদ হয়েছে। প্রতিরোধ হয়েছে। সেই কাজ যেখানেই শুরু হবে, যেই জমানাই শুরু হবে, সেখানেই এভাবে প্রোপাগান্ডা হবে, মিথ্যাচার হবে এটাই স্বাভাবিক। দাওয়াত ও তাবলীগের ভাইদের এসব অপপ্রচারের দিকে খেয়াল না করে নিষ্ঠার সাথে দ্বীনী দাওয়াতে লেগে থাকা উচিত। আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব মিথ্যুকদের মিথ্যাচার থেকে মুসলিম উম্মাহকে নিরাপদ রাখুন। প্রশ্নটির জবাব উক্ত ঘটনাটি কোন বানোয়াট ঘটনা নয়। হাদীস ও তারীখের কিতাবে বর্ণিত ঘটনা। নিজের গবেষণার কমতি ও পড়াশোনার অগভীরতার কারণে কোন বিষয়কে না পেয়ে উক্ত বিষয়টিকে অস্বিকার করা, জাল ও বানোয়াট বলা মুর্খতা বৈ কিছু নয়। এক হাত লম্বা ব্যক্তি যদি দুই হাত লম্বা কলসীতে হাত দিয়ে বলে “কলসীর তলা নেই”তাহলে সেটি যেমন হাস্যকর ব্যাপার। তেমনি মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের মত বিজ্ঞ ও গবেষক আলেমের কোন বক্তব্য স্বীয় মুর্খতার কারণে না পেয়ে সেটিকে জাল ও বানোয়াট বলাটাও কম মুর্খতার পরিচয় নয়। জগত বিখ্যাত আলেমে দ্বীন মুবাল্লিগে ইসলাম মাওলানা তারিক জামিল সাহেব দা.বা. এর বয়ানে বলা ঘটনাটি একাধিক হাদীস ও তারীখের কিতাবে সনদসহ বর্ণিত হয়েছে। উক্ত ঘটনাটির আরবী পাঠ। أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، قَالَ: أَخْبَرَنَا حَمْزَةُ بْنُ الْعَبَّاسِ الْعَقَبِيُّ بِبَغْدَادَ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ رَوْحٍ الْمَدَائِنِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَلَّامُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْمَدَائِنِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا سَلَّامُ بْنُ سُلَيْمٍ الطَّوِيلُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الْحَسَنِ الْعُرَنِيِّ، عَنِ الْأَشْعَثِ بْنِ طَلِيقٍ، عَنْ مُرَّةَ بْنِ شراحيل، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ: لَمَّا ثَقُلَ رسول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اجْتَمَعْنَا فِي بَيْتِ أُمِّنَا عَائِشَةَ، قَالَ: فَنَظَرَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عليه وسلم فَدَمَعَتْ عَيْنَاهُ، ثُمَّ قَالَ لَنَا: قَدْ دَنَا الْفِرَاقُ. وَنَعَى إِلَيْنَا نَفْسَهُ، ثُمَّ قَالَ: مَرْحَبًا بِكُمْ، حَيَّاكُمُ اللهُ، هَدَاكُمُ اللهُ، نَصَرَكُمُ اللهُ، نَفَعَكُمُ اللهُ، وَفَّقَكُمُ اللهُ، سَدَّدَكُمُ اللهُ، وَقَاكُمُ اللهُ، أَعَانَكُمُ اللهُ، قَبِلَكُمُ اللهُ، أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللهِ، وَأُوصِي اللهَ بِكُمْ، وَأَسْتَخْلِفُهُ عَلَيْكُمْ، إِنِّي لَكُمْ مِنْهُ نَذِيرٌ مُبِينٌ، أَنْ لَا تَعْلُوا عَلَى اللهِ فِي عِبَادِهِ وَبِلَادِهِ فَإِنَّ اللهَ تَعَالَى: ذِكْرُهُ: قَالَ: ذَكَرَهُ لِي وَلَكُمْ تِلْكَ الدَّارُ الْآخِرَةُ نَجْعَلُها لِلَّذِينَ لَا يُرِيدُونَ عُلُوًّا فِي الْأَرْضِ وَلا فَساداً. وَالْعاقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ ( ۞ ) ، وَقَالَ: أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوىً لِلْمُتَكَبِّرِينَ ( ۞ ) ، قُلْنَا: فَمَتَى أَجَلُكَ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: «قَدْ دنا الأجل وَالْمُنْقَلَبُ إِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَالسِّدْرَةِ الْمُنْتَهَى وَالْكَأْسِ الْأَوْفَى، وَالْفَرْشِ الْأَعْلَى، قُلْنَا فَمَنْ يُغَسِّلُكَ يَا رَسُولَ اللهِ، قَالَ: رِجَالُ أَهْلِ بَيْتِي الْأَدْنَى فَالْأَدْنَى مَعَ مَلَائِكَةٍ كَثِيرَةٍ يَرَوْنَكُمْ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ، قُلْنَا: فَفِيمَ نُكَفِّنُكَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: فِي ثِيَابِي هَذِهِ إِنْ شِئْتُمْ أَوْ فِي يَمِنَةٍ، أَوْ فِي بَيَاضِ مِصْرَ» ، قُلْنَا مَنْ يُصَلِّي عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ فَبَكَى وَبَكَيْنَا، فَقَالَ: «مَهْلًا غَفَرَ اللهُ لَكُمْ، وَجَزَاكُمْ عَنْ نَبِيِّكُمْ خَيْرًا، إِذَا غَسَّلْتُمُونِي، وَحَنَّطْتُمُونِي، وَكَفَّنْتُمُونِي فَضَعُونِي عَلَى شَفِيرِ قَبْرِي، ثُمَّ اخْرُجُوا عَنِّي سَاعَةً، فَإِنَّ أَوَّلَ مَنْ يُصَلِّي عَلَيَّ، خَلِيلَايَ، وَجَلِيسَايَ جِبْرِيلُ وَمِيكَائِيلُ، وَإِسْرَافِيلُ ثُمَّ مَلَكُ الْمَوْتِ، مَعَ جُنُودٍ مِنَ الْمَلَائِكَةِ، وَلْيَبْدَأْ بِالصَّلَاةِ عَلَيَّ رِجَالٌ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي، ثُمَّ نِسَاؤُهُمْ، ثُمَّ ادْخُلُوهَا أَفْوَاجًا وَفُرَادَى، وَلَا تُؤْذُونِي بِبَاكِيَةٍ، وَلَا بِرَنَّةٍ، وَلَا بِصَيْحَةٍ وَمَنْ كَانَ غَائِبًا مِنْ أَصْحَابِي فَأَبْلِغُوهُ عَنِّي السَّلَامَ وَأُشْهِدُكُمْ بِأَنِّي قَدْ سَلَّمْتُ عَلَى مَنْ دَخَلَ فِي الْإِسْلَامِ، وَمَنْ تَابَعَنِي على ديني هذا مند الْيَوْمِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ» ، قُلْنَا: فَمَنْ يُدْخِلُكَ قَبْرَكَ يَا رَسُولَ اللهِ؟، قَالَ: «رِجَالُ أَهْلِ بَيْتِي الْأَدْنَى فَالْأَدْنَى، مَعَ مَلَائِكَةٍ كَثِيرَةٍ، يَرَوْنَكُمْ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ» যে সকল কিতাবে বর্ণিত হয়েছে উক্ত ঘটনা

