বিনা কারণে ইমামের প্রতি মুসল্লিদের অসন্তুষ্টি গ্রহণযোগ্য নয়

ইসলামী জিন্দেগীনামায২৪ ফেব, ২১

প্রশ্ন

জনৈক ইমাম অত্যন্ত গরীব, নিঃস্ব ও অসহায়। বাড়ী-ভিটা কিছুই তাঁর নেই। অভাবের তাড়নায় মাদ্রাসায় বেশীদূর লেখাপড়া করতে পারেননি। যেখানে তিনি থাকতেন সেখানকার গণ্যমান্য লোকেরা অন্য এক ইয়াতিম মেয়ের সঙ্গে তাকে বিবাহ দেন। উক্ত মেয়ের কিছু সম্পত্তি ছিল। সে নামায পড়ে না। মনে করা হয়েছিল পরবর্তীতে ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু হয়নি। সম্পত্তির অহংকারে সে স্বামীকে আদৌ কোন তোয়াক্কা করে না এবং পর্দাও মানে না। তাকে দীনের উপর আনার জন্য ইমাম সাহেব আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তবে খুবই হেয় অবস্থায় তিনি জীবনাতিপাত করছেন। মাসিক বেতন আর জমির ফসল দ্বারা কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন। ইমাম সাহেব অত্যন্ত নম্র, ভদ্র, বিনয়ী ও দীনদার হলেও তার সন্তানাদি তাদের মায়ের স্বভাবেরই। প্রায় সকলেই তাকে সম্মানের চোখে দেখে থাকেন। এমতাবস্থায়, উক্ত ইমামের পিছনে ইকতিদা জায়িয হবে কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ধন-সম্পদ আল্লাহর দান। এতে মানুষের কোন অধিকার নেই। সুতরাং আপনাদের ইমাম সাহেব যদি প্রকৃতপক্ষে ইমামতীর যোগ্য হন অর্থাৎ তিনি মুত্তাকী, পরহেযগার ও দীনের জরূরী মাসআলা-মাসাইল সম্পর্কে জ্ঞাত হন, তার কিরাআত শুদ্ধ হয় তাহলে তার পিছনে ইক্তিদা করায় কোনরূপ অসুবিধা নেই।

আর আর্থিক সংকটের কারণে তার স্ত্রী ও সন্তানরা তাকে হেয়প্রতিপন্ন করে এজন্য তার ইমামতীতে কোন অসুবিধা নেই। কেননা, স্বয়ং রাসূলে আকরাম c ও সাহাবায়ে কিরামের জীবনের দিকে দৃষ্টিপাত করলে পরিলক্ষিত হয় যে, তারা দুনিয়াতে অনেক দুঃখ-কষ্টে জীবন-যাপন করেছেন।

আর উক্ত ইমাম সাহেবের স্ত্রীকে একথা অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে, তার জান্নাত নির্ভর করছে তার স্বামীর সন্তুষ্টির উপর। স্বামীর সন্তুষ্টি ব্যতীত তার ইবাদত বন্দেগী কবুল হবে না। স্বামীকে কষ্ট দিলে জান্নাতের হুরগণ তার জন্য বদ দু‘আ করেন। অনুরূপভাবে সন্তানদেরকে একথা স্মরণ রাখতে হবে যে, তাদের জান্নাত নির্ভর করছে পিতার সন্তুষ্টির উপর। পিতাকে কষ্ট দিলে এর শাস্তি দুনিয়াতেই শুরু হয়ে যাবে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • মিশকাত শরীফ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৮১
  • হিদায়াহ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১২১

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৪ ফেব, ২১