ক্যাশভাউচারের শরয়ী দিক

মাসিক আল কাউসারজায়েয-নাজায়েয৬ জানু, ২১

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমি ওয়ালটনের একটি ফ্রিজ ক্রয় করি। তখন ওয়ালটনের একটি ছাড় চলছিল। (এখনও চলছে) এর নাম হল ক্যাশভাউচার। ফ্রিজ ক্রয়ের পর নিয়ম অনুযায়ী আমি দোকানে লাগানো ওয়ালটনের বারকোডের উপর মোবাইল ফোন স্ক্যান করে নাম দেওয়ার পর আমার ফোনে সাতশত টাকা চলে আসে। টিভি, ফ্রিজ, এসিসহ নির্দিষ্ট কিছু পন্যে ওয়ালটন ক্রেতাদের এ সুবিধা দিচ্ছে। তাদের লিফলেট অনুযায়ী এবং দোকানীদের কথা অনুযায়ী ৩০০ টাকা থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ক্রেতারা এ সুবিধা পেয়ে থাকে। তবে এ টাকা ঐসব দোকান থেকে নগদ ওঠানো যায় না। বরং ওয়ালটনেরই অন্য কোনো পণ্য কিনলে ঐ পরিমাণ টাকা কম নেওয়া হয়। তাই আমিও ঐ সাতশত টাকার সাথে আরো কিছু টাকা দিয়ে একটি আয়রন ক্রয় করে ফেলি।

মুহতারামের কাছে জানতে চাই, ক্রেতাদের জন্য ওয়ালটন ক্যাশভাউচারের নামে যা দিচ্ছে তা নেওয়া জায়েয হবে কি না? আর আমি যে ঐ টাকা দিয়ে আয়রণ ক্রয় করেছি তা জায়েয হবে কি না? দয়া করে সঠিক উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত কোম্পানী ক্যাশভাউচার স্বরূপ যে টাকা দিচ্ছে তা নেওয়া এবং এর বিনিময়ে আয়রণ মেশিন ক্রয় করা দুই শর্তে বৈধ হবেঃ

১. অফারের কারণে পণ্যের দাম বাড়ানো যাবে না।

২. শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় পণ্য ক্রয় না করা। অর্থাৎ পণ্য উদ্দেশ্য না হয়ে বরং পুরস্কার মূল উদ্দেশ্য- এমন না হওয়া।

উল্লেখ্য, ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী বাণিজ্যনীতি হল, পণ্যের দাম সুনির্ধারিত থাকা এবং মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা। তা না করে মূল্যের কিছু অংশ পুরস্কার নামের লটারীর সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা, লাখ টাকা/কোটি টাকার লোভ দেখিয়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা ইসলামী বাণিজ্যনীতি পরিপন্থী। পুঁজিবাদের আবিষ্কৃত এসব নীতি বাজারকে অসাধু পন্থায় প্রভাবিত করে থাকে। মুসলমানদের উচিত এহেন কাজ থেকে বিরত থাকা।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • মাআলিমুস সুনান, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪০০
  • ফিকহুন নাওয়াযিল, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১১৬
  • বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরাহ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৫৮

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৬ জানু, ২১