মোবাইলে তিন তালাক দিলে হুকুম কি

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবাহ-তালাক১৭ মে, ২১

প্রশ্ন

রাগের মাথায় যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৩ তালাক একবারে প্রধান করে এবং তালাক প্রধান করার সময় স্বামী এবং স্ত্রী ব্যাতিত অন্য কেউ উপস্থিত না থাকে তাহলে কি তালাক হয়ে যায়। আর তালাক হলে যদি ওই স্ত্রী কে নিয়ে যদি স্বামী আবার সংসার করতে চায় তাহলে কি করনীয়?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

তালাক কোন মোহাব্বতের শব্দ নয়। এটি বিবাদের শব্দ। বিচ্ছেদের শব্দ। সম্পর্কচ্ছেদের শব্দ। আর বিবাদ, বিচ্ছেদ ও সম্পর্কচ্ছেদ মানুষ মোহাব্বত করে করে না। করে রাগ করেই। তাই রাগের বশে তালাক দিলে হবে কি না? এ প্রশ্নটিই আসলে অবান্তর প্রশ্ন। কারণ তালাক মানুষ রাগের বশেই দিয়ে থাকে। তালাক সবাইকে জানিয়ে দেয় জরুরী নয়। কাউকে না জানিয়ে তালাক দিলেও তালাক পতিত হয়ে যায়।

আপনার একাজটি খুবই অন্যায় হয়েছে। খুবই খারাপ হয়েছে। কিছু ভুল শুধরানো অযোগ্য হয়। একেবারে তিন তালাক দিয়ে দেয়াটাও তেমনি। তিন তালাক আসলে ইসলামে জায়েজই না। তালাক দিতে চাইলে দিতে হয় এক তালাক। দুই বা তিন তালাক দেয়া জায়েজ না। কিন্তু জায়েজ না হলেও কেউ যদি করে তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

যেমন কাউকে খুন করা জায়েজ নয়, কিন্তু যদি খুন করে ফেলে তাহলে খুনতো ঠিকই হয়ে যায়। তেমনি একবারে তিন তালাক দেয়া জায়েজ নয়, কিন্তু দিয়ে দিলে হয়ে যায়। তিন তালাক দেয়াকে শরয়ী পরিভাষায় তালাকে মুগাল্লাযা বলে। তাহলে হালালায়ে শরয়্যিয়্যাহ ছাড়া স্ত্রীকে রাখা জায়েজ নয়। ইসলামী শরীয়তে যা স্বাভাবিকভাবে কাম্য নয়। তাই এ থেকে বেঁচে থাকাটাই উত্তম। কেননা, হাদিসের মধ্যে এসেছে যে, “হালালকারী ও যার জন্য হালাল করা হল এবং যাকে হালাল করা হল সবার উপর আল্লাহর লানত”। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং-১৭৩৬৪

সুতরাং এ পথে না যাওয়াই ভাল। বরং তালাক দেবার সময় শরয়ী বিধানের প্রতি খেয়াল করার মানসিকতা তৈরী করা। তিন তালাকপ্রাপ্ত মহিলাকে যদি অন্য কোন পুরুষ বিয়ে করে। তারপর তার ঘর-সংসার করতে থাকে। অর্থাৎ তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক হয়। তারপর উক্ত স্বামী মারা যায়, বা সে কোন কারণে তালাক দেয়। তাহলে কেবল প্রথম স্বামীর জন্য উক্ত মহিলাকে বিবাহ করা জায়েজ হয়। অন্যথায় নয়।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • رد المحتار, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৫২
  • সূরা: البقرة, আয়াত: ২৩০
  • مصنف ابن ابى شيبة, হাদীস নং: ১৭,৩৬৪
  • سنن الترذى, হাদীস নং: ১,১৮৪
  • موطأ مالك, হাদীস নং: ১,৯৪২

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৭ মে, ২১