জাল হাদীসের হুকুম এবং হাদীস গ্রন্থের উপর শায়েখ আলবানীর ঔদ্ধত্বপূর্ণ হস্তক্ষেপ

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসআকীদা৯ মে, ২১

প্রশ্ন

১. জাল হাদীস সম্পর্কে ইসলামের মূলনীতি কি?

২. কোন কিতাবে যদি জাল হাদীস থাকে, তাহলে সেই হাদীস কি কিতাব থেকে বের করে দিতে হবে? যদি তাই হয়ে থাকে, আমি শুনেছি মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, আদাবুল মুফরাদ প্রভৃতি কিতাবেও জাল হাদীস আছে, তাহলে কেন এসব কিতাব থেকে জাল হাদীসগুলো এখনও পর্যন্ত বের করে দেওয়া হয়নি?

৩. আর যদি কিতাব থেকে বের করে না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা কি কিতাব পড়ার সময় আমল করব না এই শর্তে জাল হাদীসগুলো পড়তে পারব? ধরুন, মুসনাদে আহমাদ আমি পড়তেছি, এমন সময় একটি জাল হাদীস আসল, এখন আমি কি সেটিকে পড়তে পারব নাকি বাদ দিয়ে যেতে হবে? যদি পড়া যায়, তাহলে হাদীসের শুরুতে যে উল্লেখ থাকে রসূল c বলেছেন, এটি কি রসূলের উপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে না? তাহলে কেন আমি পড়ব?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

জাল হাদীস সম্পর্কে ইসলামের মূলনীতি জাল হাদীস, যাকে আরবী ভাষা এবং মুহাদ্দিসীনদের পরিভাষায় মওজু বলা হয়। সহজ কথায় যেটি রাসূল c এর হাদীস নয়, তাকে রাসূল c এর হাদীস বলার নামই জাল বানোয়াট হাদীস। রাসূল c থেকে প্রমানিত নয়, এমন কোন কথাকে রাসূল c এর হাদীস বলার নাম জাল হাদীস। আসলে এসবকে হাদীস বলাই উচিত নয়। কিন্তু যেহেতু এসবের নিসবত জাল বর্ণনাকারীরা রাসূল c এর দিকে করেছে রাসূল c এর হাদীস বলে, তাই শুধু নিসবতের কারণে ওসব বাতিল বর্ণনার সাথেও মুহাদ্দিসীনে কেরাম হাদীস শব্দ ব্যবহার করেছেন। এর মানে এটা নয় যে, ওসব বর্ণনা আসলে হাদীস। যেমন মিথ্যা নবী শব্দ। আসলে যে মিথ্যা নবী দাবি করে সেতো নবীই নয়। তবু আমরা বলি মিথ্যা নবী কাদিয়ানী, মুসায়লামায়ে কাজ্জাব। ঠিক জাল হাদীসের ক্ষেত্রেও তা হাদীস না হওয়া সত্বেও মুহাদ্দিসীনে কেরাম জাল হাদীস বলে মন্তব্য করেছেন। জাল হাদীসের হুকুম যেহেতু জাল হাদীস হাদীস নয়। তাই সুনিশ্চিতভাবে জাল ও বানোয়াট জানার পরও উক্ত বক্তব্যটিকে রাসূল c এর হাদীস বলে প্রচার করা জায়েজ নয়, হারাম। তবে এটি জাল হাদীস তা জানানোর জন্য বর্ণনা করা জায়েজ। যেমন কুফরী কথা বলা জায়েজ নয়। কিন্তু কথাটি কুফরী সেটি বুঝানোর জন্য কুফরী কথা উল্লেখ করা জায়েজ আছে। জাল হাদীসকে রাসূল c এর হাদীস বলে প্রচার করা মানে হল রাসূল c এর নামে মিথ্যা কথা বলা।

আর রাসূল c এর নামে মিথ্যা কথা বলার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী এসেছে হাদীসে। যেমন- عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَال: مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ • হযরত আবূ হুরায়রা e থেকে বর্ণিত। রাসূল c ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছেকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল। -মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-১২০০, মুসনাদে ইবনুল জিদ, হাদীস নং-১৪৮০, মুসনাদে দারেমী, হাদীস নং-৬১৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩

عَنِ المُغِيرَةِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَال: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُول: إِنَّ كَذِبًا عَلَيَّ لَيْسَ كَكَذِبٍ عَلَى أَحَدٍ، مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ • হযরত মুগীরা e থেকে বর্ণিত। রাসূল ইরশাদ করেছেন, আমার উপর মিথ্যারোপ করা অন্য কারো উপর মিথ্যারোপ করার মত নয়। যে ব্যক্তি ইচ্ছেকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নিল। -সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১২৯১, ১২২৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১২৭৬

