মৃত্যুর পূর্বে কী ধরণের পূণ্য করা উচিত

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবিধ১৬ মে, ২১

প্রশ্ন

আমার মায়ের বয়স ৬৩ বছর। তিনি একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ২/৩ মাসের মধ্যে তাঁর অপারেশন দরকার। যদিও তিনি এই মুহূর্তে মোটামুটি স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন আলহামদুলিল্লাহ, কিন্তু অপারেশন না করালে ডাক্তারগণ আশংকা করছেন ২/৩ বছরের মধ্যে প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে।

এমতাবস্থায় উনি চাচ্ছেন অপারেশনের আগে এমন কিছু ভালো কাজ করে যেতে যেন যদি অপারেশনে উনি না বাঁচেন তাহলে যেন আল্লাহর কাছে ভালো কিছু নিয়ে যেতে পারেন। আমরা বলেছি ভালো করে তাওবা-ইস্তিগফার করতে। প্রশ্নঃ

১. দয়া করে এমন কিছু কাজ বলুন যেন উনি মৃত্যুর আগে সেগুলো করে যেতে পারেন। আমাদের দেখামতে, উনি উনার জীবনে আল্লাহর বিধানমতো চলতে চেষ্টা করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ্‌। স্পেসিফিক্যালি, উনার একটি ফ্ল্যাট আছে, উনি ভাবছেন এমন একটি নিয়্যত করবেন কিনা যে যদি অপারেশনে ভালো হয়ে যান, তাহলে সেটি বিক্রি করে আরেকবার হাজ্জ্ব করতে যাবেন (উনি একবার হাজ্জ্ব করেছেন)। উল্লেখ্য, আমার বাবা আল্লাহর রহমতে আর্থিকভাবে সচ্ছল, সুতরাং উনি ফ্ল্যাট বিক্রি করলে আমাদের (সন্তানদের) সমস্যা হবেনা ইনশাআল্লাহ।

২. উনার এই চিন্তাটা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন? এর চেয়ে ভালো কোন অপশন বলতে পারেন কি (যদি থাকে) যেটা উনি ফ্ল্যাট বিক্রি করা টাকা দিয়ে করতে পারেন?।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

আমরা আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করি। যদি হায়াত থাকে, তাহলে যেন দ্রুত সুস্থ্যতার নেয়ামতে ফিরে আসেন। আর যদি হায়াত না থাকে, তাহলে ঈমানের সাথে সসম্মানে আল্লাহর সান্নিধ্যে যাবার তৌফিক আল্লাহ তাআলা দান করুন।

মৃত্যুর পূর্বে ভাল কাজ করে যাওয়া খুবই নসীবের ব্যাপার। এক্ষেত্রে সদকায়ে জারিয়া করা সবচে’ উত্তম। সদকায়ে জারিয়া মানে হল, এমন একটি সওয়াবের কাজ জারি করে যাওয়া, যে সওয়াবের কাজটি তার মৃত্যুর পরও জারি থাকবে, আর তার কবরে এর সওয়াব পৌছতে থাকবে। যেমন মসজিদ নির্মাণ, মাদরাসা নির্মাণ, মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ, ব্রীজ নির্মাণ, বা এমন কোন প্রতিষ্ঠানে দান করা যাদের খিদমাত জারি থাকবে। যেমন মাদরাসায় কিতাব ক্রয় করে দেয়া। দ্বীনী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা ইত্যাদি।

এমন কোন কাজ করে যেতে পারলে সবচে’ উত্তম হবে। বাকি যদি তিনি হজ্ব করতে চান তাও করতে পারেন। হজ্ব খুবই উত্তম আমল। একটি হজ্বে মাবরূরের দ্বারা ব্যক্তি ভূমিষ্ট বাচ্চার মত মাসূম হয়ে যায়। বাকি হজ্ব সদকায়ে জারিয়া নয়।

মোটকথা, হজ্বও করতে পারেন, বা যে কোন সদকায়ে জারিয়ায়ও অংশ নিতে পারেন। তাছাড়া বেশি ইস্তিগফার, দরূদ বেশি পড়ার আমল জারি রাখতে পারেন। আবারো আপনার আপনার জন্য আমাদের মন থেকে দুআ রইল। আল্লাহ তাআলা তাকে কবুল করুন। আমীন।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • صحيح مسلم, হাদীস নং: ১,৬৩১
  • مسند احمد, হাদীস নং: ৭,১৩৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৬ মে, ২১