নামাযের রুকূ বা সিজদার মধ্যেই তিলাওয়াতে সিজদাহ আদায় করা

ইসলামী জিন্দেগীনামায২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব ইশার জামা‘আতে প্রথম রাকা‘আতে সূরা ‘আলাক সম্পূর্ণ পাঠ করেন- যার শেষে তিলাওয়াতে সিজদার আয়াত ছিল। কিন্তু সাধারণ ভাবেই নামায আদায় করলেন। নামায শুরুর পূর্বে বা শেষ করে তিনি কিছুই বলেননি। প্রশ্নোত্তরে ইমাম সাহেব জানালেন যে, ইমামের নিয়তেই সকলের ওয়াজিব সিজদা আদায় হয়ে গেছে, সকলের নিয়ত করার প্রয়োজন নেই। আমরা জানি, নামাযের মধ্যে সিজদায়ে তিলাওয়াতের আয়াত ‍যদি শেষ আয়াত হয়, তবে রুকুতে যাবার সময় তিলাওয়াতে সিজদার নিয়ত করে নিলে, ওয়াজিব সিজদাহ আদায় হয়ে যায়। এখন আমার প্রশ্ন, আমাদের সকলের ওয়াজিব সিজদাহ কি আদায় হয়ে গেছে। তদুপরি মাসবূক পার্শ্ববর্তী রাস্তার পথচারী কেউ যদি নামাযের বাইরে ঐ আয়াত শ্রবণ করে থাকেন, তাহলে তাদের করণীয় কি? ইমাম সাহেবের অভিমত, তিলাওয়াতে সিজদার মাসআলা যাদের জানা নেই, তাদের জন্য সিজদাহ করা কোন অবস্থাতেই ওয়াজিব নয়। তাহলে কারো যদি শরী‘আতের বিধান জানা না থাকে, তার উপর শরী‘আতের বিধান মানার কি কোন বাধ্যবাধকতা নেই?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

নামাযের মধ্যে আয়াতে সিজদাহ তিলাওয়াত করার সাথে সাথেই অথবা দুই তিন আয়াত তিলাওয়াত করার পর যদি রুকূ করে এবং রুকূতে সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ত করে, তাহলে রুকূর মধ্যেই সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যাবে। তবে ইমাম ও মুক্তাদী সকলেরই নিয়ত করা জরুরী। শুধু ইমামের নিয়তের দ্বারা মুক্তাদীদের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হবে না। বরং মুক্তদীগণকেও নিয়ত করতে হবে। প্রশ্নে বর্ণিত সুরতে ইমাম যদি রুকূতে নিয়ত করে থাকেন, তাহলে শুধু তার সিজদাহ আদায় হয়েছে। আর মুক্তাদীগণের মধ্যে যারা নিয়ত করেছেন তাদেরও আদায় হয়ে গেছে। কিন্তু যারা নিয়ত করেননি, তাদের সিজদাহ আদায় হয়নি। আর যদি ইমাম সাহেব রুকূতে নিয়ত না করে থাকেন, তাহলে সিজদার মধ্যে নিয়ত ছাড়াই সকলের সিজদায়ে তিলওয়াত আদায় হয়ে গেছে। মুসল্লীদের যেহেতু নিয়তের মাসআলা জানা থাকে না, এ কারণে ইমামের জন্য রুকূতে নিয়ত না করা উচিত।

মাসবূক বা যে ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হেটে যায়, সে যদি কোন নামাযীর আয়াতে তিলাওয়াত শুনে, তাহলে তাদের উপরও সিজদাহ করা ওয়াজিব, তবে ইমাম যে রাকা‘আতে আয়াতে সিজদাহ তিলাওয়াত করেছে, ঐ রাকা‘আতে যদি মাসবূক শরীক হয়ে যায় তাহলে ইমামের সাথে মাসবূকও সিজদাহ করে নিবে। আর ইমামের সিজদাহ করার পরে শরীক হলে, নামাযের মধ্যে সিজদাহ করবে না, বরং নামাযের পরে সিজদাহ আদায় করে নিবে। এমনিভাবে রাস্তায় অতিক্রমকারীর উযর না থাকলে, সঙ্গে সঙ্গেই সিজদাহ আদায় করে নিবে। অসুবিধা থাকলে, পরে সুযোগমত আদায় করে নিবে। উল্লেখ্য, ইমাম সাহেবের অভিমতটি এক্ষেত্রে সঠিক নয়।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • আদদুররুল মুখতার, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১১১

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১