ফাসেক ও বিদ‘আতী ইমামের পিছনে ইক্তিদা

ইসলামী জিন্দেগীনামায২৪ ফেব, ২১

প্রশ্ন

আমরা প্রতিমাসে আল্লাহর রাস্তায় তিনদিন সময় দেই। এক মসজিদে গিয়ে দেখি সেখানকার ইমাম সাহেব হাঁটুর উপর কাপড় তুলে পেশাব করেন। আযানের পর হাত তুলে মুনাজাত করেন। মীলাদে দাঁড়িয়ে কিয়াম করেন। তাবলীগ পছন্দ করেন না। বড়পীর i -এর খুব ভক্ত। আমরা সেখানকার কয়েকজনের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপ করে জানতে পারলাম যে, ঐ মসজিদের ইমাম সাহেবের প্রভাব এত বেশী যে কমিটির সদস্যরা পর্যন্ত তার শিষ্যের মতো। যেহেতু তাবলীগ সারা জীবনই করব (ইনশাআল্লাহ) সেহেতু প্রশ্ন জাগে, যেসব মসজিদে এমন ইমামের সাক্ষাৎ মিলবে, তাদের পিছনে নামায আদায় করব কি-না? এমন ইমামদেরকে শোধরাবার উপায় কি? মেহেরবানী করে উত্তর দিলে উপকৃত হব।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

মানুষের সামনে হাঁটুর উপর কাপড় তোলা নাজায়িয। আযানের পর হাত না তুলে দু‘আ করার নিয়ম। তবে কেউ হাত তুলে মুনাজাত করলে তার সাথে ঝগড়া করবে না। শরী‘আতে প্রচলিত মিলাদের কোন অস্তিত্ব নেই। সুতরাং দাঁড়িয়ে কিয়াম করার তো প্রশ্নই উঠে না। এগুলোকে শরী‘আতের বিধান মনে করা বিদ‘আত ও নাজায়িয। বড়পীর i ও অন্যান্য বুযুর্গদের ভক্ত হওয়া ভাল। কিন্তু বড়পীরের নামে বা খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতীর নামে শিরক-বিদ‘আতের কোন অবকাশ নেই। কারণ, তাঁরা কথনোও এগুলোর তা‘লীম দেন নাই। যে সব মসজিদে ফাসেক ও বিদ‘আতী ইমামের সাক্ষাৎ ‍মিলবে এবং অন্যত্র গিয়ে অন্য ইমামের পিছনে নামায আদায় করাও অসুবিধা হয়, এমতাবস্থায় এই ইমামের পিছনেই নামায পড়লে নামায আদায় হবে। জামা‘আতে নামায পড়ার সাওয়াবও পাওয়া যাবে। সুতরাং জামা‘আত ছেড়ে একা একা নামায পড়া যাবে না। ইমামের ত্রুটির কারণে অসুবিধা হলে তার জন্য ইমাম সাহেব ও কমিটি দায়ী থাকবে। এমন ইমামকে বিভিন্ন হেকমতের মাধ্যমে সহীহ কিতাব-পত্র হাদিয়া দিয়ে এবং হক্কানী উলামাদের কারগুযারী শুনিয়ে তাকওয়া-পরহেযগারীর দিকে দাওয়াত দিতে হবে। এতে যদি শোধরানো যায় তাহলে ভাল। আর যদি না শোধরায় তাহলে আল্লাহ তা‘আলার হাওলা করতে হবে। কার‌ণ, আল্লাহ যাকে না শোধরায় মানুষের পক্ষে তাকে শোধরানো সম্ভব নয়। তবে কমিটির উচিত হল, এমন ইমামকে অপসারণ করে দীনদার মুত্তাকী ইমাম নিয়োগ করা।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৫২
  • কাযীখান, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৯২
  • আহসানুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৯০
  • সূরা: নাহল, আয়াত: ১২৫

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৪ ফেব, ২১