উল্লেখিত দু’টি হাদীস ছাড়াও অনেক হাদীস আছে রাসূল c এর দিকে মিথ্যার নিসবত করে কোন কিছু বলা সম্পর্কে।

এখানে লক্ষ্যনীয় হল, প্রতিটি হাদীসেই রাসূল c হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন ঐ ব্যক্তির ক্ষেত্রে যিনি জেনে-শুনে ইচ্ছেকৃত মিথ্যা কথাকে রাসূল c এর দিকে নিসবত করে থাকে। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে যে, না জেনে যদি কোন ব্যক্তি কোন মিথ্যা কথাকে রাসূল c এর দিকে নিসবত করে তাহলে উক্ত ব্যক্তি এ হুশিয়ারী ও শাস্তির আওতাভুক্ত হবে না। অর্থাৎ উক্ত ব্যক্তি অজ্ঞতার কারণে গোনাহগার হবে না।

সুতরাং কেউ যদি না জেনে জাল হাদীস বর্ণনা করে, তাহলে সে গোনাহগার হবে না। তবে যদি জাল জানার পরও রাসূল c এর দিকে নিসবত করা উক্ত জাল বর্ণনাটিকে রাসূল c এর হাদীস বলে প্রচার করে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি হাদীসে উল্লেখিত ধমকীর আওতাভুক্ত হবে। লোকটি খুবই ঘৃনিত এবং মারাত্মক গোনাহের কাজ করল বলে সাব্যস্ত হবে। তবে মানুষকে বুঝানোর জন্য বা জানানোর জন্য জাল হাদীসকে জাল বলে উল্লেখ করার দ্বারা গোনাহগার হবে না। যেমন কুফরী কথাকে কুফরী কথা প্রমাণের জন্য কুফরী কথা উল্লেখ করে তার হুকুম বলে দেয়া গোনাহের কাজ নয়।

জাল হাদীস থাকলে কি তা কিতাব থেকে বের করে দিতে হবে? যারা উলুমে হাদীস সম্পর্কে পড়াশোনা করেছেন তারা সবাই এ কথাটি জানেন যে, কোন কোন হাদীস জাল হওয়া ও না হওয়া নিয়ে মুহাদ্দিসীনে কেরামের মাঝে বিস্তর মতভেদ পাওয়া যায়। কোন কোন মুহাদ্দিসীসের কাছে একটি হাদীস জাল নয়, বরং দুর্বল। আবার একই হাদীস আরেকজন মুহাদ্দিসের কাছে হাদীসটি জাল। এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। যেমন- رجعنا من الجهاد الأصغر إلى الجهاد الأكبر অর্থাৎ রাসূল c বলেছেন, আমরা ছোট জিহাদ থেকে ফিরলাম বড় জিহাদের দিকে। হাদীসটি সম্পর্কে মুহাদ্দিসীনদের বক্তব্য হল-

১. ইমাম বায়হাকী i বলেন, হাদীসটি দুর্বল। -কিতাবুজ জুহদ-২/১৬৫

২. আল্লামা ইরাকী বলেন, এ হাদীসের সনদে দুর্বলতা আছে। -আলইহয়া-২/৬

৩. মোল্লা আলী ক্বারী i বলেন-বলা হয় যে, এর কোন ভিত্তি নেই, অথবা এটি জাল। -আল আসরার মারফুআহ-২১১

৪. আল্লামা জায়লায়ী i বলেন-হাদীসটি একেবারেই বিরল (গরীব)। -তাখরীজুল কাশশাফ-২/৩৯৫

৫. আল্লামা ইবনে তাইমিয়া i বলেন-এর কোন ভিত্তি নেই। -মাজমুউল ফাতওয়া-১১/১৯৭

এখানে লক্ষ্য করুন, আল্লামা ইরাকী i এবং ইমাম বায়হাকী i উক্ত হাদীসকে জাল বলে মন্তব্য করেননি। তারা বলেছেন হাদীসটি দুর্বল। আল্লামা জায়লায়ী i হাদীসটিকে গরীব বলে মন্তব্য করেছেন। জাল বলেননি। পক্ষান্তরে উপরে উল্লেখিত বাকি মুহাদ্দিসগণ এ হাদীসকে জাল বলে মন্তব্য করেছেন। তাহলে কী বুঝা গেল? একই হাদীসে একাধিক মন্তব্য একাধিক মুহাদ্দিস থেকে রয়েছে। কারো মতে হাদীসটি জাল। আবার ঠিক একই হাদীসই আরেকজনের কাছে জাল নয় দুর্বল বা গরীব। আর দুর্বল হাদীস ফাযায়েলের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছেন জমহুর সকল মুহাদ্দিসীনে কেরাম। যদি জাল হয়, তাহলে তা পরিত্যাজ্য এ ব্যাপারে কারো কোন মতভেদ নেই। জাল বর্ণনা থাকা সত্বেও পরবর্তী মুহাক্কিকগণ কেন হাদীসের কিতাব থেকে উক্ত জাল বর্ণনাগুলো বাদ দেননি? এর অনেক কারণ থাকতে পারে। মৌলিকভাবে দু’টি কারণ এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে-।

