নামাযে মাইক ব্যবহার করা

ইসলামী জিন্দেগীজায়েয-নাজায়েয২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

মুক্তাদীর জন্যে ইমামের পুরাপুরি ইকতিদা করা জরুরী। আর এই ইত্তেবার সুবিধার্থে মাইক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন দ্বীনী ইজতিমায় মাইক ব্যবহার করা হয় না। যার কারণে মুসল্লীদের বেশ ভোগান্তি হয়। এ ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

নামাযের মধ্যে মাইক ব্যবহার করা মূলতঃ জায়িয আছে। তবে নামায যেহেতু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, সুতরাং উক্ত ইবাদতকে সুন্নাত তরীকা মুতাবিক সাদাসিদাভাবে আদায় করা কর্তব্য। এ কারণে বর্তমান যামানার মুফতীগণ নামাযে মাইক ব্যবহার করাকে অনুত্তম বলে আখ্যায়িত করেছেন। নামাযে মাইক ব্যবহার করার দ্বারা বহু ক্ষতির আশংকা রয়েছে, যেমন-নামাযের মধ্যে মাইক বন্ধ হয়ে গেলে মারাত্মক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। আবার অনেক সময় মাইকের বিকট আওয়াজে নামাযের খুশু-খুজু বরবাদ হয়ে যায়। সুতরাং তার থেকে বেঁচে থাকা এবং সুন্নতের সরল সহজ পন্থা অবলম্বন করাই বাঞ্ছনীয়। আওয়াজ দূরে পৌঁছানোর জন্য অতিরিক্ত মুকাব্বির নির্ধারণ করাই শরী‘আতের প্রকৃত পন্থা।

নামাযে মাইক ব্যবহার না করলে মুক্তাদীদের জন্য ইমামের ইকতিদার ক্ষেত্রে ভোগান্তি হয়- একথা যথার্থ নয়। কারণ- মুকাব্বিরের মাধ্যমে ইকতিদায় কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এরপরও যতটুকু অসুবিধা থেকে যায়, মাইক ব্যবহারে তার চেয়েও বড় অসুবিধার আশংকা বিদ্যমান। আর মুকাব্বিরের মাধ্যমেই বড় জামা’আতে আওয়াজ পৌঁছানো সাহাবা, তাবিঈন ও সলফে সালেহীনের তরীকা। সেই সময় প্রচুর লোকের সমাগম হত। বিদায় হজ্বে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়েছিল। তখন মাইক ছিল না। যদি মাইক ব্যতীত সেই যামানায় প্রচুর লোকের ইকতিদা করা সম্ভব হয়ে থাকে, তাহলে বর্তমানে তা সম্ভব হবে না কেন? কাজেই বিভিন্ন দ্বীনী ইজতিমার পদ্ধতির ‍উপর আপত্তি না করে উত্তম সুরত বাদ দিয়ে জায়িয হিসেবে যদি কেউ আযান ও নামাযে মাইক ব্যবহার করে, তবে তা করতে পারে। যেমন বিভিন্ন স্থানে তার প্রচলন রয়েছে। তবে সেটা অনুত্তম হবে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ইমদাদুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৮৪৬

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১