দ্বীনী কাজ করার জন্য মিথ্যা কথা বলে ছুটি নেয়ার হুকুম কী

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসজায়েয-নাজায়েয১২ জানু, ২২

প্রশ্ন

ইতিপূর্বে আমি আপনাদের এই দ্বীনি মারকাযে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর চেয়ে উত্তর পেয়েছি। আপনাদের এমন মহৎ উদ্যোগের জন্য আমারসহ, যারা আপনাদের সাথে সংশি¬ষ্ট আছেন তাদের সকলের ব্যাপক ইলমী ও আমলী ফায়দা হচ্ছে। আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের সাথে যাতে থাকতে পারি এবং সঞ্চিত এলেমের দ্বারা আমলের মাধ্যমে আল¬াহ পাকের নৈকট্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারি। আল¬াহ পাক আপনাদের জাযায়ে খায়ের দান করুন। আমিন। আমি একটি সরকারী অফিসে চাকুরী করি। আল্লাহর রাস্তায় ৩ দিন, চিল্লা ইত্যাদির জন্য ছুটি পাওনা থাকা সত্ত্বেও, ছুটি চাইলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছুটি দিতে চান না। সেক্ষেত্রে সত্য কথা না বলে পারিবারিক বা অন্য কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে থাকি। এভাবে মিথ্যা কথা বলে ছুটি নেয়া কি জায়েজ হবে? যদি জায়েজ না হয় তা হলে আমি ছুটি নেয়ার জন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

আপনার জন্য মন থেকে দুআ। যে কোন হালাল প্রতিষ্ঠানেই কিছু নির্দিষ্ট রুলস তথা নীতিমালা থাকে। যা পালন করার শপথ নিয়ে বা ওয়াদা নিয়েই একজন চাকরীজিবী প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পায়। ইসলামী শরীয়তে উক্ত জায়েজ শর্ত পালন করা চাকরীজিবীর জন্য আবশ্যক। এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে বেতন নেয়া জায়েজ নয়। সেই হিসেবে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক রীতি অনুপাতে যদি আপনি ছুটি নিতে চান, তাহলে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক নীতি অনুসরন করেই নিতে হবে। আর আপনি ছুটি পাওনা থাকেন কথাটি পরিস্কার নয়। পাওনা ছুটি নেয়ার জন্য মিথ্যা কথার আশ্রয় নিতে হবে কেন? যেমন অনেক প্রতিষ্ঠানে মাসে তিন দিন ছুটি নেয়া যায়। সেসব ছুটি প্রতিষ্ঠানের যেকোন কর্মচারীর ন্যায্য পাওনা। সেসব ছুটিতো আপনাকে প্রতিষ্ঠান না দিয়ে আটকে রাখতে পারে না। এরকম করার কথাও নয়। যদি আপনার পাওনা ছুটি না দেয়, তাহলে আপনি প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে নালিশ করুন। পাওনা বলে নির্ধারিত করার পর তা না দেয়ারতো কোন যৌক্তিক কারণ আমাদের বোধগম্য নয়। আর মিথ্যাতো সর্বাবস্থায়ই মিথ্যা। কোন দ্বীনী কাজ করার জন্যও তা বলা জায়েজ নয় বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া। আর আপনার এ ক্ষেত্রটি দ্বীনের সেই জরুরতের অন্তর্ভূক্ত নয়। তাই এক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া জায়েজ হবে না। এক্ষেত্রে আপনি আপনার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে দ্বীনের দাওয়াত দিতে পারেন। দ্বীনের সমঝ তার বুঝে আসলে ইনশাআল্লাহ আপনাকে ছুটি দিতে কার্পণ্য করবেন না। لَّعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ (٣:٦١ তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। -সূর আলেইমরান-৬১ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا» হযরত আবু হুরায়রা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ হযরত আবূ হুরায়রা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ১২ জানু, ২২