বাংলাদেশে প্রচলতি বন্ধকের প্রথা জায়েজ কিনা

মাসিক আল কাউসারবন্ধক আমানত২ জানু, ২১

প্রশ্ন

মুহতারাম! আমাদের দেশে জমি বন্ধক দেয়ার যে পদ্ধতি প্রচলিত তা কি জায়েয? পদ্ধতিটি হল, কোনো ব্যক্তি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি বন্ধক নিয়ে থাকে। সাধরণত কত বছরের জন্য বন্ধক নেয়া হল তা উল্লেখ থাকে না। টাকাদাতা জমি ভোগ করতে থাকে। এভাবে দু-চার বছর চলে যায়। এরপর জমির মালিক টাকাদাতার মূল টাকা ফিরিয়ে দিয়ে নিজের জমি ফিরিয়ে নেয়। এ পদ্ধতি জায়েয কি না? যদি টাকাদাতা এরূপ শর্ত করে নেয় যে, বছরে বছরে তার টাকা থেকে ৫০০/১০০০ টাকা বা ৫% কিংবা ১০% টাকা কাটা যাবে তাহলে কি জায়েয হবে? বিষয়টা জটিল মনে হচ্ছে। একটু বিস্তারিত খুলে বললে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে তার বিধান কী? যামানত? রাহান-বন্ধক? না কি? একটু খুলে বললে উপকার হয়।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ঋণ দিয়ে জমি বন্ধক রাখার প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি জায়েয নয়। কেননা ঋণ দিয়ে বিনিময়ে বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক-এর এক বর্ণনায় এসেছে, ইবনে সীরীন i বলেন, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ e -এর নিকট এসে বললেন, এক লোক আমার নিকট একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, অতঃপর আমি তাতে আরোহণ করেছি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ e বললেন- مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِهَا فَهُوَ رِبًا তুমি উক্ত ঘোড়ার উপর যে পরিমাণ আরোহণ করেছ তা সুদ হয়েছে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১৫০৭১

আর ঋণের অর্থ থেকে বছর প্রতি ৫০০/১০০০ টাকা কর্তন করার শর্ত করলেও তা জায়েয হবে না। কারণ বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য নামমাত্র ভাড়া দিয়ে তার ভোগ-দখল একটি হিলা বা ছুতা মাত্র। সকলেই জানে যে, জমি মালিককে ঋণ না দেয়া হলে এত কম মূল্যে ভাড়া দিত না।

আর উক্ত লেনদেনে যে টাকা দেয়া হয় তা করয তথা ঋণ। আমানত নয়। আর সেই করয হাসিলের জন্যই বন্ধক নেয়া-দেয়া হয়ে থাকে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • বাদায়েউস সানায়ে, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২১২
  • হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৩৬
  • রদ্দুল মুহতার, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৮২

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২ জানু, ২১