মাযহাব বিষয়ক ১০টি উদ্ভট প্রশ্নের ইলযামী জবাব

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবিধ৩ জুন, ২২

প্রশ্ন

লা মাজহাবদের মাসালা বিষয়ক সমস্ত অপপ্রচারের উপযুক্ত উত্তর দেওয়ার পর তারা এখন নতুন খেলায় মত্ত। এখন তারা আর মাসালা নিয়ে বিভ্রান্ত করতে আসে না এখন তার বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের মাধ্যমে সাধারন মানুষকে মাজহাব থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চায়। সেই ধরনের তাদের কাছ থেকে পাওয়া কিছু প্রশ্ন নিম্নে প্রশ্নগুলি হল

১. প্রচলিত ৪ মাজহাব মান্য করা কি ফারয, ওয়াজিব, নাকি সুন্নাহ?

২. যদি ইহা মান্য করা ফারজ,ওয়াজিব বা সুন্নাহ হয়ে থাকে তবে এ বাপারে কুরআন ও হাদিছ কি বলে?

৩. আর যদি ফারজ, ওয়াজিব বা সুন্নাহ হয়ে না থাকে তবে এটা মানতে এত বাধ্য করা হয় কেনো?

৪. নিশ্চই রসুল c এবং তার সাহাবি গনের ১টি মাজহাব ছিল? সেই মাজহাব বা তরিকা কি আমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয়?

৫. হানাফি,শাফি,হাম ্বলি ও মালিকি এই ৪ মাজহাব কি এই ৪ ইমামের জীবদ্দশাই তইরি হয় নাকি তাদের ম্রিত্যুর পর?

৬. এই ৪ মাজহাব কে বা কারা কেন ভিন্ন ভিন্ন ৪ তরিকাতে তৈরি করল?

৭. এটা কি কুরান ও হাদিছ অনুযায়ি ঠিক (৪ টি ভিন্ন তরিকা)?

৮. ইমাম ৪ জনের পিতা-মাতা, ভাই-বন, আত্মীয়-স্বজন, উস্তাদগন ও কি আই ৪ ধরনের ভিন্ন তরিকা মেনে চলতেন?

৯. যাদের নামে এই ৪ মাজহাব তৈরি হয়েছে, তারা কি আদৌ এই ৪ মাজহাব বানিয়ে নিতে বলে ছিলেন?

১০. রসুল c এর মাজহাব বা তরিকা কি এখনো প্রচলিত আছে?

ক. যদি থাকে তবে কিভাবে আছে?খ. যদি না থাকে তবে বন্ধ কে করল? কেন করল? বন্ধ করার অধিকার কে দিল?

গ. আর যদি বন্ধ না হয় তবে অন্যের নামে মাজহাব চলতেছে কেন? রসুল c এর নামে মাজহাব না মেনে অ আমাদের অন্যের নামে মাজহাব মানান হচ্ছে কেন? রসুল c এর মাজহাব কি যথেষ্ট নয়?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

কিছু প্রশ্ন আছে যা আসলেই প্রশ্ন। আর প্রশ্নকারী উক্ত বিষয়ে জানার জন্য প্রশ্ন করে থাকে। আর কিছু প্রশ্ন আছে বিভ্রান্ত করার জন্য করা হয়ে থাকে। এসব প্রশ্নের জবাব দিতে হয় প্রশ্ন করে। যাকে বলা হয় ইলযামী জবাব। উপরোক্ত প্রশ্নগুলোও তাই। তাই আমরা উক্ত প্রশ্নগুলোর জবাব প্রশ্ন দিয়ে দিচ্ছি। আমাদের প্রশ্নের যে জবাব হবে তাদের প্রশ্নের জবাবও তাই হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের ইলজামী জবাব:

১. প্রচলিত সহীহ লিজাতিহী, সহীহ লিগাইরিহী, হাসান লিজাতিহী, হাসান লিগাইরিহী, জঈফ মুনকার, মুদাল্লাস হাদীসের এসব পরিভাষা মান্য করা কি ফরজ? না ওয়াজিব? নাকি সুন্নত? কুরআন ও সহীহ হাদীসের শব্দ দ্বারা জানতে চাই।

২. যদি এসব মান্য করা ফরজ, ওয়াজিব বা সুন্নাহ হয়ে থাকে, তাহলে এসব পরিভাষার ব্যাপারে কুরআন ও হাদীস পরিস্কার ভাষায় কি বলে? কুরআন ও সহীহ হাদীসের শব্দ দ্বারা জানতে চাই।