1. দালায়েলুন নবুয়্যাহ লিলবায়হাকী, বাবু জিকরিল হাদীস আল্লাজি রুয়িয়া আন ইবনে মাসঈদ e

2. আলখাসায়েসুল কুবরা, রাসূল c এর গোসল অধ্যায়।

3. তাবকাতে ইবনে সাদ, রাসূল c এর মৃত্যুকালীন অসিয়ত অধ্যায়।

4. আলমুনতাজিম ফী তারীখিল মুলুকি ওয়াল উমামি, রাসূল c এর অসুস্থ্যকালীন সময়ে একত্র হওয়া সাহাবীদের ওসিয়ত অধ্যায়।

5. শরহুজ যুরকানী, ১২তম খন্ড, ১০ম অধ্যায়, প্রথম পরিচ্ছেদ।

6. তারীখুল খামীস, রাসূল c এর ওফাত অধ্যায়।

7. আলমাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যাহ, তৃতীয় খন্ড, ১০ মাকসাদ, ১ম পরিচ্ছেদ।

8. ইতহাফুল মাহরাহ লিইবনে হাজার, হাদীস নং-১৩১৮৬।

9. আলমুস্তাদরাক আলাস সাহীহাইন, হাদীস নং-৪৩৯৯। ১০-আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া-৫/২২২। উক্ত হাদীসটির ব্যাপারে মুহাদ্দিসীনদের মন্তব্য وقال الحاكم: عبد الملك بن عبد الرحمن هذا لأعرفه بِعَدَالَةٍ وَلَا جَرْحٍ وَالْبَاقُونَ كُلُّهُمْ ثِقَاتٌ. قُلْتُ: لم ينفرد به عبدلملك بن عبد الرحمن بل تابعه عليه غيره كما رواه البزار بسند رواته ثقات.. ১ ইমাম হাকেম i বলেন, উক্ত বর্ণনার শুধু রাবী আব্দুল মালিক বিন আব্দুর রহমান এর ব্যাপারে আদালত ও জারাহ কোন বিষয়ই পাওয়া যায় না। আর বাকি সকল রাবীই সিকা তথা নির্ভরযোগ্য। ২ আল্লামা বুসিরী i বলেন, আব্দুল মালিক বিন আব্দুর রহমান এ বর্ণনায় মুনফারিদ নয়। বরং তার “তাবে”আরো অনেকে আছেন। যেমন মুসনাদুল বাজ্জার সংকলক সিকা রাবীদের সনদে তা বর্ণনা করেছেন। -ইতহাফুল খাইরাতিল মাহরাহ-৩/৬৫১২ ৩ আল্লামা হায়ছামী i বলেন, এর রাবীগণ সবাই সহীহ, শুধু মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল বিন সামুরা ছাড়া। তিনি সিকা। -মাযমাউজ যাওয়ায়েদ-৯/২৭ উক্ত হাদীসটির সত্যায়ন পাওয়া যায় রাসূল c এর মৃত্যু পরবর্তী অবস্থার বর্ণনা সম্পর্কিত হাদীস দ্বারা। যেমন- فقال لي: انطلق فانطلقت معه فجاء والناس قد دخلوا على رسول الله (صلى الله عليه وسلم) فقال أيها الناس أفرجوا لي فأفرجوا له فجاء حتى أكبّ ومسّه فقال إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ «9» ، ثم قالوا: يا صاحب رسول الله صلى الله عليه وسلمأقبض رسول الله (صلى الله عليه وسلم) ، قال نعم، فعلموا أن قد صدق قالوا يا صاحب رسول الله: أيصلّي على رسول الله؟ قال: نعم، قالوا: وكيف؟ قال: يدخل قوم فيكبرون ويصلون ويدعون ثم يخرجون ثم يدخل قوم فيكبرون ويصلون ويدعون ثم يخرجون حتى يدخل الناس، قالوا: يا صاحب رسول الله أيدفن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال نعم، قالوا: أين؟ قال في المكان الذي قبض الله فيه روحه فإنّ الله لم يقبض روحه إلّا في مكان طيب فعلموا أن قد صدق، ثم أمرهم أن يغسّله بنو أبيه আবু বকর সিদ্দিক e আমাকে বললেন, তুমি আমার সাথে আস। তিনি যখন আসলেন তখন লোকেরা রাসূল c এর চারপাশে ভীড় করেছিল। তিনি লোকদেরকে বললেন, তোমরা আমাকে একটু রাস্তা দাও। লোকেরা রাস্তা দিল। তিনি ভেতরে গেলেন, নত হয়ে দেখলেন এবং রাসূল c এর কপালে চুমু খেলেন। তারপর আয়াত পড়লেন, إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَতথা “নিশ্চয় তুমিও ইন্তেকাল করবে, এবং তারাও ইন্তেকাল করবে”। লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসূলের সাথী! রাসূল c কি ইন্তেকাল করেছেন? তিনি জবাবে বললেন, হ্যাঁ। তখন লোকদের বিশ্বাস হল। তারপর সাহাবায়ে কেরাম আবু বকর e কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূলের বন্ধু! রাসূল c এর জানাযার নামায কি পড়া হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞাসা করা হল, কিভাবে? তিনি বললেন, এভাবে যে, এক এক জামাত প্রবেশ করবে এবং জানাযা পড়ে বেরিয়ে আসবে। তারপর অন্য জামাত প্রবেশ করবে। (এভাবে পৃথক পৃথকভাবে প্রত্যেকেই রাসূল c এর উপর আলাদা আলাদাভাবে জানাযা নামায পড়ে নিবে)। সাহাবাগাণ আবু বকর e কে জিজ্ঞাসা করলেন, তাঁকে কি দাফন করা হবে? তিনি বললেন, অবশ্যই। জিজ্ঞাসা করা হল, কোথায়? তিনি বললেন, যেখানে আল্লাহ তাআলা তাঁর রূহ কবজ করেছেন সেখানেই। কেননা, আল্লাহ পাক নিশ্চয় তাঁকে এমন স্থানে মৃত্যু দান করেছেন যে স্থানটি পবিত্র। লোকদের বিশ্বাস হয়ে গেল যে, তিনি যা কিছু বলছেন তা সবই ঠিক। তারপর রাসূল c এর পরিবার ও বংশীয় লোকদেরকে আবু বকর e গোসল করানোর নির্দেশ দিলেন। -শামায়েলে তিরমিজী, হাদীস নং-৩৭৯, ৩৯৭, শরফুল মুস্তাফা, বর্ণনা নং-৮৫০, আলআনওয়ার ফী শামায়িলিন নাবিয়্যিল মুখতার, বর্ণনা নং-১২০৯ একই বর্ণনা প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস নুরুদ্দীন হায়সামী ইবনে মাজাহ ও তাবারানীর বরাতে বর্ণনা করেছেন। -মাযমাউজ যাওয়ায়েদ- কিতাবুল খিলাফাহ-৫/১৮২-১৮৩ আরো এসেছে- ১-সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী- ৩/৩৯৫ بَابُ مَنْ يَكُونُ أَوْلَى بِغُسْلِ الْمَيِّتِহাদীস নং-৬৬৫৬। ২-সুনানে বায়হাকী কুবরা- بَابُ الْجَمَاعَةِ يُصَلُّونَ عَلَى الْجِنَازَةِ أَفْذَاذًا৪/৩০, হাদীস নং-৬৯০৬।