১. অনধিকার চর্চা না করা কোন কিতাবে যদি জাল হাদীস থাকে, তাহলে সেটি সর্বসম্মত জাল? না মতভেদপূর্ণ জাল হাদীস? সেটি একটি বড় বিষয়। যদি মতভেদপূর্ণ জাল হাদীস হয়, তাহলে সেটিকে আপনি কি করে বাদ দিয়ে দিবেন সংকলকের কিতাব থেকে? সংকলক স্বীয় কিতাবে উক্ত হাদীস এনেছেন এর মানেই হল, উক্ত হাদীসটি তার তাহকীক অনুপাতে জাল নয়। যে সংকলকের কিতাব, তার তাহকীক অনুযায়ী যে হাদীস জাল নয়, সেটিকে পরবর্তীতে কেউ এসে জাল বলে তার কিতাব থেকে বাদ দিয়ে দেয়াটা অনধিকার চর্চা নয় কি? বরং পরবর্তী মুহাক্কিক উক্ত কিতাবের টিকায় একথা উল্লেখ করে দিতে পারেন যে, উক্ত হাদীসটি অধিকাংশ মুহাদ্দিসদের কাছে জাল। তাই এটি পরিত্যাজ্য। ব্যাস, এতটুকু করতে পারেন পরবর্তীগণ। কিন্তু সংকলকের কিতাব থেকে তা বাদ দিয়ে দেয়া অনধিকার চর্চা ছাড়া আর কিছু হবে না। নিজে কিতাব লেখে সেখানে জাল হাদীস বাদ দিয়ে লিখতে পারেন। কিন্তু অন্যের লেখা কিতাব থেকে মতভেদপূর্ণ জাল হাদীসকে নিজের রায় অনুযায়ী জাল বলে বাদ দেয়ার অধিকার পরবর্তী কেউ কি করে পাবে? এ কারণেও অধিকাংশ মুহাদ্দিসগণের নিকট কোন হাদীস জাল প্রমাণিত হওয়ার পরেও হাদীসের কিতাব থেকে পরবর্তী কোন মুহাদ্দিসগণ বাদ দেননি। বরং উক্ত কিতাবের টিকায় এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন পাঠকদের। বলে দিয়েছেন যে, এ হাদীসটি জাল। এতটুকু করার দ্বারা পরবর্তী মুহাক্কিকদের দায়িত্ব পূর্ণ হয়ে গেছে। অপ্রয়োজনীয় অনধিকার চর্চা কেউ করেননি।

২. কিতাবটিকে সৌন্দর্যহানী থেকে রক্ষা করা উপরের আলোচনা দ্বারা আশা করি একথা বুঝে এসেছে যে, হাদীস জাল হওয়ার ক্ষেত্রেও একাধিক মত রয়েছে। কেউ কেউ কঠোরতা অবলম্বন করেছেন। আবার কেউ শিথিলতা অবলম্বন করেছেন। এখন যদি কোন সংকলকের সংকলিত হাদীসের কিতাবের ক্ষেত্রে এ আম অনুমতি থাকতো যে, যে ইচ্ছে সেই এসে পরবর্তীতে উক্ত কিতাবটি সংযোজন বিয়োজন করতে পারবে। তাহলে এক সময় উক্ত কিতাবের মৌলিকত্বই হারিয়ে যাবে। কারণ হয়তো এমন একজন উক্ত কিতাবটিকে তাহকীক করলেন, যার মেজাজে কঠোরতা রয়েছে, তিনি এসে প্রচুর পরিমাণ দুর্বল হাদীসকেও জাল বলে উক্ত কিতাব থেকে বাদ দিয়ে দিলেন। আরেকজন এসে তার ইচ্ছেমত আরো কিছু হাদীসকে জাল মনে করে বাদ দিয়ে দিলেন। তাহলে অবশেষে উক্ত কিতাবে কী দশা দাঁড়াবে ভাবা যায়? ইসলামী ফিক্বহ ও ফাতওয়া সম্পর্কে যাদের ন্যুনতম জ্ঞান আছে, তারাই জানেন যে, অনেক অজ্ঞ জাহিল ব্যক্তিরাও নিজের মত প্রমাণিত করার জন্য অযথাই বিপরীত মতের হাদীসকে পরিত্যাজ্য বলে মনে করেন। যদি এমন কোন প্রান্তিক মতাদর্শী পূর্ববর্তী কিতাব থেকে হাদীস বাদ দেয়া শুরু করে ছাপাতে শুরু করে দেন, তাহলে দেখা যাবে বুখারী মুসলিম থেকেও অনেক হাদীস স্বীয় মতের উল্টো বলে বাদ দেয়া শুরু হয়ে গেছে। আর কোন কিতাবে তার মতের বিপরীত দুর্বল হাদীস পেলেতো কথাই নেই। এভাবে কিতাব সংযোজন বিয়োজনের সুযোগ থাকলে মূল সংকলকের কিতাবের আর কোন অস্তিত্ব অবশেষে খুঁজে পাওয়া যাবে না।

