রাতে কুরবানী দেওয়ার বিধান

মাসিক আল কাউসারকুরবানী ও আকিকা৩১ ডিসেম্বর, ২০

প্রশ্ন

কুরবানীর সময় কসাই খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই আমরা কয়েকজন মিলে নাটোর থেকে ভালো একদল জাত কসাইয়ের ব্যবস্থা করে থাকি। গরু অনেক হওয়ায় প্রায় দেখা যায়, কারো কারো গরু রাতে জবাই দিতে হচ্ছে। হুযূরের কাছে জানতে চাচ্ছি, রাতে কুরবানী দিলে কোনো সমস্যা নেই তো?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ঈদের নামাযের পর তাড়াতাড়ি কুরবানী করা উত্তম। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ c ইরশাদ করেন-

إِنَّ أَوَّلَ مَا نَبْدَأُ مِنْ يَوْمِنَا هَذَا أَنْ نُصَلِّيَ، ثُمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ، فَمَنْ فَعَلَ فَقَدْ أَصَابَ سُنَّتَنَا.

আমাদের আজকের এই দিনে সর্বপ্রথম কাজ হল, (ঈদের) নামায আদায় করা। এরপর (নামায থেকে) ফিরে এসে আমরা কুরবানী করব। অতএব যে এরূপ করবে সে আমাদের সুন্নতের অনুসরণ করল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৫১

তাছাড়া ঈদের দিনের সর্বপ্রথম আহারটি নিজ কুরবানীকৃত পশুর গোশত দ্বারা করাও উত্তম। হাদীস শরীফে এসেছে, বুরাইদা e বলেন-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَغْدُو يَوْمَ الْفِطْرِ حَتَّى يَأْكُلَ، وَلَا يَأْكُلُ يَوْمَ الْأَضْحَى حَتَّى يَرْجِعَ فَيَأْكُلَ مِنْ أُضْحِيّتِهِ.

রাসূলুল্লাহ c ঈদুল ফিতরের দিন না খেয়ে বের হতেন না। আর ঈদুল আযহার দিন নামায থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত কিছু খেতেন না। এরপর প্রথমে কুরবানীর গোশত খেতেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২৯৮৪

ঈদের নামাযের পর তাড়াতাড়ি কুরবানী করে নিলে এই আমলটি করাও সম্ভব হয়।

অবশ্য কুরবানীর সময় ঈদের দিনসহ মোট তিন দিন। ঈদের নামাযের পর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত কুরবানীর সুযোগ রয়েছে। এ সময়ে দিনে রাতে যে কোনো সময় কুরবানী করলে তা আদায় হয়ে যাবে। তবে রাতে কুরবানী করলে খেয়াল রাখতে হবে, যেন পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকে। যেন জবাই কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • বাদায়েউস সানায়ে, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২২৩
  • আলমুহীতুল বুরহানী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৬১
  • সারাখসী, খন্ড: ১২, পৃষ্ঠা: ১৯
  • ফাতাওয়া হিন্দিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৯৫
  • আলবাহরুর রায়েক, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৭৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৩১ ডিসেম্বর, ২০