জনৈক ব্যক্তি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নয় মাস অতিবাহিত হয়ে যায়। উল্লেখ্য যে, উক্ত নয় মাসে তার হুশ জ্ঞান ছিল। নয়মাস পর তিনি ইন্তেকাল করেন। এখন প্রশ্ন হলো, তার এত দিনের কাযা নামায সমূহের কাফফারা কিভাবে আদায় করতে হবে?
- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -
যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি ঠিক থাকে ততক্ষণ তার উপর নামায ফরয থাকে। আর জ্ঞান-বুদ্ধি ও মস্তিস্ক যদি ঠিক না থাকে তাহলে তার উপর আর নামায ফরয থাকে না। জ্ঞান-বৃদ্ধি ঠিক থাকার পর যদি শারীরিক অসুস্থতার কারণে বা বার্ধক্যের কারণে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী নামায আদায়ে অপারগ হয় অর্থাৎ সাধ্যানুযায়ী চেষ্টার পরও যদি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে বসে নামায আদায় করবে। তাও সম্ভব না হলে শুয়ে ইশারার মাধ্যমে নামায আদায় করবে। আর যদি ইশারার মাধ্যমেও নামায আদায় করার ক্ষমতা না থাকে এবং এ অবস্থা একদিনের চেয়ে বেশী সময় বিদ্যমান থাকে, তাহলে তার জন্য নামায মাফ হয়ে যাবে। অন্যথায় মাফ হবে না।
অতএব, হুশ-জ্ঞান ঠিক থাকার পরও যদি কমপক্ষে ইশারার মাধ্যমে নামায আদায় করার সামর্থ থাকে, তারপরও নামায আদায় না করে থাকে, তাহলে সুস্থ হওয়ার পর ছুটে যাওয়া নামাযগুলো কাযা করতে হবে। কিন্তু যদি কাযা করার পূর্বেই তার ইন্তেকাল হয়ে যায় এবং ইন্তেকালের পূর্বে কাফফারার ওসীয়্যাত করে গিয়ে থাকে এবং তার সম্পদও থাকে, তাহলে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে কাফফারা আদায় করতে হবে।
কিন্তু যদি তিনি মাল না রেখে যান, কিংবা মাল রেখে গেছেন, কিন্তু এ ব্যাপারে কোন ওসিয়্যাত করে যাননি, এমতাবস্থায় তার পক্ষ থেকে কাফফারা আদায় করা ওয়ারিসদের জন্য জরুরী নয়। তবে ওয়ারিসগণ নিজেদের পক্ষ হতে আদায় করে দিতে পারেন। আর তাদের জন্য এরূপ করাই উত্তম এবং এর দ্বারা মৃত ব্যক্তি শাস্তি হতে মুক্তি পেতে পারেন।
আর কাফফারার পরিমাণ হচ্ছে, প্রতিদিন বিতর নামায সহ ছয় ওয়াক্ত নামায হিসেব করে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৌনে দু’সের গম বা আটা অথবা এর বাজার মূল্য গরীব মিসকীনকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। অথবা প্রতি ওয়াক্তের পরিবর্তে একজন গরীবকে দু’বেলা তৃপ্তি সহকারে খাওয়াতে হবে।
- والله اعلم باالصواب -