বেনামাযী মৃত ব্যক্তির জন্য ওয়ারিসদের করণীয়

ইসলামী জিন্দেগীবিবিধ২৪ ফেব, ২১

প্রশ্ন

আমার বাবা নামায পড়তেন না। তিনি মারা গেছেন, এখন তার জন্য আমরা কি করতে পারি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

যদি কারও নামায ছুটে গিয়ে থাকে এবং কাযা করার পূর্বে মৃত্যু এসে পড়ে তাহলে মৃত্যুর পূর্বে ঐসব নামাযের ফিদিয়া দেয়ার ওসীয়্যাত করে যাওয়া তার উপর ওয়াজিব। এরূপ অবস্থায় ফিদিয়া দেয়ার ওসীয়্যাত করে গেলে ওয়ারিশগণ তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ সম্পত্তি থেকে কাযাকৃত সকল নামায হিসাব করে ফিদিয়া দিয়ে দিবে। আর এক তৃতীয়াংশ মালের দ্বারা তার সকল ফিদিয়া আদায় না হলে যে পরিমাণ সম্পদ অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে তা সকল ওয়ারিশদের সম্মতিতে নিতে হবে। তবে নাবালেগদের অংশ থেকে নেয়া যাবে না। যদিও সে সম্মতি দেয়। এমনিভাবে ওসীয়্যাত করে গিয়ে থাকলে রোযা,হজ্জ যাকাত ও সদকায়ে ফিতর ইত্যাদি ফরয কাজগুলি যদি আদায় না করে থাকে তাহলে সেগুলিও আদায় করে দেওয়া উচিত। আর হজ্জের জন্য বদলী হজ্জ আদায় করা যায়।

নামায, রোযা ও সদকায়ে ফিতর ইত্যাদির ফিদিয়া হল ৮০ তোলার সেরে ১ সের বার ছটাক (১ কেজি ৬৬২ গ্রাম) গম বা আটা কিম্বা তার বর্তমান বাজার মূল্য কোন গরীব মিসকীনকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। ফিদিয়ায় গম ও যব ইত্যাদি শষ্য দেয়ার চেয়ে তার মূল্য দেয়া উত্তম। প্রতি ওয়াক্ত ফরয নামায এবং বিতর নামাযের বদলে এক একটা ফিদিয়া আদায় করতে হবে।

প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের এবং বিতর সহ মোট ছয় ওয়াক্ত নামাযের ফিদিয়া আদায় করতে হবে। আর যদি আপনার বাবা মৃত্যুর পূর্বে তার কাযা নামায ইত্যাদির ফিদিয়া দেয়ার ওসীয়্যাত করে না থাকে তথাপিও আপনারা যারা বালেগ উত্তরসূরী আছেন, তারা নিজেদের সম্পত্তি থেকে স্বেচ্ছায় তার ফিদিয়া আদায় করে দেন তাহলেও আশা করা যায় এর উসীলায় তার অনেক ফায়দা হবে।

আর তার পুরা জীবনের ফিদিয়া এক সাথে যতটুকু আদায় করা সম্ভব হয় সেই পরিমান ফিদিয়া নিজে পরিপূর্ণ দ্বীনের উপরে থেকে আদায় করতে থাকবেন। আর তার মাগফিরাত ও জান্নাত লাভের জন্য সর্বদা আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করতে থাকবেন।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ফাতাওয়া আলমগীরী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১২৫
  • আদ-দুররুল মুখতার, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৭২
  • ফাতাওয়া দারুল উলুম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৬৪

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৪ ফেব, ২১