গায়রে মাহরামের সাথে কথা বলার সময় চেহারার দিকে তাকানো

আহলে হ্বক বাংলা মিডিয়া সার্ভিসজায়েয-নাজায়েয২০ ডিসেম্বর, ২২

প্রশ্ন

গায়রে মাহরামের সাথে কথা বলার সময় চেহারার দিকে তাকানোর হুকুম কি

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

গায়রে মাহরাম নারীদের চেহারার দিকে তাকানো জায়েজ নয়। আসলে মানুষের মূল সৌন্দর্য চেহারার মাঝেই নিহিত থাকে। যদি চেহারার দিকে তাকানোর হুকুমই থাকে, তাহলে আর পর্দার মৌলিকত্ব কিছুই বাকি থাকে না। আত্মীয়তা রক্ষাও আবশ্যক। সেই হিসেবে আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা হলে যদিও তারা গায়রে মাহরাম হয়, তাহলেও তাদের সাথে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলবে। যেমন কেমন আছে? পরিবারের অন্য সদস্যারা কেমন আছে? ইত্যাদি। ফিতনার আশংকা থাকলে প্রয়োজনীয় কথা দ্রুত সংক্ষেপ করে চলে আসা কর্তব্য। মোটকথা, একজন আত্মীয় হিসেবে যতটুকু সৌজন্যতা রক্ষা করা যায় পর্দা রক্ষা করে এবং ফিতনায় না জড়িয়ে ততটুকু করবে। يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا ۞ وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও (ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। -সূরা আহযাব-৩২ উক্ত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা পরিস্কার ভাষায় জানাচ্ছে যে, ফেইসবুকে প্রয়োজন ছাড়া মেয়েদের বন্ধু বানানো, তাদের সাথে কথা বলা জায়েজ নয়। দ্বীনী কোন বিষয় থাকলে কম কথায় শেষ করে নিবে। অযথা কথা বলা হারাম। وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ c -এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। -সূরা আহযাব-৫৩ বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী i উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ c -এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। -তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬ নবী করীম c -এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।

- والله اعلم باالصواب -

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২০ ডিসেম্বর, ২২