মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাতে নামাযে হাত বাঁধা বিষয়ক “নাভির নিচে” কথাটুকু কি নেই

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসনামায২৭ নভেম্বর, ২৩

প্রশ্ন

এক আহলে হাদীস ভাইকে বলতে শুনলাম মুসান্নাফ এবনে আবি শায়বাতে বর্ণীত ওয়ায়েল এবনে হুজরের হাদীসে নাকি “تحت السرة” কথাটি নাকি মূল কিতাবের অংশ নয়। এটা নাকি মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য বাড়ানো হয়েছে।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

আসলে অধিকাংশ অভিযোগের ভিত্তি হয়ে থাকে ইলমের কমতি। অজ্ঞতা ও পড়াশোনার অগভীরতা। বাংলাদেশেরও এক কথিত শায়েখ এ অভিযোগটি করেছেন তার “জাল হাদীসের কবলে রাসূলুল্লাহ c এর ছালাত” নামক মিথ্যাচারপূর্ণ বইয়ে। কিন্তু এসব ভাইয়েরা যদি আরেকটু পড়াশোনা করতেন। আরেকটু গভীরতায় পৌছার চেষ্টা করতেন। নিজেদের অজ্ঞতা আর মুর্খতাকেই চূড়ান্ত ফলাফল না ভেবে জ্ঞানীদের দ্বারস্ত হতেন, তাহলে তারা এ ভুলের সম্মুখীন হতেন না। নিজেরাও মুর্খতার অন্ধকার থেকে মুক্ত হতেন, আর মুসলিম উম্মাহকেও বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করতেন। যাইহোক, আসল বিষয় হল, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবার ১৪/১৫টি পান্ডুলিপি রয়েছে। এর মাঝে একাধিক পান্ডুলিপিতে হাদীসটি এভাবেই অর্থাৎ ةحة السرة (নাভীর নিচে) কথাটাসহ আছে। এর মধ্যে ইমাম মুরতাযা আযাবীদী-এর পান্ডুলিপি ও ইমাম আবিদ আসসিন্দী i -এর পান্ডুলিপি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইমাম কাসিম ইবনে কুতলূবুগা i , আল্লামা আবদুল কাদির ইবনে আবু বকর আসসিদ্দীকি ও আল্লামা মুহাম্মাদ আকরাম সিন্ধীর পান্ডুলিপিতেও হাদীসটি এভাবে আছে। তথা তাতে ةحة السرة (নাভীর নিচে) শব্দটি রয়েছে। পক্ষান্তরে অন্য কিছু পান্ডুলিপিতে এই বর্ণনায় ةحة السرة (নাভীর নিচে) কথাটা নেই। এ কারণে ভারতবর্ষে মুদ্রিত মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবার পুরানো সংস্করণে এই হাদীসে ةحة السرة (নাভীর নিচে) অংশটি ছিল না। বর্তমানে মদীনা মুনাওয়ারার বিখ্যাত ফকীহ ও মুহাদ্দিস শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামার তাহকীক-সম্পাদনায় মুসান্নাফের যে মুদ্রণ পাঠক-গবেষকদের কাছে পৌঁছেছে তাতে হাদীসটি ةحة السرة (নাভীর নিচে) অংশসহ রয়েছে। কারণ শায়খের সামনে প্রথমোক্ত পান্ডুলিপিগুলোও ছিল। তাই তিনি তা উল্লেখ করে দিয়েছেন। সুতরাং এ অংশটি মূলত মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাতে নেই, এ দাবী করা মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা সম্পর্কে অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছু নয়। বিস্তারিত জানতে হলে দেখুন- মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, তাহকীক শায়েখ আওয়ামা-৩/৩২১-৩২২)

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৭ নভেম্বর, ২৩