বিয়েতে মেয়ের সম্মতি

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবাহ-তালাক১২ মে, ২১

প্রশ্ন

বিয়েতে মেয়ের সম্মতির প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বিয়েতে মেয়ের অনুমতি থাকা আবশ্যক। মেয়ের অনুমতি ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হবে না। তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে পিতা বা অভিভাবক বিয়ে দিতে পারবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েটি থেকে অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। তবে পিতা-দাদা ছাড়া অন্য কেউ নাবালেগ অবস্থায় বিয়ে দিলে উক্ত মেয়ে বড় হওয়ার পর যদি উক্ত বিয়েতে সন্তুষ্ট না থাকে, তাহলে বিচারকের ফায়সালা দ্বারা উক্ত বিয়ে ভঙ্গ করে দিতে পারবে। عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَال: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا • হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। -মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَال: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَت: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَال: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ» • হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল c এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল c তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল c মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। -সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১

، عَنِ ابْنِ عَبَّاس: ” أَنَّ جَارِيَةً بِكْرًا أَتَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرَتْ أَنَّ أَبَاهَا زَوَّجَهَا وَهِيَ كَارِهَةٌ فَخَيَّرَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ” • হযরত ইবনে আব্বাস e থেকে বর্ণিত। কুমারী মেয়ে রাসূল c এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমার অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে, তখন রাসূল c সে মেয়েকে অধিকার দিলেন, (যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে রাখতেও পারে)। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৬, সুনানুল কুবরা নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৬৬, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৬৬

عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَال: جَاءَتْ فَتَاةٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَت: ”إِنَّ أَبِي زَوَّجَنِي ابْنَ أَخِيهِ، لِيَرْفَعَ بِي خَسِيسَتَهُ، قَال: فَجَعَلَ الْأَمْرَ إِلَيْهَا، فَقَالَت: قَدْ أَجَزْتُ مَا صَنَعَ أَبِي، وَلَكِنْ أَرَدْتُ أَنْ تَعْلَمَ النِّسَاءُ أَنْ لَيْسَ إِلَى الْآبَاءِ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ“ • হযরত বুরাইদা e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী c এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল c বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, (অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে) তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের (চূড়ান্ত) মতের অধিকার নেই্। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • رد المحتار, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৭৪

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১২ মে, ২১