মুসাফাহা শেষে হাত বুকে লাগানোর হুকুম এবং বিদআতের সংজ্ঞা

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসসভ্যতা ও সংস্কৃতি১০ এপ্রিল, ২১

প্রশ্ন

মুসাফা শেষ করে হাত এনে বুকে লাগানো জায়েজ নাকি নাজায়েজ জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

প্রথমে বিদআতের সংজ্ঞা হাদীস থেকে জেনে নেই। عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ হযরত আয়শা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন, আমাদের দ্বীনের মাঝে যে ব্যক্তি নতুন বিষয় আবিস্কার করে যা তাতে নেই তাহলে তা পরিত্যাজ্য। -সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৬০৮, সহীহ বুখারী, হাদিস নং-২৫৫০, সহীহ মুসলিম-৪৫৮৯ এই হাদিসে লক্ষ্য করুন কি কি শর্তে নব আবিস্কৃত বস্তুকে পরিত্যাজ্য বলেছেন নবীজী c

১. সম্পূর্ণ নতুন বিষয়। যার কোন সামান্যতম প্রমাণ নবীযুগে বা সাহাবা যুগে নাই এমন বিষয় হতে হবে।

২. দ্বীনী বিষয় হতে হবে। সুতরাং দ্বীনী বিষয় ছাড়া যত নতুন বিষয়ই আবিস্কারই হোকনা কেন তা বিদআত নয়। যেমন বৈজ্ঞানিক আবিস্কার। নতুন নতুন আসবাব ইত্যাদি। এসব বিদআত নয়। কারণ এসব দ্বীনী বিষয় নয়। বরং বৈষয়িক বিষয়।

৩. দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার হতে হবে। দ্বীনের জন্য হলে সমস্যা নাই। কারণ দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার মানে হল এটা সওয়াবের কাজ। সুন্নাত, ওয়াজিব ইত্যাদী। আর দ্বীনের জন্য হলে সেটা মূলত সওয়াবের কাজ নয়, বরং সওয়াবের কাজের সহায়ক। যেমন মাদরাসা শিক্ষার একাডেমিক পদ্ধতি নববী যুগে ছিলনা। পরবর্তীতে আবিস্কার করা হয়েছে। এই একাডেমিক পদ্ধতিটি দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার নয়, বরং দ্বীনী কাজের জন্য সহায়ক হিসেবে আবিস্কার হয়েছে। অর্থাৎ দ্বীন শিখার সহায়ক। আর দ্বীন শিখাটা সওয়াবের কাজ। কিন্তু সিষ্টেমটা মূলত সওয়াবের কাজ নয় বরং সহায়ক।

মিলাদ কিয়াম বিদআত। কারণ এটি নতুন আবিস্কার। নববী যুগ বা সাহাবা যুগে ছিল না। ছিল না রাসূল c এর বলা শ্রেষ্ট যুগেও। সেই সাথে এটিকে দ্বীন মনে করা হয়, সওয়াবের কাজ মনে করা হয় তাই এটি বিদআত।

তাই মুসাফাহা করার পর এমনিতেই যদি হাতকে বুকের সাথে লাগায়, সওয়াবের কাজ বা এটি সুন্নত এমন মনে না করে, তাহলে এটি বিদআত হবে না। হারাম বা নাজায়েজ হবে না। কিন্তু যদি সওয়াবের কাজ মনে করে, বা সুন্নত মনে করে, বা এটিকে মুসাফাহা সংশ্লিষ্ট সুন্নত মনে করে তাহলে তা বিদআত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আর প্রতিটি বিদআতই গোমরাহী।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১০ এপ্রিল, ২১