মাজুর ব্যক্তির ইস্তেঞ্জা কে করিয়ে দেবে

মাসিক আল কাউসারবিবিধ২ জানু, ২১

প্রশ্ন

১. একেবারে মাযুর ব্যক্তি নিজে নিজে ইস্তেঞ্জা করতে পারে না। তার ইস্তেঞ্জার কী বিধান হবে? তার স্ত্রী জীবিত নেই। এখন কি ছেলেরা তাকে ইস্তেঞ্জা করিয়ে দিতে পারবে?

২. মহিলাদেরও কি ইস্তেঞ্জার ক্ষেত্রে ঢিলা ব্যবহারের বিধান রয়েছে?

৩. ব্যবহৃত ঢিলা শুকিয়ে গেলে তা দ্বারা কি আবার ইস্তেঞ্জা করা যাবে?

৪. গাছের পাতা কি ঢিলা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে? যদি জায়েয না হয় তাহলে শুধু এভাবে ইস্তেঞ্জা করার পর আদায়কৃত নামাযের কী হুকুম হবে?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

১. অসুস্থতার কারণে নিজে ইস্তেঞ্জা করতে সক্ষম নয়- এমন মাযুর ব্যক্তি পুরুষ হলে ছেলে বা অন্য কোনো পুরুষ যথাসম্ভব সতরের দিকে না তাকিয়ে ইস্তেঞ্জা করিয়ে দেবে। ওযরের কারণে এমনটি করার দ্বারা গোনাহ হবে না। আর মাযুর মহিলা হলে তার মেয়ে বা পুত্রবধু কিংবা অন্য কোনো সেবিকা তাকে ইস্তেঞ্জা করিয়ে দেবে। নারীদের মধ্যে কেউ না থাকলে এমন পরিস্থিতিতে ছেলেও করতে পারবে। সেক্ষেত্রে সতরকে যথাসম্ভব আড়াল করে নেবে এবং সতরের দিকে নজর না পড়ে এভাবে করার চেষ্টা করবে। আর হাতে গ্লাভস জাতীয় কিছু লাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে। -কিতাবুল আছল ২/২৩৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/৩৩৭; আলইখতিয়ার ৪/১০৯; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৯৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬১

২. হাঁ, মহিলাদের জন্যও বড় ইস্তেঞ্জার ক্ষেত্রে পানি ও ঢিলা উভয়টি ব্যবহার করা উত্তম। পায়খানার পর ঢিলা ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলা উভয়েই সমান। আর মহিলাদের পেশাবের পর শুধু পানি ব্যবহার করে নিলেই চলবে। এক্ষেত্রে ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। -আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৩; রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৭

৩. নাপাক বস্তু দ্বারা ইস্তেঞ্জা করা জায়েয নয়। ব্যবহৃত ঢিলা যেহেতু নাপাক তাই এটি পুনরায় ব্যবহার করবে না।

عَنْ مُجَاهِدٍ، أَنهُ كَانَ يَكْرَهُ أَنْ يَسْتَنْجِيَ بِالْحَجَرِ الَّذِي قَدَ اسْتُنْجِيَ بِهِ.

মুজাহিদ i থেকে বর্ণিত আছে, যে পাথর দ্বারা একবার ইস্তেঞ্জা করা হয়েছে তা দ্বারা পুনরায় ইস্তেঞ্জা করা তিনি ঠিক মনে করতেন না। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, বর্ণনা ১৬৬৬ -আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০

৪. গাছের পাতা বা এ জাতীয় বস্তু দ্বারাও ইস্তেঞ্জা করাকে ফুকাহায়ে কেরাম মাকরূহ বলেছেন। অবশ্য কেউ এসব বস্তু দ্বারা ইস্তেঞ্জা করলে এর দ্বারা যদি নাপাকী দূর হয়ে যায় তাহলে কাজটি মাকরূহ হলেও পবিত্রতা অর্জিত হয়ে যাবে। তাই এসব বস্তু দ্বারা ইস্তেঞ্জা করে আদায়কৃত নামায কাযা করতে হবে না।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • -আলবাহরুর রায়েক, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৫৫
  • আলজাওহারাতুন নাইয়িরা, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪০

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২ জানু, ২১