মসজিদ নির্মাণের জন্য ওয়াকফকৃত জমি হওয়া আবশ্যক এক মসজিদের সম্পদ আরেক মসজিদে ব্যবহারের হুকুম কি

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসমসজিদ-মাদ্রাসার বিধান১৯ জুন, ২৩

প্রশ্ন

১। ওয়াকফকৃত জমি ছাড়া মসজিদ নির্মান করা জায়েজ কিনা? ২।এক মসজিদের জন্য মৌখিক ওয়াকফকৃত জমি বা তা বিক্রি করা টাকা অন্য মসজিদে বা খানকা শরীফে দেওয়া জায়েজ কিনা?

৩।(মসজিদের সভাপতির অনুমতি ছাড়া) এক মসজিদের দানের টাকা অন্য আরেকটা নতুন মসজিদে দেওয়া যাবে কিনা? ৪। মসজিদে জেরারের হুকুম কি? কোরআন হাদীস এবং ফতোয়ার কিতাবের আলোকে উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

১ম প্রশ্নের জবাব:

মসজিদ হবার জন্য জমির মালিক স্থানটি আলাদা করে দিয়ে নামায পড়ার জন্য আম অনুমতি প্রদান করার পর উক্ত স্থানে নামায শুরু করে দেয়ার দ্বারাই উক্ত স্থানটি মসজিদ হয়ে যায়। বর্তমান প্রচলিত পদ্ধতির ওয়াকফের কাগজপত্র পূর্ণ করা শর্ত নয়। তবে কাগজপত্র তৈরী করে নেয়া উত্তম। যেন পরবর্তীতে কোন সমস্যা সৃষ্টি না হয়। বাকি মসজিদ নির্মাণ করার জন্য প্রচলিত পদ্ধতির ওয়াকফের কাগজ পত্র পূর্ণ করা জরুরী নয়। وَأَبُو يُوسُفَ – رَحِمَهُ اللَّهُ – مَرَّ عَلَى أَصْلِهِ مِنْ زَوَالِ الْمِلْكِ بِمُجَرَّدِ الْقَوْلِ أَذِنَ فِي الصَّلَاةِ أَوْ لَمْ يَأْذَنْ، وَيَصِيرُ مَسْجِدًا بِلَا حُكْمٍ؛ لِأَنَّهُ إسْقَاطٌ كَالْإِعْتَاقِ، وَبِهِ قَالَتْ الْأَئِمَّةُ الثَّلَاثَةُ. -فتح القدير، كتال الوقف، فصل فى احكام المسجد، إذَا بَنَى مَسْجِدًا لَمْ يَزُلْ مِلْكُهُ عَنْهُ-6/234 وفى البحر الرائق- الخامس من شرائطه الملك وقت الوقف…………. اما لو وقف ضيعة غيره على جهات فبلغ الغيرفأجازه جاز بشرط الحكم والتسليم، (البحر الرائق-5/188)

২য় প্রশ্নের জবাব এক মসজিদের জন্য দেয়া জমি বা সম্পদ অন্য মসজিদ বা অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা জায়েজ নয়।

فان وقفها على مستحقى وقفه، لم يجز نقلها، (الدر المختار، كتاب الوقف-4/365، سعيد، وكذا فى النهر الفائق، كتاب الوقف-3/318، وكذا فى الجر المنتقى، كتاب الوقف-2/581) اذا وقف كتبا وعين موضعها، فإن وقفها على أهل ذلك الموضع، لم يجز نقلها منه، لا لهم ولا لغيرهم، (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب فى نقل الوقف من محلها-4/366، سعيد)

৩য় প্রশ্নের জবাব অনুমতি ছাড়াতো দুরে থাক সভাপতির অনুমতিক্রমেও এক মসজিদে দান করা টাকা অন্য মসজিদের জন্য দান করা জায়েজ নয়।

فان وقفها على مستحقى وقفه، لم يجز نقلها، (الدر المختار، كتاب الوقف-4/365، سعيد، وكذا فى النهر الفائق، كتاب الوقف-3/318، وكذا فى الجر المنتقى، كتاب الوقف-2/581) اذا وقف كتبا وعين موضعها، فإن وقفها على أهل ذلك الموضع، لم يجز نقلها منه، لا لهم ولا لغيرهم، (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب فى نقل الوقف من محلها-4/366، سعيد)

৪র্থ প্রশ্নের জবাব মসজিদে জেরার কাকে বলে? যে মসজিদ মানুষকে দেখানোর জন্য, কারো প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে, আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতিত অন্য কোন উদ্দেশ্যে বা হারাম মাল দিয়ে নির্মিত মসজিদকে বলা হয় মসজিদে জেরার। এক কথায় যে মসজিদ নির্মানে আল্লাহর সন্তুষ্টি নয় বরং অন্য কোন মাকসাদ পূর্ণ করা উদ্দেশ্য হয় সেটিই মসজিদে জেরার।

وقيل: كل مسجد بنى مباهاة أو رياء وسمعة أو لغرض سوى ابتغاء وجه الله أو بمال غير طيب، فهو لا حق بمسجد الضرار، (الكشاف-2/310، سورة التوبة-107، روح المعانى-11/21، تفسير المدارك-1/651)

মসজিদে জেরার নির্মাণ করা জায়েজ নয়।

وَالَّذِينَ اتَّخَذُوا مَسْجِدًا ضِرَارًا وَكُفْرًا وَتَفْرِيقًا بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ وَإِرْصَادًا لِّمَنْ حَارَبَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ مِن قَبْلُ ۚ وَلَيَحْلِفُنَّ إِنْ أَرَدْنَا إِلَّا الْحُسْنَىٰ ۖ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ (٩:١٠٧)

আর যারা নির্মাণ করেছে মসজিদ জিদের বশে এবং কুফরীর তাড়নায় মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃস্টির উদ্দেশ্যে এবং ঐ লোকের জন্য ঘাটি স্বরূপ যে পূর্ব থেকে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করে আসছে, আর তারা অবশ্যই শপথ করবে যে, আমরা কেবল কল্যাণই চেয়েছি। পক্ষান্তরে আল্লাহ সাক্ষী যে, তারা সবাই মিথ্যুক। -সূরা তওবা-১০৭

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১৯ জুন, ২৩