ফাজায়েলে আমলে অসম্ভব সব ঘটনা বর্ণিত তাই এটি পড়া যাবে না

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসবিবিধ২০ এপ্রিল, ২২

প্রশ্ন

ফাজায়েলে আমল এবং ফাজায়েলে সাদাকাতে শায়েখ এমন কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন, যা অসম্ভব বিষয়। আর তাতে শিরক ও বিদআতের ও সুযোগ রয়েছে।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

যে কাজকে মানুষ অসম্ভব মনে করে, যদি সে কাজ নবী থেকে সংঘটিত হয়, তাহলে একে বলা হয় মুজেজা। যেমন-

1. হযরত সালেহ এর উটনী পাথর থেকে জন্ম নেয়া।

2. হযরত মুসা এর লাঠি সাপে পরিণত হওয়া, আর হাত মুবারক আলোকিত হওয়া। তাঁর ও তাঁর জাতির জন্য সমুদ্রের মাঝ দিয়ে পানি সরে রাস্তা হয়ে যাওয়া।

3. ইবরাহীম এর জন্য জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ড বাগিচায় পরিণত হওয়া।

4. হযরত ঈসা এর হাতে মৃত জীবিত হওয়া। এবং অসুস্থ্য হওয়া ইত্যাদি।

5. রাসূল c এর হাতের ইশারায় চাঁদ দিখন্ডিত হওয়া। এ সকল কিছু মুজেজা। এ ছাড়াও রাসূল c এর অসংখ্যা মুজেজা আছে। যার উল্লেখ হাদীসের কিতাবে বিদ্যমান।

মাওলানা বদরে আলম মিরাঠি i তরজুমানুস স্ন্নুাহে এবং এবং মাওলানা আহমাদ সাঈদ সুবহানুল হিন্দ i “মুজিজাতে রাসূল সাঃ” কিতাবে অসংখ্যা মুজেজার ঘটনা উল্লেখ করেছেন।

যদি এমন কাজ যা মানুষ অসম্ভব মনে করে, তা যদি কোন ওলী থেকে এমন কাজ প্রকাশ পায়, তাকে কারামত বলে। যেমন-

হযরত মরিয়ম এর জন্য বন্ধ কামরায় মৌসুমহীন ফল পাওয়া। শুষ্ক গাছ থেকে তাজা খেজুর পাওয়া ইত্যাদি। এমনিভাবে আসহাবে কাহাফের ৩০৯ বছর গোহায় ঘুমিয়ে থাকা।

এছাড়া হাদীসের কিতাব ও ইতিহাসের কিতাবে ওলীদের অসংখ্য কারামাতের ঘটনা লিপিবদ্ধ রয়েছে। যা উল্লেখ করা এখানে অসম্ভব।

অভিযোগকারীগণ যেসব ঘটনাকে অসম্ভব, শিরক-বিদআত বলে মন্তব্য করছেন। সেসব এসবের অন্তর্র্ভূক্ত। তথা এসব হয়তো মুজেজা নতুবা কারামত।

অভিযোগকারীদের কাছে আমাদের অনুরোধ হল, আপনারা যখন এসব ঘটনা পড়েন,তখন তা মুসলমানদের মানসিকতা নিয়ে পড়–ন। খৃষ্টানদের মানসিকতা নিয়ে পড়বেন না।

কেননা, খৃষ্টানরা যখন ঈসা এর আশ্চর্য ঘটনাগুলো পড়ে, তখন তারা এটা ধারণা করে যে, এসব তাঁর দ্বারাই সংঘটিত হয়েছে। এটা তারই ক্ষমতা। এসব তিনি নিজেই ঘটিয়েছেন।

কিন্তু যখন মুসলমান এসব ঘটনা পড়ে, তখন এ বিশ্বাস করে যে, এ সব কিছু আল্লাহ তাআলা পক্ষ থেকে হয়েছে। আর এতে মূলত আল্লাহ তাআলারই কুদরত নিহিত। অন্য কারো এতে বিন্দুমাত্র হাত নেই।

তাই আমাদের আবেদন হল, যখনই কেউ এসব ঘটনা পড়বেন, তখন মুসলমানী চিন্তা ও বিশ্বাস অনুযায়ী পড়–ন। তাহলে দেখবেন এসব ঘটনায় শিরক বিদআত নয় বরং তাওহীদের স্পষ্ট দৃশ্যই অবলোকিত হবে। আর যদি খৃষ্টানী মেজাজে পড়–ন, তাহলে এসবে শিরক ও বিদআত নজরে ভাসবে। তাই আগে পড়ার দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক করে নিন। যুক্তি ধরুন যে, এসব ঘটনা শিরক ও বিদআতের কারণ। তাহলে এর মানে হল, এসব কিতাব যে বেশি পড়বে, সে তত বেশি মুশরিক হবে। অথচ আমরা কোন আল্লাহর বান্দা যিনি তাবলীগের সাল লাগিয়েছেন বা দীর্ঘ সময় তাবলীগের সাথে জড়িত, যিনি শিরক করছেন। বরং শিরকের বিরুদ্ধে তাদের আমল ও কঠোরতাই বৃদ্ধি পায়। অভিযোগকারীদের যদি এমন কোন তাবলীগের সাথি নজরে আসে, যিনি তাবলীগে সাল লাগিয়েছেন অথচ শিরক করছেন এমন একজন ব্যক্তির খোঁজ আমাদের দিন। যদি না পারেন। তাহলে খৃষ্টানী মানসিকতা নিয়ে এসব কিতাব পড়া থেকে বিরত থাকুন। বরং মুসলমানদের মানসিকতা নিয়ে তাবলীগী নিসাব পড়ার যেদিন অভ্যাস করতে পারবেন সেদিন এসে এসব কিতাব পড়–ন।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২০ এপ্রিল, ২২