বাংলাদেশে এনজিওদের অগ্রযাত্রার ভূমিকা

ইসলামী জিন্দেগীসভ্যতা ও সংস্কৃতি২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

জানা যায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পরপরই পশ্চিমা দেশের খৃষ্টান ধর্মযাজকদের একটি গোপনীয় ‍মিটিং হয় । যেখানে তারা বাংলাদেশে দারিদ্র ও আপোষিক মতনৈক্যকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে সেখানে খৃষ্টবাদ কায়িমের ষড়যন্ত্র আঁটে । সেই ষড়যন্ত্রের নক্সা অনুযায়ী বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ এদেশে এনজিও খুলেছে এবং বাংলাদেশকে কয়েকটি বিভাগে ভাগ করে এক এক ধর্ম যাজকের আওতায় এক এক বিভাগ সোপর্দ করেছে এবং পরোক্ষভাবে ঐ সব ধর্মযাজকের নিয়ন্ত্রণে সুপরিকল্পিতভাবে এনজিওদের কর্মসংস্থান ভাগ করা হয়েছে । যেমন -অমুক নামের এনজিও অমুক ‍জিলায় কাজ করবে । এ ব্যপারে আপনাদের কতটুকু জানা ?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

আমাদের জানামতে “অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপটিস্ট মিশনারী সংস্থা” বাংলাদেশে তাদের কার্যালয়ে একটি পরিকল্পনা ‍লিখিত আকারে প্রেরণ করে। এটি অতীব গোপনীয় থাকা সত্বেও জনৈক সচেতন মুসলমানের নযরে পড়ে যায়। আলহাজ্ব সৈয়দ আহমদ চৌধুরী সাহেব তার লিখিত “প্রচলিত খৃষ্টবাদ ও বার্ণাবাসের ইঞ্জিল” সেই গোপন পরিকল্পনা কপির অনুবাদ উদ্ধৃত করেছেন। তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

“একটি নতুন দেশের জন্ম হয়েছে”- যার নাম বাংলাদেশ। মুসলমানদের মধ্যে খৃষ্টের প্রচারের অপূর্ব সুযোগ এসেছে। ইসলাম আর এদেশের রাষ্ট্রীয় ধর্ম নেই। জনগণের মনে চিন্তার স্বাধীনতা ও নব অনুসন্ধিত্সার আবির্ভাব ঘটেছে। তাছাড়া জনমনে এবং বিশেষ করে ছাত্র সমাজে ইসলামের প্রতি বিতৃষ্ণা দেখা ‍দিয়েছে। গত ১৯৭১- এর যুদ্ধে মুসলমানরা মুসলমানদের হত্যা করেছে। তাছাড়া গত যুদ্ধে এ দেশীয় কতিপয় ধর্মীয় নেতা পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনীর সংঙ্গে যোগাযোগ করেছে। পশ্চিম পাকিস্তানীগণ তাদের পূর্ব পাকিস্তানী মুসলমান ভাইদের ঈমান নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করছে। আজ এই বাংলাদেশে ‍খৃষ্টবাদের চেহারা অতি সমুজ্জ্বল। যেহেতু গত স্বাধীনতা যুদ্ধে খৃষ্টান যুবকগণ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং খৃষ্টানগণ যুদ্ধ পীড়িত জনগণকে তাদের বাড়ী ঘরে আশ্রয় দিয়েছে এবং খৃষ্টানদের চার্চ রিলিফ অপারেশনে অগ্রবর্তী ভূমিকা পালন করেছে। তাই আসুন! আমারা দু‘আ করি-যেন প্রভু (যীশু) বাংলাদেশে নতুন নতুন দম্পতি প্রেরণ করেন। তাদের কাজ হবে মুসলমানদেরকে খৃষ্টান ধর্মে রূপান্তরিত করা। তারা কাজ করবে এমন জায়গায় যেখানে আগে কোন খৃষ্টান ছিল না। যেমন জামালপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ।

তারা যে শুধু ধর্মান্তরিত করবে তা নয়। এমন সব লোকদেরকে ধর্মান্তরিত করবে যারা অন্যদেরকে ধর্মান্তরিত করতে সক্ষম হবে। এটাই হবে আমাদের লক্ষ্য এবং এ কাজ করতে হবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। আমাদের দৈনন্দিন প্রার্থনা হবে, যেন নতুন দম্পতিগণ এ কাজের এবং সুযোগের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে।

এই খৃষ্টবাদের প্রসারের জন্য যে অর্থের দরকার হবে, তা আমাদের অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপটিস্ট ব্যবস্থা করবে। ঈশ্বর মুসলমানদের হৃদয়ের দ্বার খৃষ্টের বানী গ্রহণের জন্য উন্মুক্ত করে দিবেন। আর মিশনারীগণ এভাবে এদেশীয়দেরকে যীশুর শিষ্য বানিয়ে আমাদের পবিত্রতার জয়গানে আনন্দ করবে।

এভাবে বর্তমান দুনিয়ার প্রায় ১৩/১৪ টি প্রধান খৃষ্টান ‍দেশ তাদের নিজ নিজ কর্মপন্থানুযায়ী বাংলাদেশে মিশন পাঠিয়ে খৃষ্টধর্ম প্রচার করছে।

জনাব আলহাজ্ব এ, বি, এম, নুরুল ইসলাম তার লিখিত “বাংলাদেশের অমুসলিম মিশনারী তত্পরতা” বইতে লিখেছেন- “প্রায় একশতটি মিশনারী সংস্থা বাংলাদেশে কার্যরত রয়েছে ।” তবে ৮৪টি সংস্থার নাম তিনি উল্লেখ করেছেন । অবশিষ্টগুলোর নাম সংগ্রহ করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি । মানুষের চোখে ধুলো দিতে তারা ধারণ করেছে ভিন্ন ভিন্ন রূপ। কিন্তু সকলেরই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। যুক্তরাষ্টের ১৯টি, অস্ট্রেলিয়ার ৩টি, আন্তর্জাতিক ৩টি, বৃটিশের ৪টি, সুইডেনের ৭টি, নেদারল্যান্ডের ২টি, ডেনমার্কের ২টি এবং সুইজারল্যান্ডসহ আরো কয়েকটি দেশের ১টি করে মিশনারী সংস্থা বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরূদ্ধে অপতত্পরতা চালাচ্ছে।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১