কোরআন শরীফ হিফজ করে ভুলে গেলে করণীয়

মাসিক আল কাউসারবিবিধ৮ মার্চ, ২১

প্রশ্ন

আমার বড় খালা কুরআন মজীদ হিফয করেছিলেন। বিয়ের পর সাংসারিক জীবনের ব্যস্ততা ও বিভিন্ন ঝামেলার কারণে কুরআন মজীদের তেলাওয়াত ও চর্চা কম হওয়ায় তিনি এখন হিফয প্রায় ভুলেই গেছেন। ৩০তম পারাটিও ভালোভাবে শুনাতে পারেন না। হিফয করে ভুলে গেলে হাদীস শরীফে খুব ভয়াবহ শাস্তির কথা এসেছে। তাই আমার খালাজান খুব চিন্তিত। এ বিষয়ের হাদীস ব্যাখ্যাসহ জানতে চাই এবং এ অনুযায়ী তার করণীয় কী তাও বলবেন।

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

এ বিষয়ে যে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে তা হল, রাসূলুল্লাহ c ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) যে ব্যক্তি কুরআন মজীদ পড়ল অতঃপর তা ভুলে গেল। কিয়মতের দিন সে কুষ্ঠরোগী হয়ে আল্লাহ তাআলার সামনে উপস্থিত হবে। -সুনানে আবু দাউদ ১/২০৭ হাদীসের ব্যাখ্যাকারগণের কেউ কেউ উক্ত হাদীসে ‘ভুলে যাওয়া’ শব্দের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, এই শাস্তি ঐ ব্যক্তির জন্য যে কুরআন মজীদ হিফয করার পর অবহেলা ও ত্রুটির কারণে দেখে দেখে তেলাওয়াত করার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলেছে। তবে কোনো কোনো মুহাক্কিক আলেম ‘ভুলে যাওয়া’-এর ব্যাখ্যা করেছেন মুখস্ত পড়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলা। অর্থাৎ যে কুরআন মজীদ হিফয করার পর না দেখে মুখস্ত পড়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে তার ব্যাপারে উক্ত শাস্তি প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য যে, এটি খুবই দুঃখজনক বিষয় যে, আল্লাহ তাআলা কোনো বান্দাকে তাঁর পবিত্র কালাম কুরআন মজীদ হিফয করার মতো বিরাট নেয়ামত দান করলেন আর সে তার অবহেলা ও ত্রুটির দরুণ তা ভুলে গেলে। এটি তাঁর এই মহান নেআমতের প্রতি অকৃতজ্ঞতার পরিচয়। তাই এখন তার কর্তব্য হল, প্রতিদিন কিছু সময় হলেও নিয়মিত তেলাওয়াত করে যাওয়া এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করা।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • সুনানে আবু দাউদ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২০৭
  • মুসনাদে আহমদ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৮৫
  • মিরকাতুল মাফাতীহ, খন্ড: , পৃষ্ঠা:
  • আওনুল মা’বুদ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৪১
  • বাযলুল মাজহুদ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩০২
  • মাজমাউয যাওয়াইদ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৪৬
  • মালফূযাতে হাকীমুল উম্মত, খন্ড: ২৩, পৃষ্ঠা: ২০১

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ৮ মার্চ, ২১