টেলিভিশন, ভি.সি.আর এর বিধান

ইসলামী জিন্দেগীজায়েয-নাজায়েয২২ ফেব, ২১

প্রশ্ন

টেলিভিশন দেখা শরী‘আতের দৃষ্টিতে কিরূপ গুণাহ এবং টেলিভিশন ঘরে রাখা জায়িয হবে কি ? আর যদি আমি টিভি বিক্রি করে দেই তাহলে ঐ টাকা আমি খরচ করতে পারব কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

ক. প্রচলিত টিভি, ভিসিআর দেখা বা ঘরে রাখা সম্পূর্ণরূপে নাজায়িয, হারাম ও কবীরা গুণাহ। দুনিয়া ও আখিরাত উভয় দিক দিয়েই এসবের মধ্যে বহু ক্ষতি রয়েছে। এর বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য একটি পুস্তক রচনার প্রয়োজন। ইসলাম বিদ্বেষীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আজ সাধারণতঃ এগুলোতে যা কিছু প্রদর্শিত হচ্ছে, এসবের মাধ্যমে সমাজে হাজারো অপকর্ম ও গুনাহের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়ে পুরো সমাজটাকে ধ্বংস করে মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এসব চরিত্র বিধ্বংসী উপকরণ কোন ঘরে প্রবেশ করলে একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, সে ঘর থেকে কালক্রমে দীন-ঈমানের অস্তিত্ব মুছে যেতে বাধ্য। এখানেই শেষ নয়, এর কারণে আমাদের সমাজ থেকে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি বিদায় নিয়ে বিজাতীয় নোংড়া সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। যার চরম বিষক্রিয়ায় আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ নির্লজ্জ ও নৈতিকতাহীনতার চরম বিপর্যয়ে নিপতিত হচ্ছে। সার্বক্ষণিক অসংখ্য নোংরামীর মাঝে কখনো এক আধটু ধর্মীয় কিংবা সভ্যতার বাণী প্রচার করা হলেও তা অপবিত্র নোংরা ড্রেনের দুধের প্রস্রবন সদৃশ। সে দুধ যেমন কোন রুচিশীল মানুষ পান করতে পারেনা, তেমনি ওদের এসব প্রচারণা জাতীয় কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। আর এগুলোতে যে চিত্র দেখানো হয় তা মূলতঃ ফিল্মের স্থির চিত্র- যা যন্ত্রের সাহায্যে চলমান করা হয়। আর এ ধরনের ফিল্ম চিত্র ফটোর শামিল। কোন মানুষ বা প্রাণীর ছবি যেমন ঘরে সাজিয়ে রাখা, লটকানো বা প্রদর্শিত করা যায় না। তেননিভাবে এগুলোও নাজায়িয। সুতরাং বাহ্যিকভাবে ভালো কোন অনুষ্ঠান-চিত্র যেমন- সংবাদ, তিলাওয়াত, ওয়ায ও ইসলামী কোন প্রোগ্রাম-চিত্রও টিভিতে দেখা জায়িয নয়। এর দ্বারা গুণাহের কাজে সহযোগিতা করা হয়।

খ. টিভি, ভিসিআর ইত্যাদি যদিও হালাল পন্থায় তথা অশ্লীল প্রোগ্রাম বা কোন প্রাণীর ছবি না দেখে ব্যবহার করাও সম্ভব। কিন্তু বর্তমানে যেহেতু এ ধরনের কোন ব্যবস্থা নেই এবং এগুলো সাধারণতঃ নাজায়িয কাজেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে বরং সাধারণত কোন মানুষের ক্ষেত্রে বৈধ উপায়ে ব্যবহারের আশাও করা যায় না। তাই কোন মুসলমানের জন্য এগুলোর বিক্রি বা মেরামতের ব্যবসা অবলম্বন করা জায়িয নয়। আর যদি কেউ টিভির ধ্বংসাত্মক পরিণতি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর এর থেকে পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে এগুলো বিক্রি করে দিতে চায়, তাহলে তার জন্য করণীয় হলো সম্ভব হলে যে কোম্পানী বা দোকান থেকে এ জিনিস ক্রয় করেছিল সেখানে অথবা এ ধরনের যে কোন দোকানে ক্রয় মূল্যে বা তার চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি করে দিবে। অথবা যদি টিভির বিভিন্ন অংশ সমূহ পৃথকভাবে এমনভাবে বিক্রি করে যে, সে ব্যক্তি নিজস্ব যন্ত্রপাতি ও শ্রম যোগ না করে ব্যবহার করতে পারবে না, তাহলে এরও অবকাশ আছে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • আহকামুল কুরআন (থানভী) , খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৭৮
  • আহসানুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩০৬
  • জাওয়াহিরুল ফিক্বহ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৫৩
  • সূরা: মায়িদা, আয়াত:

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব, ২১