3. সুনানে বায়হাকী কুবরা- بَابُ لَا يَصْلُحُ إِمَامَانِ فِي عَصْرٍ وَاحِدٍ ৮/১৪৫, হাদীস নং-১৬৫৪৯। ثُمَّ دَعِيَ النَّاسُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلُّونَ عَلَيْهِ إِرْسَالًا: الرِّجَالُ، حَتَّى إِذَا فُرِغَ مِنْهُمْ، أُدْخِلَ النِّسَاءُ، حَتَّى إِذَا فُرِغَ مِنَ النِّسَاءِ أُدْخِلَ الصِّبْيَانُ، وَلَمْ يَؤُمَّ النَّاسَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحَدٌ. فَدُفِنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ أَوْسَطِ اللَّيْلِ لَيْلَةَ الْأَرْبِعَاءِ তারপর লোকদেরকে রাসূল c এর উপর দলে দলে জানাযার নামায পড়ার জন্য বলা হল। প্রথমে পুরুষরা নামায পড়ল। যখন পুরুষরা ফারিগ হল, তখন মহিলারা প্রবেশ করল। যখন মহিলারা ফারিগ হল, তখন শিশুরা প্রবেশ করল। আলাদাভাবে রাসূল c এর কেউ ইমামতী করেনি। তারপর রাসূল c কে বুধবার মধ্যরাতে দাফন করা হয়। -মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-২২ উপরোক্ত হাদীস ও তারীখের কিতাবের উদ্ধৃতি দ্বারা আশা করি পরিস্কার হয়ে গেছে যে, মুবাল্লিগে ইসলাম মাওলানা তারিক জামিল সাহেবের বলা হাদীসটি কোন বানোয়াট ও জাল কিচ্ছা কাহিনী নয়। বরং হাদীস ও তারীখের কিতাবে বর্ণিত গ্রহণযোগ্য বর্ণনা। নিজেদের অজ্ঞতার কারণে সহীহ বক্তব্যকে জাল ও বানোয়াট বলার ধৃষ্টতা থেকে সকলেরই বিরত থাকা উচিত। না জানলে বিজ্ঞ উলামাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে নেয়া উচিত। নিজে নিজে ইলমের অথৈ সাগরের কিনারায় ঘুরে এসে “কোথাও নেই”বলে দেয়া কোন বুদ্ধিমান ও ইলমধারী ব্যক্তির কাজ নয়। আল্লাহ তাআলা এসব অজ্ঞ গবেষকদের বিভ্রান্তিকর গবেষণা থেকে সরলপ্রাণ মুসলিমদের হিফাযত করুন। আমীন। লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৩ জানু, ২২