মেয়েদের চুল কাটা প্রসঙ্গে

মাসিক আল কাউসারসভ্যতা ও সংস্কৃতি১৩ মার্চ, ২১

প্রশ্ন

আমরা জানি, মেয়েদের চুল কাটা নিষেধ। তবে প্রয়োজনের সময় চার আঙ্গুল পরিমাণ চুল কাটা যায়। এখন আমার প্রশ্ন হল:

ক. মেয়েরা কতদিন পর পর চুল কাটতে পারবে এবং তার পরিমাণ কতটুকু?

খ. বেশি কাটলে তার কাফফারা কী দিতে হবে এবং তা কী পরিমাণ?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

মহিলাদের চুলের ক্ষেত্রে শরীয়তের মৌলিক নীতিমালা হলঃ

১. মহিলারা চুল লম্বা রাখবে। হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, উম্মাহাতুল মুমিনীন e চুল লম্বা রাখতেন।

২. এ পরিমাণ খাটো করবে না যে, পুরুষের চুলের মতো হয়ে যায়। হাদীস শরীফে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিনী মহিলার প্রতি অভিসম্পাত করা হয়েছে।

৩. চুল কাটার ক্ষেত্রে বিজাতীয়দের অনুকরণ করবে না। কারণ হাদীসে বিজাতীয়দের অনুকরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

অতএব যে মহিলার চুল এত লম্বা যে, কিছু অংশ কাটলে পুরুষের চুলের সাথে সাদৃশ্য হবে না তার জন্য ঐ পরিমাণ কাটা জায়েয হবে। পক্ষান্তরে যার চুল তত লম্বা নয়; বরং অল্প কাটলেই কাঁধ সমান হয়ে যাবে এবং পুরুষের বাবরী চুলের মতো দেখা যাবে তার জন্য অল্প করেও কাটার অনুমতি নেই। তবে জটিল অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে চুল ছোট করা, এমনকি জরুরতবশতঃ কামানোরও অনুমতি রয়েছে। অতএব চার আঙ্গুল পরিমাণ কাটা যাবে-এ কথা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়; বরং চুল বেশি বড় থাকলে যেমন কোমর সমান চুল থাকলে চার আঙ্গুলের বেশি পিঠের মাঝামাঝি করে কাটা জায়েয। তবে সর্বাবস্থায় ফ্যাশনের অনুকরণ করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে মহিলারা তাদের চুল খাটো করতে পারবে। এর জন্য সময়েরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আর কেউ নাজায়েয পরিমাণ কেটে ফেললে বা বিজাতীয় অনুকরণে চুল কেটে করে ফেললে তাওবা ইস্তিগফার করতে হবে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • সহীহ বুখারী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৮৭৪
  • জামে তিরমিযী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১০৩
  • সহীহ মুসলিম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৪৮
  • তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৭২
  • আলমুফাসসাল ফী আহকামিল মারআতি ওয়াল বায়তিল মুসলিম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪০০
  • খুলাসাতুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৭৭
  • হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২০৩
  • আলফাতাওয়াল মারআহ, শায়খ ইবনে বায, পৃষ্ঠা:

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৩ মার্চ, ২১