কিবলামুখী বাথরুমের হুকুম এবং তা ব্যবহারের নিয়ম

ইসলামী জিন্দেগীপবিত্রতা২০ ফেব, ২১

প্রশ্ন

সৌদী আরবে বাসা কিংবা অফিসে টয়লেট নির্মানের ব্যাপারে বাংলাদেশের মত সতর্কতা অবলম্বন করা হয় না বলে প্রায়ই কাবার ‍দিকে মুখ করে বা কিংবা পিঠ করে মলমূত্র ত্যাগ করতে বাধ্য হতে হয়। তারা বলে “চার দেয়াল ঘেরা বাথরুমে যেদিকে খুশি, সেদিকে ফিরে পেশাব পায়খানা করতে পারে।” তাদের এ কথা ঠিক কি-না? এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি?

উত্তর

- حامداومصلياومسلما، بسم الله الرحمن الرحيم -

হানাফী মাযহাব মতে, পেশাব-পায়খানার সময় কিবলার দিকে মুখ করা বা পিঠ করা, খোলা ময়দানে হোক বা দেয়াল ঘেরা স্থানে হোক সব স্থানেই মাকরূহে তাহরীমী। হাদীস শরীফে আছে, ‘যখন পেশাব-পায়খানার জন্য বসবে তখন কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ করবে না।’ এ হাদীসে খোলা স্থান বা দেয়াল ঘেরা স্থানের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয়নি। সাহাবা e যেহেতু নবী c এর বাণীর অর্থ বেশী বুঝতেন, তাদের আমল লক্ষ্য করলেও প্রমাণিত হয় যে, দেয়ালঘেরা স্থানেও কিবলামুখী হয়ে বা কিবলার দিকে পিঠ করে বসা নিষেধ। যেমনঃ হযরত আবু আইয়ুব আনসারী e সাহাবীগণের e এক জামা‘আতসহ সিরিয়া সফরে গেলে নাসারাদের দেশ হিসেবে সমস্ত বাথরুমগুলো ইসলামী তরীকার খেলাফ ছিল। তথাপিও তাঁরা সতর্কতার সাথে কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ না করে অত্যন্ত কষ্ট করে এদিকে ওদিকে ফিরে জরুরত পূর্ণ করেছিলেন। হুজুর c বলেন, কেউ যদি ভুলে কিবলার দিকে মুখ করে ইস্তেঞ্জায় বসে; অতঃপর হঠাৎ স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে কিবলার দিক থেকে অন্যদিকে সরে যায়, তবে তার ঐ বসা থেকে উঠে অন্যদিকে ফিরতে যতটুকু সময় লাগে, এর পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা তাকে মাফ করে দেন। তাই কোন অবস্থায়ই কিবলার দিকে মুখ করা বা পিঠ করা যাবে না। নিরুপায় হয়ে গেলে তখন বাথরুমে বসে এদিক-ওদিক মোড় নিয়ে জরুরত পূরণ করে নিবে।

- والله اعلم باالصواب -

সূত্র

  • ফাতাওয়া রহীমিয়া, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১১
  • বুখারী শরীফ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ২৬
  • তিরমিযী শরীফ, খন্ড: , পৃষ্ঠা:
  • আবু দাউদ শরীফ, খন্ড: , পৃষ্ঠা:
  • মিশকাত শরীফ, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৪২
  • তানজীমুল আশতাত, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৩৮
  • মাজাহেরে হক, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১২০
  • আলমগীরী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৫০
  • ফাতাওয়া শামী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ৩৪১
  • আল মুগনী, খন্ড: , পৃষ্ঠা: ১৬২
  • ইমদাদুল মুফতীন, পৃষ্ঠা: ৩০০
  • নূরুল ইযাহ, পৃষ্ঠা: ৩০

আনুষঙ্গিক তথ্য

ফতোয়া প্রদানের তারিখ: ২০ ফেব, ২১