জুমার খুতবার নামাজের আগে হওয়ার ঘটনা

মাসিক আল কাউসারনামায২ মার্চ, ২১

প্রশ্ন

জুমার খুতবা নামাযের আগে আর ঈদের খুতবা নামাযের পরে এর কারণ কী? এর মধ্যে কি কোনো ঘটনা ও তাৎপর্য আছে? জুমার খুতবাও নাকি পরে ছিল। রাসূল c -এর যুগে খুতবার সময় একদিন বণিক দল আসলে খুতবা ছেড়ে মুসল্লীগণ সেখানে চলে যায়। এ ঘটনার পর থেকে নাকি খুতবাকে নামাযের আগে নেওয়া হয়েছে। এর সত্যতা কতটুকু? এ সম্পর্কিত হাদীস বরাতসহ বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

জুমার খুতবা নামাযের পূর্বে হওয়া এবং ঈদের খুতবা পরে হওয়ার বিষয়টি শরীয়তের বহু দলীল দ্বারা প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ c পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন সকলেই জুমার খুতবা নামাযের পূর্বে এবং ঈদের খুতবা নামাযের পরে প্রদান করতেন। তাদের অবিচ্ছিন্ন কর্মধারা এবং এ সম্পর্কিত হাদীস ও আছারের আলোকে জুমার খুতবা আগে হওয়া এবং ঈদের খুতবা পরে হওয়া প্রমাণিত। ঈদের খুতবা নামাযের পরঃ সহীহ বুখারী ১/১৩১; সহীহ মুসলিম ১/১৩১; জামে তিরমিযী ১/৭০; ফাতহুল বারী ২/৫২৬, জুমআর খুতবা নামাযের পূর্বেঃ সহীহ বুখারী ১/১২৮; সহীহ মুসলিম ১/২৮৩; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৪/১০৯

উল্লেখ্য, প্রশ্নে যে ঘটনাটির কথা বলা হয়েছে তা সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমসহ হাদীসের অন্যান্য কিতাবে রয়েছে, যার সারমর্ম হল, একদা রাসূলুল্লাহ c দাড়িয়ে জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন ইতিমধ্যে হযরত দিহয়া e -এর ব্যবসায়ী কাফেলার আগমনের সংবাদ পেয়ে কিছু সংখ্যক সাহাবী ছাড়া সকলেই ঐ ব্যবসায়ী কাফেলার দিকে ছুটে গেলেন যার প্রেক্ষিতে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়, (তরজমা) যখন তারা ব্যবসা ও কৌতুক দেখল তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে তার দিকে ছুটে গেল। বলুন, আল্লাহর নিকট যা আছে তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যবসা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা। -সূরা জুমআ, ১১

ঘটনা এ পর্যন্ত-ই। কিন্তু মারাসিলে আবু দাউদ (পৃ.৪৭) এ মুকাতিল ইবনে হাইয়ান এর বক্তব্যে রয়েছে যে, উক্ত ঘটনার পর রাসূলে কারীম c জুমার খুতবা নামাযের আগে নিয়ে আসেন।

কিন্তু হাফেয ইবনে হাজার i , আল্লামা আইনী i প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ মুকাতিলের এ বক্তব্য প্রমাণিত নয় বলে উল্লেখ করেছেন। তাফসীরে রুহুল মাআনীর গ্রন্থকার আল্লামা আলুসী i বলেন, (তরজমা) আমি এই বক্তব্যের সত্যতা পাইনি। প্রকাশ্য তো এটাই যে, জুমার খুতবা শুরু থেকেই রাসূলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের আগেই প্রদান করতেন।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • রুহুল মাআনী, খন্ড: ২৮, পৃষ্ঠা: ১০৫
  • ফাতহুল বারী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪৯৩
  • উমদাতুল কারী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৪৭

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২ মার্চ, ২১