৩. আর যদি ফরজ ওয়াজিব বা সুন্নাহ না হয়ে থাকে, তবে এটা মানতে এত বাধ্য করা হয় কেন? কুরআন ও সহীহ হাদীসের শব্দ দ্বারা জানতে চাই।

৪. নিশ্চয় রাসূল c এবং তার সাহাবীগণ এক প্রকার হাদীস মানতেন। সেই হাদীসই কি আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়? তাহলে এতসব নাম কেন দেয়া হল হাদীসের? নবীজী c ও সাহাবীগণ কোন প্রকারের হাদীস মানতেন, সেটির সংজ্ঞাসহ জানতে চাই কুরআন ও সহীহ হাদীসের শব্দ দিয়ে।

৫. ছয় কিতাবকে সিহাহ সিত্তা নাম বলা কি সংকলকদের জীবদ্দশায়ই বলা শুরু হয় নাকি তাদের মৃত্যুর পর বলা শুরু হয়? প্রচলিত সহীহ লিজাতিহী, সহীহ লিগাইরিহী, হাসান লিজাতিহী, হাসান লিগাইরিহী, জঈফ মুনকার, মুদাল্লাস হাদীসের এসব পরিভাষা কবে কখন থেকে চালু হয়? এসব কে চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন? কুরআন ও সহীহ হাদীসের শব্দ দিয়ে জানতে চাই।

৬. হাদীসের এসব একাধিক প্রকার কে বা কারা ভিন্ন ভিন্ন নামে পদ্ধতিতে তৈরী করল?

৭. রাসূল c থেকে বর্ণিত হাদীসের একাধিক নাম দেয়া, নবীজী c এর হাদীসকে বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, মুসনাদে আহমাদ ইত্যাদির হাদীস বলা কি কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী ঠিক?

৮. সাহাবায়ে কেরামগণও কি বুখারী, মুসলিম, তিরমিজীর হাদীস বলে নবীজী c এর হাদীসকে সম্বোধন করতেন? সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীগণও কি নবীজী c থেকে বর্ণিত হাদীসকে সহীহ, হাসান, জঈফ ইত্যাদি নামে ভাগ করে করে মেনে চলতেন?

৯. যাদের নামে নবীজী c এর হাদীসগুলো চালানো হচ্ছে, তারা কি আদৌ নবীজী c এর হাদীসকে তাদের হাদীস বলে বানিয়ে নিতে বলেছিলেন? তাহলে বুখারীর হাদীস, মুসলিমের হাদীস, তিরমিজীর হাদীস, তাহাবীর হাদীস ইত্যাদি শব্দে নবীজী c এর হাদীসকে ডাকা কুরআনের কোন আয়াত বা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?

১০. হাদীসের সহীহ সংজ্ঞায় বিস্তর মতভেদ আছে। এখন প্রশ্ন হল-

ক. রাসূল c হাদীসের প্রকারের সংজ্ঞার মাঝের যে সংজ্ঞার যে প্রকারের হাদীস মানতেন, সেসব পারিভাষিক ক্যাটাগরির হাদীস কি এখনো প্রচলিত আছে? যদি থাকে, তবে কিভাবে আছে?কার সহীহের সংজ্ঞার অনুকুল রাসূল c সহীহ হাদীস মানতেন? সাহাবায়ে কেরাম কার সহীহ এর সংজ্ঞা মত রাসূল c এর হাদীস মানতেন? সেসব পারিভাষিক আমলী হাদীস কি এখন প্রচলিত আছে? যদি থাকে তবে কিভাবে আছে?

খ. যদি না থাকে, তবে কে বন্ধ করল এসব পরিভাষা? বন্ধ করার অধিকার কে দিল?

গ. আর যদি বন্ধ না হয়, তবে অন্যের নামে রাসূল c এর হাদীস চলতেছে কেন? রাসূল c এর হাদীসের কিতাব না বলে বুখারীর হাদীস, মুসলিমের হাদীস ইত্যাদি বলে অন্যের নামে রাসূলের হাদীস চালানো হচ্ছে কেন? রাসূল c এর হাদীস বলাই কি যথেষ্ঠ নয়?

এ সকল প্রশ্নের জবাব কুরআনের আয়াত বা সহীহ হাদীসের পরিস্কার শব্দসহ জানতে চাই। এসব প্রশ্নের জবাব কুরআন ও সহীহ হাদীসের শব্দ উল্লেখ করে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিতে বলুন লোকটিকে। তাহলে আমরাও তাদের উদ্ভট প্রশ্নের জবাব দিব ইনশাআল্লাহ।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৩ জুন, ২২