দ্বীনী শিক্ষার জন্য মাহরাম ছাড়া সফরের দূরত্বে মহিলাদের বসবাস করার হুকুম কি

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসজায়েয-নাজায়েয১২ জানু, ২২

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, শ্রদ্ধেয় মুফতি সাহেব দয়া করে নিম্নবর্নিত প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। কোনো অবিবাহিতা যুবতী নারী মাহরাম ছারা নিজ এলাকা ছাড়া দূরে কথাও গিয়ে পড়া লেখা করতে পারবে কি? দীনি শিক্ষা অথবা অন্ন কোনো শিক্ষা গ্রহনের উদ্দেশ্যে? সাহিহ হাদিস ও কোরানের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

দ্বীনী ইলম এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান শিক্ষা করা মহিলাদের উপরও জরুরী। তাই আসা যাওয়ার দূরত্ব যদি সফরের দূরত্ব পরিমাণ হয় এবং উক্ত শিক্ষার্থী মহিলার যদি মাহরাম থাকে, তাহলে দুই শর্তে মাহরাম ছাড়া অন্যত্র বসবাস করে শিক্ষা গ্রহণ বৈধ। ১-প্রতিষ্ঠানে গমন এবং প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে ফেরার সময় মাহরাম ব্যক্তি সাথে থাকতে হবে। ২-উক্ত প্রতিষ্ঠানে শরয়ী পর্দা পালন করার সুযোগ এবং পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা থাকতে হবে। উক্ত দুই শর্তে মহিলাদের সফরের দূরত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানে দ্বীনী ইলম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণের জন্য অবস্থান করা জায়েজ আছে। তবে সর্বাবস্থায়ই মাহরাম ছাড়া দূরের অবস্থানটি অনুত্তম। عن أنس بن مالك قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم (طلب العلم فريضة على كل مسلم হযরত আনাস বিন মালিক e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেনঃ প্রত্যেক মুসলমানের উপর দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা ফরজ। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২৪ عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها হযরত আবু সাঈদ খুদরী e থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল c ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩ قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ (٢٤:٣٠ وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ (٢٤:٣١ মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্ল াহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। -সূরা নূর-৩০-৩১

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১২ জানু, ২২