বিল্ডিং নির্মাণের নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত হাদীসের ব্যাখ্যা

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসসভ্যতা ও সংস্কৃতি১১ মে, ২১

প্রশ্ন

বিল্ডিং বানানো জায়েজ আছে কি না? বিভিন্ন হাদীস দ্বারা তো বিল্ডিং না বানানোর কথা বলা হয়েছে। তাহলে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে বিল্ডিং না বানিয়ে তো কোন উপায় দেখছি না। এখন কী করা যায়?

প্রাসাদ না বানানোর হাদীসঃ রাসূল c একবার গোলাকার ছাদ বিশিষ্ট একটি প্রাসাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, এটা কে নির্মাণ করেছে? লোকেরা বলল, অমুক ব্যক্তি। তখন তিনি বললেন, কিয়ামতের দিন মসজিদ ব্যতীত বাকী সব প্রাসাদগুলো তার মালিকের জন্য বিপদ এর কারণ হবে। -শুআবুল ঈমান, হাদীস- ১০৩০৩

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

প্রয়োজনে বিল্ডিং বানানো জায়েজ। অযথা বিল্ডিং বানানো উচিত নয়। হাদীসে অপ্রয়োজনীয় বিল্ডিং বানাতে নিষেধ করা হয়েছে। সেই সাথে অহংকার ও লৌকিকতাবশতঃ বানানো বিল্ডিংয়ের সমালোচনা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় বিল্ডিং বানাতে নিষেধ করা হয়নি। তাই যেখানে জনসংখ্যা বেশি, স্থান সংকুলান হয় না, সেসব স্থানে বিল্ডিং বানাতে কোন সমস্যা নেই।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، خَرَجَ فَرَأَى قُبَّةً مُشْرِفَةً فَقَال: «مَا هَذِهِ؟» قَالَ لَهُ أَصْحَابُه: هَذِهِ لِفُلَانٍ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ، قَال: فَسَكَتَ وَحَمَلَهَا فِي نَفْسِهِ حَتَّى إِذَا جَاءَ صَاحِبُهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسَلِّمُ عَلَيْهِ فِي النَّاسِ أَعْرَضَ عَنْهُ، صَنَعَ ذَلِكَ مِرَارًا، حَتَّى عَرَفَ الرَّجُلُ الْغَضَبَ فِيهِ وَالْإِعْرَاضَ عَنْهُ، فَشَكَا ذَلِكَ إِلَى أَصْحَابِهِ، فَقَال: وَاللَّهِ إِنِّي لَأُنْكِرُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالُو: خَرَجَ فَرَأَى قُبَّتَكَ، قَال: فَرَجَعَ الرَّجُلُ إِلَى قُبَّتِهِ فَهَدَمَهَا حَتَّى سَوَّاهَا بِالْأَرْضِ، فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ فَلَمْ يَرَهَا، قَال: «مَا فَعَلَتِ الْقُبَّةُ؟» قَالُو: شَكَا إِلَيْنَا صَاحِبُهَا إِعْرَاضَكَ عَنْهُ، فَأَخْبَرْنَاهُ، فَهَدَمَهَا، فَقَال: «أَمَا إِنَّ كُلَّ بِنَاءٍ وَبَالٌ عَلَى صَاحِبِهِ إِلَّا مَا لَا، إِلَّا مَا لَا» يَعْنِي مَا لَا بُدَّ مِنْهُ

হযরত আনাস বিন মালিক e থেকে বর্ণিত। একদা রাসূল c বের হলেন। পথিমধ্যে একটি উঁচু গম্বুজ দেখলেন। তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটি কার? সাহাবীগণ বললেন, আনসারী ওমুক ব্যক্তির। রাসূল c একথা শুনে চুপ রইলেন এবং বিষয়টি মনে রাখলেন। তারপর যখন ঐ ব্যক্তি (গম্বুজ নির্মাতা) রাসূল c এর কাছে এলেন তখন রাসূল c তাকে উপেক্ষা করলেন। এ ঘটনা কয়েকবার হল। অবশেষে সাহাবী বুঝে গেলেন নবীজী c তার উপর রাগাম্বিত এবং তাকে উপেক্ষা করছেন। সাহাবীটি অন্য সাহাবীদের কাছে রাসূল c এর বিরাগ হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, একদা রাসূল c তোমার ঘরের গম্বুজ দেখেছেন। (সেই কারণেই তিনি রাগাম্বিত) তারপর সাহাবীটি স্বীয় গম্বুজের কাছে এলেন এবং তা ধ্বংস করে দিলেন। একদম মাটির সাথে ঘরটি মিশিয়ে দিলেন। তারপর একদা রাসূল c ঘর থেকে বের হয়ে উক্ত গম্বুজটি না দেখতে পেয়ে বললেন, এ গম্বুজের হল কি? সাহাবাগণ e বললেন, আপনার বিরাগতার বিষয়ে এ ঘরের মালিক জিজ্ঞাসা করলে আমরা কারণ জানিয়ে দেই। তারপর তিনি এ ঘর ধ্বংস করে দেন। একথা শুনে রাসূল c ইরশাদ করেন, “প্রয়োজনে নির্মিত বিল্ডিং ছাড়া প্রতিটি বিল্ডিংই বিপদজনক। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫২৩৭, শরহু মাশকিুল আসার, হাদীস নং-৯৫৬, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-১০২২১

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১১ মে, ২১