তাবলীগী ভাইয়েরা কুরআন হাদীসের আয়াত না বলে বয়ানে শুধু মুরুব্বীরা বলেন! মুরুব্বীরা বলেন! একথা বলে কেন

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসতাবলীগ২২ এপ্রিল, ২২

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম। হুজুর, আমি জানতে চাই যে, তাবলীগী ভাইয়েরা কুরআন হাদীসের আয়াত না বলে বয়ানে শুধু মুরুব্বীরা বলেন! মুরুব্বীরা বলেন! একথা বলে কেন?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

তাবলীগী সাথি ভাইরা বয়ান বা দাওয়াত দেওয়ার সময় সরাসরি কুরআন সুন্নাহের সরাসরি উদ্ধৃতি না দিয়ে তারা মুরব্বীরা বলেছেন বলাটা একটি প্রশংসনীয় পদ্ধতি। এটাকে সমালোচনার প্লাটফর্ম বানানোটাও বিদ্বেষমূলক করা হয়েছে। কুরআন হাদীস খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। যে ইচ্ছে সে, যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে তা বলাটা একদম অনুচিত। দু’ লাইন বাংলা অনুবাদ পড়ে শাইখ সাজার কুশিক্ষা তাবলীগে শিক্ষা দেয়া হয় না। কুরআন ও হাদীস বর্ণনায় আদব ও সতর্কতার প্রতি লক্ষ্য করেই এ পদ্ধতিতে কথা বলে থাকেন তাবলীগী ভাইয়েরা।

আর এ পদ্ধতি সাহাবাদের থেকেই প্রাপ্ত। এরকম অনেক সাহাবায়ে কেরাম ছিলেন যারা রাসূল c বলেছেন একথা সরাসরি বলতে খুবই ভয় পেতেন। তাই এমনিতে মাসআলা বলে দিতে কিন্তু একথা রাসূল c বলেছেন একথা সরাসরি বলতেন না। আল্লাহর নবীর দিকে মিথ্যার নিসবত হওয়ার ভয়ে। যেমন- عبد الله بن الزبير عن أبيه قال قلت للزبير بن العوام ما لي لا أسمعك تحدث عن رسول الله صلى الله عليه و سلم كما أسمع ابن مسعود وفلانا وفلانا ؟ قال أما إني لم أفارقه منذ أسلمت . ولكني سمعت منه كلمة . يقول (من كذب علي متعمدا فليتبوأ مقعده من النار অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবাইর e তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি হযরত জুবাইর বিন আওয়াম e কে একদা জিজ্ঞেস করলেন যে, আপনার কি হল? আপনি হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ e ও অন্যান্যদের মত রাসূল c থেকে কোন হাদীস কেন বর্ণনা করেন না? তখন তিনি বললেন-শোন! আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর রাসূল c থেকে পৃথক হইনি। (অর্থাৎ রাসূল c থেকে আমি অনেক হাদীসই শুনেছি, কিন্তু আমি বর্ণনা করিনা কারণ হল) কিন্তু আমি রাসূল c কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি আমার উপর ইচ্ছেকৃত মিথ্যার নিসবত করবে সে তার বাসস্থান জাহান্নামকে বানিয়ে নিবে। (এ ভয়ে আমি হাদীস বর্ণনা করি না। ) সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৬

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৬৫৩ তো সাধারণ মানুষ সরাসরি কুরআন হাদীসের কথা না বলে মুরুব্বীরা বলেছেন বলাটা কি অধিক নিরাপদ বক্তব্য নয়? এটাতো প্রশংসনীয় পদ্ধতি। এটাকে সমালোচনা করার কি হল?

আল্লাহ তাআলা তাবলীগ জামাতের মত মকবুল জামাতের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে এর দ্বারা সকল মানুষের আরো বেশি দ্বীনের খিদমাত আঞ্জাম দেওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন। ছুম্মা আমীন।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ এপ্রিল, ২২