খুৎবার পূর্বে বয়ান দেয়ার নিয়ম

ইসলামী জিন্দেগীনামায২৩ ফেব, ২১

প্রশ্ন

জুম‘আর ফরয নামাযের ও খুৎবার পূর্বে খতীব সাহেব যে বয়ান করেন, এই বয়ানের সহীহ তরীকা কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

প্রথম আযানের পূর্বেই নির্দিষ্ট সময় থেকে ওয়ায শুরু করবেন। ওয়াযের মধ্যে সময় উপযোগী মাসনূন আমলসমূহ এবং অন্যান্য জরুরী মাসআলা-মাসায়িল আলোচনা করবেন। মুসল্লীগণ মসজিদে এসে ওয়ায শুনতে থাকবেন। অতঃপর খুৎবার পনের মিনিট পূর্বে ওয়ায বন্ধ করে দিয়ে জুম‘আর প্রথম আযানের ইন্তিযাম করবেন। তারপর সকলেই ধীরস্থিরভাবে সুন্নাত আদায় করবেন। অতঃপর খুৎবা পাঠ করে নামায শুরু করবেন। আবার এটাও করতে পারেন যে, জুম‘আর নামাযের পরে বয়ান করবেন। যাদের আগ্রহ থাকে, তারা বসে ওয়ায শুনবে। একান্ত যদি জুম‘আর পরে বয়ান করা সম্ভব না হয়, তাহলে খুৎবার পূর্বেই বয়ান করবেন। তবে খুৎবা পূর্বে বয়ান করাকে জরুরী মনে করা ঠিক নয়। বরং মাঝে মধ্যে ছেড়ে দিলেও কোন ক্ষতি নেই। এটা হিদায়াত –নসীহতমূলক আমল মাত্র। নামাযের কোন সংশ্লিষ্ট অঙ্গ নয়।

খেয়াল রাখতে হবে- ওয়ায যেন অল্প সময়ে হয়, সংক্ষিপ্ত হয়। যাতে মুসল্লীদের অনীহা ভাবের সৃষ্টি না হয়। অবশ্য ওয়াযের সময় দু’ট জিনিসের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

১। কেউ সুন্নাত পড়তে চাইলে তাকে বুঝিয়ে বলবেন, একটু বসুন। পরে সুন্নাত পড়ার জন্য সময় দেয়া হবে।

২। যদিও ওয়ায-নসীহত জুম‘আর কোন ফরয বা ওয়াজিব আমল নয়। তথাপিও এটাকে সবাই আগ্রহ সহকারে শুনবে। আর বয়ানে বিশেষভাবে জরুরী দীনী মাসায়িল বর্ণনা করা দরকার। কিচ্ছা কাহিনী ও অপ্রয়োজনীয় আলোচনা করা অনুচিত। মিম্বরের উপরে না বসে দাঁড়িয়ে বা কোন চেয়ার বসে বয়ান করতে চেষ্টা করা ভাল। তবে মিম্বরে বসে বয়ান করা জায়িয আছে। খুৎবার পূর্বে বা ওয়াযের সময় উক্ত খুৎবার বাংলা তরজমা করা জরুরী নয়। তবে খুৎবায় জরুরী সমসাময়িক মাসনূন আমলের বর্ণনা থাকলে বাংলা ভাষার তা পূর্বে বুঝিয়ে দেয়া। যাতে সে বিষয়ে সকলের আমল করা সহজ হয়। অবশ্য মূল খুৎবা আরবীতে হওয়া জরুরী। নামায ও খুৎবাকে কুরআনে যিকর বলা হয়েছে। (সূরাহ জুম‘আ) নামাযের ক্বিরা‘আত যেমন আরবী ব্যতীত অন্য ভাষার হয় না, তেমনিভাবে খুৎবাও আরবীতে হওয়া জরুরী। অনেকে এটাকে ওয়ায নসীহত মনে করেন। তাই বাংলা ভাষায় খুৎবা দিতে চান। এটা তাদের কুরআন-হাদীসের সহীহ ইলম না থাকার প্রমাণ।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • আহসানুল ফাতাওয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১২৮
  • মাসায়েলে নামাযে জুম‘আ, পৃষ্ঠা: ২১১

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২৩ ফেব, ২১