এ কারণেই সর্বকালেই সকল মুহাদ্দিসীনে কেরামগণ পূর্ববর্তীদের হাদীসের কিতাবের বিভিন্ন হাদীস জাল হওয়া, দুর্বল হওয়া, মুনকার হওয়া ইত্যাদি বলে মন্তব্য করে আলাদা কিতাব লিখেছেন। কিংবা উক্ত কিতাবের টিকায় তা উল্লেখ করে দিয়েছেন। কিন্তু মূল কিতাব পাল্টে ফেলার স্পর্ধা দেখাননি। কিন্তু এরকম বেআদবীপূর্ণ কাজ সর্বপ্রথম শুরু করেছেন গায়রে মুকাল্লিদদের একজন গুরু নাসীরুদ্দীন আলবানী i । তিনিই সর্বপ্রথম সিহাহ সিত্তার বিভিন্ন কিতাবকে বিভক্ত করেছেন নিজের রায় আর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। তিরমিজী শরীফকে বিভক্ত করেছেন দুই ভাগে। একভাগের নাম সহীহুত তিরমিজী। আরেক ভাগের নাম দিয়েছেন জঈফুত তিরমিজী। এমনিভাবে সহীহ আবু দাউদ, জঈফ আবু দাউদ নামে, সহীহ ইবনে মাজাহ জঈফ ইবনে মাজাহ নামে সিহাহ সিত্তার কিতাব নিয়ে সংযোজন বিয়োজনের মত স্পর্ধার আচরণ করেছেন। যা শত বছর যাবত কোন মুহাক্কিক প্রাজ্ঞ মুহাদ্দিস করেননি।

সহজ কথায়, পূর্ববর্তী কারো হাদীসের কিতাবকে সকলের জন্য সংযোজন-বিয়োজনের সুযোগ রাখা হলে নিজের মতাদর্শ অনুযায়ী কিতাব থেকে হাদীস বাদ দিতে দিতে মূল কিতাবটিই এক সময় হারিয়ে যেতে পারে। বা মৌলিকতাশূণ্য হয়ে যেতে পারে। তাই পূর্ববর্তী কোন মুহাদ্দিস এ কাজ করেননি। জাল বা দুর্বল হলে তা টিকায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কিতাব থেকে তা বাদ দিয়ে দেননি। জাল হাদীস কি পড়া যাবে? এ প্রশ্নের জবাব ইতোপূর্বেই অতিক্রান্ত হয়েছে। যে হাদীস জাল হওয়ার ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসীনে কেরামগণ একমত, সেটিকে রাসূল c এর হাদীস মনে করা হারাম। রাসূল c এর হাদীস বলে প্রচার করা হারাম। কিন্তু এটি জাল হাদীস তা জানার জন্য বা জানানোর জন্য পড়া জায়েজ আছে। যেমন কুফরী কথা বলা জায়েজ নয়। কিন্তু কোনটি কুফরী কথা তা জানার জন্য উল্লেখ করা জায়েজ আছে। কোন কিতাবে লিখা থাকলে তা জানার জন্য পড়া জায়েজ আছে। কিন্তু কুফরী কথাকে মনে মনে বিশ্বাস করা জায়েজ নয়। তেমনি জাল হাদীসকে রাসূল c এর হাদীস মনে করে পড়া জায়েজ নয়। জাল মনে করে জানার জন্য পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • কাওয়ায়েদুত তাহদীস-জামাল উদ্দীন কাসেমীকৃত, পৃষ্ঠা: ১৫
  • ফাতহুল মুলহিম, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৬১

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৯ মে, ২১